Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ভাষাশহিদ স্টেশনের দাবিতে সরব বিডিএফ
৩১ ডিসেম্বর: ভাষাশহিদ স্টেশন নামকরণ নিয়ে সোচ্চার হল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট। মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বর্তমান আসাম সরকারকে। তাঁর দাবি, ভাষাশহিদ স্টেশন নাম হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মোটেও অবনতি হবে না। আসাম সরকার এর আগে দু’দুবার কাছাড় জেলা প্রশাসনের কাছে এই ব্যাপারে স্পষ্টীকরণ চেয়েছে এবং প্রতিবারই জেলাশাসক চিঠি দিয়ে রাজ্য সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন, এই নামকরণ করা হলে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হবার কোনও আশঙ্কা নেই।
বিডিএফ মনে করে, বরাকের মানুষ সর্বদাই শান্তিপ্রিয়। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী একসময় বরাককে ‘শান্তির দ্বীপ’ বলে অভিহিত করেছিলেন। প্রদীপবাবুর কথায়, যেখানে জেলাশাসক বারবার স্পষ্টীকরণ দিচ্ছেন , সেখানে গুয়াহাটিতে বসে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা কীভাবে পরিস্থিতির অবনতি হবে বলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন? আর যদি সত্যিই আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে বলে মনে হয় তাহলে তো সেটা সামলানোর দায়িত্বও সরকারের। যদি এই অজুহাতে একটি ন্যায্য দাবি কার্যকর না হয় তবে সেটা সরকারের ব্যর্থতা। বিডিএফ মনে করে, এসব শুধুই চক্রান্ত। কারণ এই সরকার বাঙালি বিরোধী , বাঙালি বিদ্বেষী। তারা ভাষাশহিদদের মর্যাদা দেবার ব্যাপারে আগ্রহী নয়।
প্রদীপ দত্তরায় আরও বলেন, কিছুদিন আগে সরকার বড়ো ভাষাকে রাজ্যের সরকারি সহযোগী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ যেখানে এক কোটি বাংলাভাষী রয়েছেন এই রাজ্যে, তাদের ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে অপারগ। তিনি বলেন, বড়ো ভাষাকে যে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তার জন্য বিডিএফ আনন্দিত এবং এ জন্য আসাম সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, বাংলাকে অবহেলা করা হবে ! তার বক্তব্য, ইদানীং বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি বলেছেন, এই ব্যাপারটি বড়ো চুক্তির অঙ্গীভূত। বিডিএফের জিজ্ঞাস্য, তাহলে কি মন্ত্রী পাটোয়ারি এই দাবি আদায়ের জন্য বাঙালিদের হাতে অস্ত্র তুলে নিতে প্ররোচনা দিচ্ছেন ? এটা কি সরকারের তরফে একধরনের উস্কানি দেওয়া হচ্ছে না ? বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়কের বক্তব্য, সরকার পক্ষ জানে, দীর্ঘদিন ধরে বড়োদের সঙ্গে বাঙালিদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সরকার তাই পরিকল্পিতভাবে দুই জনগোষ্ঠীর সম্পর্কে ফাটল ধরাতে চাইছে৷
বিডিএফ এদিন আরও বলে, যেখানে অসম সাহিত্য সভার উন্নতিকল্পে দরাজ হস্তে সরকারি অনুদান দেওয়া হচ্ছে সেখানে বরাকের বাঙালিদের প্রতিনিধিত্ব মূলক সংগঠন বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনকে সম্পূর্ণ ভাবে অবহেলা করা হচ্ছে । বিগত দুবছরে বরাক বঙ্গ কোন অনুদান পায়নি৷ অথচ বাকি সব জনগোষ্ঠীর সাহিত্য সংস্কৃতির উন্নয়নে সরকার অনুদান দিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী চন্দ্রমোহন পাটোয়ারি বলেছেন, বাংলা যেহেতু উন্নত ভাষা, তাই তাদের অনুদান দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। প্রদীপ দত্তরায়ের বক্তব্য, তাহলে কি মন্ত্রী অসমিয়া ভাষাকে ‘দুর্বল’ ভাষা বলতে চাইছেন ? যে ভাষাতে রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ লোক কথা বলেন তার সম্পর্কে এমন মন্তব্য কি পুরো অসমিয়া জাতির পক্ষে অপমানজনক নয়?
বিডিএফ সদস্যরা মনে করিয়ে দেন, বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ যখন বিধানসভায় এইসব প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছিলেন তখন বরাক থেকে নির্বাচিত শাসকদলের ১৪ জন বিধায়ক তার সমর্থনে একটি কথাও বলেননি।