NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
নেতাদের মুখেই লজিস্টিক পার্ক, কাজের বেলায় চুপচাপ
২০ জানুয়ারিঃ মাল্টি মডেল লজিস্টিক পার্ক মানে, যেখানে গড়ে তোলা হবে জলপথ, আকাশপথ, রেলপথ ও সড়কপথের উন্নত যোগাযোগ। দেশের বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে তো বটেই, থাকবে আন্তর্জাতিক যোগাযোগেরও ব্যবস্থা। মূল লক্ষ্য, উৎপাদনে পরিবহন ব্যয় কমানো।
বর্তমানে কাঁচামাল জাহাজে বা এয়ার কার্গোতে বাইরে থেকে এলে একে নিয়ে প্রথমে গাড়ি বা ট্রেনে করে গুদামে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখান থেকে পরে কারখানায় নিয়ে যায়৷ আবার উৎপাদিত সামগ্রী একই প্রক্রিয়ায় প্রথমে গুদামে রাখা হয়৷ পরে এয়ারপোর্টে বা নদীবন্দরে পৌঁছানো এবং সবশেষে চালান রওয়ানা করা৷ এই করে এখন উৎপাদিত সামগ্রীর মোট খরচের ১৩ শতাংশ হয় পরিবহন ব্যয়।
একে কমিয়ে আনার জন্য সরকার মাল্টি মডেল লজিস্টিক পার্ক তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। সেখানে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা তো থাকবেই, একই জায়গায় থাকবে উন্নতমানের গুদাম, বিভিন্ন আয়তনের হিমঘর, পণ্যসামগ্রী ওঠানামার বিজ্ঞানসম্মত নানা ব্যবস্থা। সরকারি এই ব্যবস্থাকে ঘিরেই পার্কের কাছাকাছি বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে তৈরি হবে বিভিন্ন ধরনের কলকারখানা। সে বিশাল কর্মকাণ্ড, লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান।
এই পরিকল্পনায় শিলচরকে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। কিন্তু ঘোষণার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ এগোচ্ছে না। যোগীঘোপায় শিলান্যাসের পর কাজ শুরু হয়ে গেলেও কাছাড় জেলায় জমি চিহ্নিতকরণ নিয়েই চলছে টালবাহানা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, কোনও বিশেষ শক্তি ক্রমাগত একে পেছন থেকে টেনে চলেছে। এরই সাক্ষ্য মিলল শিলচর বাণীপাড়ার জয়দীপ ভট্টাচার্যের আরটিআই-র জবাবে।
শিল্প-বাণিজ্য দফতরের যুগ্ম সঞ্চালক তথা স্টেট পাবলিক ইনফরমেশন অফিসার জানিয়েছেন, গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি কাছাড়ের জেলাশাসককে মাল্টিমডেল লজিস্টিক পার্কের জন্য জমির বন্দোবস্ত করতে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ১৩ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় তরফে কাছাড়ের ডিস্ট্রিক্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড কমার্স সেন্টারের (ডিআইসি) জেনারেল ম্যানেজার জেলাশাসককে আরেক চিঠি লিখে দ্রুত জমি চিহ্নিতকরণের অনুরোধ জানান। এর ছয়মাস পরে ১৪ জুলাই কাছাড়ের জেলাশাসক রাজ্য সরকারের রাজস্ব ও দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরকে ২০০ বিঘা জমি চিহ্নিত করে প্রস্তাব পাঠায়। বড়খলার হরিণছড়া চা বাগানের ২ নং দাগে রয়েছে ওই জমি। কাছাড়ের জেলাশাসকের চিঠির সূত্র ধরে শিল্প-বাণিজ্য দফতরের সচিব রাজস্ব ও দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরকে ওই জমি হস্তান্তরের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাজস্ব ও দুর্যোগ মোকাবিলা দফতর থেকে এখনও সাড়া মেলেনি।
ফলে বিরাট সম্ভাবনাময় লজিস্টিক পার্ক নিয়ে এখন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ সঙ্গে জুড়ছে নানা প্রশ্ন৷ নীতীন গাডকারি, জেপি নাড্ডা দুজনই দুই জনসভায় শিলচরে লজিস্টিক পার্ক তৈরির কথা বলেছেন৷ অন্যদিকে শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায় কিছুদিন আগেও জানিয়েছেন, জমি খোঁজা হচ্ছে৷ জমি পেলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে৷
সাংসদের কথার সঙ্গে আরটিআই-র সরকারি জবাবের যে মিল নেই৷ হরিণছড়ার ২০০ বিঘা জমির প্রস্তাব পাঠানোর পর আবার কীসের জমি খোঁজা! জেলা প্রশাসনের পাঠানো প্রস্তাবে রাজস্ব দফতরের অনুমোদন প্রদান এত সময় কেন লাগছে? কেন জনপ্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে তদ্বির না করে জমি খুঁজে চলেছেন?