Barak UpdatesHappeningsAnalyticsBreaking News
রাত পোহালেই এনআরসি-র খসড়া
রাত পোহালেই এনআরসি-র খসড়া প্রকাশিত হবে। সকাল দশটায় প্রতিটি সেবাকেন্দ্রে ওই খসড়া দেখা যাবে। মিলবে এনআরসি-র ওয়েবসাইটেও। নির্দিষ্ট কিছু নম্বরে ফোন করেও জানা যেতে পারে নিজের পরিবারের সকলের নাম রয়েছে নাকি খসড়ায়। তবে সর্বাবস্থায় ২০ অঙ্কের এআরএন বা আবেদনপত্রের নাম্বারটা জানাতে হবে।
এই সময়ে অসমের প্রায় প্রতিটি মানুষ উতকণ্ঠায়। উপযুক্ত নথি দেওয়ার পরও নাম থাকবে কিনা, এ নিয়ে সংশয়ে সবাই। তবে এনআরসি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, খসড়ায় নাম না থাকলেই কাউকে বিদেশি বলে মনে করার ব্যাপার নেই। চূড়ান্ত এনআরসি প্রকাশের আগে পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রশ্নই ওঠে না। তাই তাঁদের অনুরোধ, খসড়ায় নাম না থাকলে উদ্বেগের তেমন কিছু নেই। বরং নাম তোলার জন্য ৭ আগস্ট থেকে যে আবেদন পত্র পাওয়া যাবে, তা সংগ্রহ করে আবেদন জানাতে হবে। ৩০ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওইসব আবেদন পত্র গ্রহণ করা হবে। সঙ্গে চলবে শুনানিও।
যাদের নাম খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত হবে না, তাঁরা সেবাকেন্দ্রে গিয়ে এর কারণ জানতে পারবেন। তবে পরিবারের সদস্যদেরই শুধু সেই কারণ জানানো হবে। মোট ১৫টি কারণে আবেদনের পরও নাম বাদ পড়েছে বলে এনআরসি কর্মকর্তাদের সূ্ত্রে জানা গিয়েছে। ওই সূত্রে প্রকাশ, কিছু কিছু এমন নথি জমা পড়েছে, যেগুলি পড়াই যাচ্ছে না। আবার বৈধ নয়, এমন নথিও জমা করা হয়েছে। সেগুলি বাতিল বলে গৃহীত হয়েছে। কেউ কেউ আবার জাল নথিও দিয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবশ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এরই মধ্যে মামলা হয়েছে।
তবে চূড়ান্ত খসড়ায় যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ মানুষের নাম থাকবে না, কাছাড়ের জেলাশাসক এস লক্ষ্মণন আজ এর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, কাছাড়ে মোট আবেদনকারীর ৮৮ শতাংশের নাম পঞ্জীভুক্ত হয়েছে। অধিকাংশের নামের সঙ্গে রয়েছে ছবিও। তবে ছবি না থাকলেও সমস্যা নেই। দাবি-আপত্তির সময়ে ছবি যোগ করা বা অন্য কোনও সংশোধনের কথা বলা যেতে পারে। এরই মধ্যে কারও ঠিকানা বদল হলেও নতুন ঠিকানা উল্লেখ করে আবেদন করা যেতে পারে। তবে ২০১৫ সালের ৩১ আগস্টের পরে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের নাম এই তালিকা বা পরবর্তী সময়ে চূড়ান্ত তালিকায়ও থাকবে না। তাই তাদের নাম যোগ করার আবেদন গ্রহণ হবে না। একইভাবে ওই সময়ের পরে মৃতদের নামও তালিকায় থেকে যাবে।
এনআরসি কর্তৃপক্ষ অবশ্য বারবার করে জানিয়ে দিয়েছেন, এটি মোটেও দ্বিতীয় বা আংশিক খসড়া নয়। এটি সম্পূর্ণ খসড়া। প্রথম তালিকায় নাম ছিল কি ছিল না, তা মোটেও বিচার্য নয়। প্রত্যেককে এই খসড়াতেই নিজের নাম খুঁজতে হবে।
এই নাম থাকা-না-থাকাকে ঘিরে যেন কোনও উত্তেজনার সৃষ্টি না হয়, সেদিকে পুলিশ বিশেষ নজর রাখছে। কোথাও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা মোকাবিলায় তাঁরা তৈরি রয়েছেন বলে পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ১১ কোম্পানি অতিরিক্ত আধা সামরিক বাহিনী এসেছে। এসেছে ১ কোম্পানি সিআরপি-র রাপিড অ্যাকশন ফোর্সও। নিজস্ব পুলিশ বাহিনী, ব্যাটেলিয়ন তো রয়েছেই। এ ছাড়া, গ্রামরক্ষী বাহিনী (ভিডিপি)-কে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রতিটি সেবাকেন্দ্রে তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাঁচ স্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছেন তাঁরা। স্পর্শকাতর, অতি স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে বাড়তি নিরাপত্তারও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য সীমান্ত এলাকায় বিশেষ নজরদারি থাকবে। পাশাপাশি সোসিয়াল মিডিয়ায়ও কড়া নজরদারি চলছে। অপপ্রচার বা গুজব ছড়ালে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যে কোনও পরিস্থিতিতে কাছাড়ের জেলাশাসক বা পুলিশ সুপারের অফিসের কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করা যেতে পারে। জেলাশাসকের অফিসে ১০৭৭, ০৩৮৪২-২৩৯২৪৯ এবং পুলিশ সুপারের অফিসের কন্ট্রোল রুমের নম্বর ৭০৮৬০-২১৪৭৩, ০৩৮৪২-২৪৬৮৯২।