Barak UpdatesHappeningsBreaking News

“নতুন শিক্ষানীতিতে শুধু ছাত্রছাত্রী নয়, উপকৃত হবেন শিক্ষকরাও”

ওয়েটুবরাক, ২৩ ডিসেম্বর : নতুন শিক্ষানীতিতে শুধু ছাত্র-ছাত্রী নয়, শিক্ষকরাও অনেক উপকৃত হবেন । আগে শুধু  বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আইএএস আইপিএস সহ বিভিন্ন উচ্চপদে যেতে পারবেন। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেও  শিক্ষকরা ওই সুবিধা পেতে পারেন৷

নতুন শিক্ষানীতি ছাত্র-ছাত্রীদের যেমন উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে ঠিক সেইভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকারাও নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন ।

বুধবার করিমগঞ্জে জাতীয় শিক্ষা নীতি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এ ভাবেই নিজের অভিমত তুলে ধরেন রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. বিভাস দাস পুরকায়স্থ । তিনি বলেন, শিক্ষানীতির চিন্তাধারা ভালো করে বুঝে নিতে হবে। কিছু মানুষ এই শিক্ষানীতির বিরোধিতা করতে গিয়ে অপপ্রচার করছে৷ কিন্তু আগামী ২০৩০-এর মধ্যেই এর ফলাফল মিলবে, জানালেন বিভাস দাস পুরকায়স্থ৷ তিনি বলেন, সাড়ে পাঁচ বছরে এই শিক্ষানীতি তৈরি হয় । এর জন্য আড়াই লক্ষ গ্রাম, ৬৬০০ ব্লক, ৬ হাজার টাউন, ৬৫৬ জেলার ২ লক্ষ শিক্ষাবিদের লিখিত মতামত নেওয়া হয় । এখন সরকারি শিক্ষানীতির ফলে অনেকটা বিপাকে পড়তে পারে ব্যক্তিগত শিক্ষাব্যবস্থা৷ কারণ এই শিক্ষানীতির অধীনে চারটি বিভাগকে যুক্ত করা হয়েছে৷ শিক্ষা,  স্বাস্থ্য, শিশু ও পরিবার কল্যাণ এবং উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রণালয় । এখন থেকে শিশুদের নার্সারি শিক্ষা হবে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে । যারা ওয়ার্কার, হেল্পার আছেন তাদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ পরবর্তীতে প্রতিটি শিক্ষা বিভাগের আধুনিকীকরণ করা হবে । নতুন শিক্ষানীতিতে আধুনিকীকরণের পাশাপাশি থাকছে নানা প্রকল্প, যদি শিক্ষকরা তার বাস্তব রূপ দেন তাহলে বিশ্বের অন্যতম শিক্ষানীতি হতে যাচ্ছে ভারতীয় শিক্ষানীতি।

এখন প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্রের হার ক্রমে কমতে দেখা যায়৷ নতুন শিক্ষানীতি বলছে, প্রাথমিকে যে শিক্ষার হার হবে উচ্চমাধ্যমিকেও তা এক হতে হবে৷ তার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।

আসামে ৬৫ হাজারের অধিক অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে৷ সেখানে এখন থেকে ৩ বছর শিশুদের খেলাধূলার মাধ্যমে শিক্ষা দেওয়া হবে । এর জন্য অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ওয়ার্কার এবং হেলপারদের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে । বিএড-এর ক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়িয়ে ৪ বছর  করা হয়েছে৷ এই চার বছরে শিক্ষকরা উপযুক্ত পরিকাঠামোর মাধ্যমে নিজেদের গড়তে পারবেন । শিক্ষকদের জন্য অনলাইনে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা থাকবে৷ তাই নতুন শিক্ষানীতি এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হচ্ছে বলে বক্তাদের দাবি।

আসাম মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সংস্থার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে এমএমএমসি গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে পাণ্ডু কলেজের প্রাক্তন অধ‍্যক্ষ  ড বিভাস দাস পুরকায়স্থ আরও বলেন,  স্মৃতি ইরাণি মানবসম্পদ  মন্ত্রী থাকার সময়  এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। আগের   কেবিনেট সেক্রেটারি টিআরএস সুব্রক্ষ্মণিয়মকে চেয়ারম্যান করে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা দেশের  সর্বত্র গিয়ে সার্ভে করে  দুই লক্ষ মানুষের মতামত নেন। এর উপর ভিত্তি করে  রিপোর্ট পেশ করা হয়। তখন মানব সম্পদ  মন্ত্রী ছিলেন প্রকাশ জাভড়েকর। এরপর নয় সদস্যর  কস্তুরিরঙ্গন  কমিটি ৮৮৪ পাতার ড্রাফট এডুকেশন পলিসি জমা দেওয়ার পর জনগণের মতামত নেওয়া হয়। এরপর এটাকে কাটছাঁট করে ৬৬ পাতার  করা হয়। এবং  এতে  মঞ্জুরি দেয় কেবিনেট । যদিও  সংসদে আলোচনা হয়নি।  এদিন দীর্ঘ আলোচনায় তিনি জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০-র অজানা সব তথ‍্য সর্বসমক্ষে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, শিশুদের বৌদ্ধিক বিকাশের উপর এতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ক্লাস থ্রি, ফাইভ ও এইটে থাকবে পরীক্ষা। টেন থেকে টুয়েলভ ক্লাশে  আট সেমিস্টারে হবে পরীক্ষা। তাঁর কথায়, এই শিক্ষানীতির মাধ্যমে প্রি-প্রাইমারি স্কুলের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যাবে। এই শিক্ষানীতিকে সফল  করতে থাকবে গার্লস হোস্টেল, ছাত্র ও শিক্ষকদের কাউন্সেলিং। এসএমসির যথেষ্ট দায়িত্ব বাড়বে।

ড. দাস পুরকায়স্থ জানান, কোনও ছাত্র মাঝপথে স্কুল ছাড়তে পারবে না। কেউ এমনটা করলে তাকে ফের ধরে আনা হবে। তিনি বর্তমান শিক্ষা গুরুদের প্রকৃত আচার্য হওয়ার আবেদন জানান । কারণ শিক্ষকদের উপর নির্ভর করে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ ।

এই আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন বিধায়ক ড. সুখেন্দুশেখর দত্ত এবং অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. রাধিকা রঞ্জন চক্রবর্তী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker