NE UpdatesHappeningsBreaking News

সিইউইটি-র পরীক্ষা কেন্দ্র করিমগঞ্জ-হাইলাকান্দিতেও চাইল বাংলা সাহিত্য সভা, শিক্ষামন্ত্রীকে স্মারকপত্র

ওয়ে টু বরাক, ২৪ মে : স্নাতক স্তরে ভর্তির নতুন নিয়মের অধীনে সর্বভারতীয় স্তরে ভর্তির সিইউইটি পরীক্ষাজনিত নানা সমস্যা নিয়ে রজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ রণোজ পেগুর সঙ্গে দেখা করল বাংলা সাহিত্য সভা অসমের এক প্রতিনিধি দল। সংগঠনের  রাজ্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. প্রশান্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বাংলা সাহিত্য সভার প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এর আগে সংগঠনের করিমগঞ্জ শাখার সভাপতি শর্মিষ্ঠা খাজাঞ্চি ও সাধারণ সম্পাদক শুভ্রাংশুপ্রকাশ দে বাংলা সাহিত্য সভার রাজ্য সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেই অনুসারে রাজ্য সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. প্রশান্ত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে বাংলা সাহিত্য সভার এক প্রতিনিধি দল অসমের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ রণোজ পেগুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর হাতে করিমগঞ্জ সমিতির এক দাবি ও আবেদনপত্র তুলে দেন।

এই পত্রে স্নাতক স্তরে ভর্তির সিইউইটি পরীক্ষাজনিত নানা সমস্যার সমাধানে শিক্ষামন্ত্রীর প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ চান প্রতিনিধিমণ্ডলী। তাঁরা বলেন, আগে সিইউইটি পরীক্ষার কেন্দ্র করিমগঞ্জ জেলায় কোথাও ছিল না, হাইলাকান্দিতেও ছিল না। নতুন শিক্ষানীতি অনুযায়ী স্নাতক স্তরে ভর্তির আগে এই যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। একটি ছাত্রকে ন্যূনতম তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। আবেদনের জন্যে দেড় হাজারের বেশি ফিজ দিতে হয়েছে। অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী চারটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। কেউ কেউ দিচ্ছে পাঁচটি পরীক্ষা। পাঁচ দিনে হচ্ছে পাঁচটি পরীক্ষা।

এই বিষয়ে উদাহরণ তুলে ধরে তারা বলেছেন, ধরা গেল, একটি ছাত্রের বাড়ি রাঙামাটি এলাকায়। বাবা দিনমজুর। শিলচরের প্রত্যন্ত একটি অঞ্চলে তার পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে। আগের দিন তাকে শিলচর যেতে হবে। কিন্তু সে থাকবে কোথায় ? হোটেলগুলোতে এত লোকের স্থান সংকুলান হবে না। প্ল্যাটফর্মে থাকলেও খরচা হবে অনেক টাকা। গরিবের পক্ষে কতটা সম্ভব ? বরাকের অসংখ্য মানুষ দরিদ্র। সরকারি বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে পড়ে দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হয়েছে। এরা কী করবে ? করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দিতে বহু শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। এগুলোতে এই পরীক্ষা নেওয়া যেত। মূল কথা বহুসংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে ৮০ কিমি থেকে ১০০ কিমি দূরে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এ দিন শিক্ষামন্ত্রীর কাছে প্রতিনিধিরা অনুরোধ জানিয়েছেন, যাতে আগামীতে এই অসুবিধার দিকে নজর রেখে ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি জেলায় পরীক্ষাকেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয় এবং এক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্য সভা উপযুক্ত সহযোগিতা করতে আগ্রহী।

এ দিন বাংলা সাহিত্য সভার প্রতিনিধিবর্গ আরেকটি বিষয়ও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন,
তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ পরীক্ষা কেন্দ্রও করিমগঞ্জ হাইলাকান্দি জেলায় ছিল না বলে প্রচুর দুর্ভোগ এবং হয়রানির শিকার হতে হয়েছিল স্থানীয় ছেলেমেয়েদের। স্মারকপত্রে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তাঁরা আবেদন রাখেন, বাংলা বিষয়ে স্নাতকোত্তর উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ডিস্ট্যান্স লার্নিং-এ এমএ ইন বেঙ্গলির ব্যবস্থা করে দিলে বহু ছাত্রছাত্রীর জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ হয়ে উঠবে।

এ দিন বাংলা সাহিত্য সভার প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন রাজ্য কোষাধ্যক্ষ তথা সাহিত্য পেনশনার শিশির সেনগুপ্ত, গুয়াহাটি শাখার অন্যতম সম্পাদক জয়া নাথ, গুয়াহাটি শাখার কোষাধ্যক্ষ তথা “মজলিশ সংলাপ” পত্রিকার সম্পাদক সাহিত্য পেনশনার তুষারকান্তি সাহা, সভার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক তুহিন কাশ্যপ দেব ও মনীশ জয়সওয়াল এবং সভার শুভানুধ্যায়ী অশীতিপর সমাজকর্মী সন্তোষকুমার রায়। সঙ্গে ছিলেন সাধারণ সম্পাদকের স্ত্রী বিশিষ্ট অসমিয়া গ্রন্থকার ও অনুবাদক রুনুমি শর্মা। তিনি শিক্ষামন্ত্রীর হাতে তাঁর অসমিয়া ভাষায় অনুদিত তসলিমা নাসরিনের “লজ্জা” উপন্যাসটি উপহার হিসেবে তুলে দেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলা সাহিত্য সভার উদ্যোগে প্রকাশিত বত্রিশটি গ্রন্থের আনুষ্ঠানিক উন্মোচনে মুখ্য অতিথি রূপে অংশগ্রহণ করবেন বলে সম্মতি প্রকাশ করেছেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ রণোজ পেগু। সব ঠিকঠাক থাকলে ৯ জুন গুয়াহাটি মহানগরীর ঐতিহ্যমণ্ডিত সাউথ পয়েন্ট স্কুলে এই গ্রন্থ উন্মোচন ও সংবর্ধনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker