Barak UpdatesHappeningsBreaking NewsFeature Story
করোনার দরুন কুমারী পূজা হচ্ছে না জেলাশাসকের অফিসে
২১ অক্টোবর: করোনার জন্য কুমারী পূজা হচ্ছে না কাছাড়ের জেলাশাসকের অফিসে৷ অসমে একমাত্র এখানেই জেলাশাসকের অফিসে দুর্গাপূজা হয়৷ ১৯৫৪ সালে এর সূচনা৷ কুমারী পূজার শুরু ২০০৪-এ৷ সে থেকে বন্ধ হয়নি একবারও৷ এ বার ঠেকিয়ে দিয়েছে করোনা ভাইরাস৷ এমনিতেই এই আবহে শিশুদের পূজার দিনে বেরতে দেবেন কিনা, দোটানায় অভিভাবকরা৷ এর ওপর রাজ্য সরকারের কড়া নির্দেশ, পূজার পুরোহিত, আয়োজক, স্বেচ্ছাসেবকদের দুইবার করোনা টেস্ট বাধ্যতামূলক৷ পঞ্চমীর দুপুরে এবং প্রতিমা বিসর্জনের পরে৷ এর পরই বেঁকে বসেন কুমারীর মা-বাবারা৷ কেউ রাজি হলেন না৷
এক কুমারীরই প্রয়োজন৷ তবু বেশ কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলছিলেন তাঁরা৷ কোভিড টেস্টের কথা শুনে কেউ কেউ বললেন, টেস্ট করালে তাঁর আর কোভিডের আশঙ্কা নেই, এমন নিশ্চয়তা দিতে পারেন কি? না, পারেননি পূজা কমিটির সম্পাদক তারাশঙ্কর দাস বা জেলা প্রশাসন কর্মচারী নেতা বিক্রমজিৎ চক্রবর্তী, দেবব্রত দাস-রা৷ শেষে কুমারী পূজা বন্ধেরই সিদ্ধান্ত হয়৷ দুই-একজন আবার আমতা আমতা করে শোনান, “এখনও আশা ছাড়িনি আমরা৷ শেষ মূহূর্তেও তো নিজেদের কেউ কুমারী দিতে রাজি হতে পারে৷”
প্রথম কুমারী পূজা এ ভাবেই হয়েছিল, গল্প শোনান তাঁরা৷ সে বার পূজা কমিটির সভাপতি তথা জেলাশাসক সুনন্দা সেনগুপ্ত৷ মহাসপ্তমীর সকালে সঙ্কল্প করতে এসে তিনি কুমারী পূজার প্রস্তাব দেন৷ তখনকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেন৷ কিন্তু শেষপর্যন্ত সেই এএসপি নিজের শিশুকন্যাকে দিতে গররাজি৷ উৎসাহ চরমে উঠে ভাটা পড়ে গেল৷ মহাষ্টমীর সকালে পুজোমণ্ডপে এলেন বিক্রমজিৎ চক্রবর্তীর ভাতিজি ঐশ্বর্যা৷ স্নান সেরে নতুন পোশাকে৷ তখন সে ৮ বছরের শিশু৷ সবাই বললেন, কুমারী রূপে এই তো দেবী হাজির৷ পুরোহিত বললেন, তাকে বসিয়েও কুমারী পূজা সম্ভব৷ বিক্রমবাবু তার মা-বাবার সম্মতি নেন৷ ওই তো শুরু কাছাড়ের জেলাশাসকের অফিসের দুর্গা আরাধনায় কুমারীপূজা৷
তারাশঙ্করবাবু জানান, জেলাশাসকের কার্যালয়ের পুজো বলে কথা! জেলাশাসক নিজে পুজোর সংকল্প করেন৷ তাই কোভিড বিধি মেনে চলার ব্যাপারে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ স্থায়ী মণ্ডপেই পুজো হচ্ছে৷ আদালত প্রাঙ্গণে ২০০০ সালে তৎকালীন জেলাশাসক তথা পূজা কমিটির সভাপতি শান্তনু ঠাকুর এর উদ্বোধন করেছিলেন৷ পূজাঘর, স্টোর রুম, দেবীর জন্য রান্নাঘর, জলের বন্দোবস্ত সবই স্থায়ী৷ এমনকি, যে জায়গায় কাপড় লাগানো হচ্ছে, এর মেঝও ইট-কংক্রিটের৷ খোলা মণ্ডপ হলেও প্রবেশ-প্রস্থান পৃথক হবে৷ থাকবে থার্মাল স্ক্যানার, স্যানিটাইজার ইত্যাদি৷ আর প্রতিমা? এতদিন নানা সমালোচনা সইয়েও মুখ খোলেননি৷ কার্যক্ষেত্রে ভুল প্রমাণের বাসনায়৷ মহাপঞ্চমীতে বললেন, আমাদের প্রতিমার উচ্চতা সাকুল্যে ৪ ফুট ২ ইঞ্চি৷ দুইজনে ধরে নিয়ে যেতে পারবেন৷ তাই বিসর্জনে এ বার গাড়ি নিচ্ছেন না তাঁরা৷ হাতে করেই নিয়ে যাবেন বিসর্জনঘাটে৷