Barak UpdatesHappeningsBreaking News

উইমেন্স কলেজে স্থায়ী শহিদ বেদী উন্মোচিত

ওয়েটুবরাক, ১৯ মে: বাংলা ভাষার অস্তিত্ব রক্ষায় আত্মবলিদান দেওয়া ১১ শহিদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদনের লক্ষ্যে একটি স্থায়ী শহিদ বেদীর উন্মোচন হলো শিলচরের উইমেন্স কলেজ প্রাঙ্গণে।

রবিবার শহিদ দিবসে স্থায়ী শহিদ বেদীর উন্মোচন করেন শিলচর রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসী বৈকুণ্ঠানন্দ মহারাজ। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব চৌধুরী ও কলেজের  অধ্যক্ষ ড. দেবশ্রী দত্ত সহ উপস্থিত সকলে  শহিদদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন৷

পরে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বৈকুণ্ঠানন্দ মহারাজ বলেন, ১৯৬১ সালে ১১জন তরুণ-তরুণী বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় যে বলিদান করে গেছেন সে এক অমর কীর্তি এবং সেই কীর্তিকে নতুন প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরার জন্য উইমেন্স কলেজের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি আরও বলেন, ভারতবর্ষ একটি বহুভাষিক বহু জনগোষ্ঠীর দেশ, যেখানে সমন্বয়ই হচ্ছে এগিয়ে চলার প্রধান মন্ত্র। বিভিন্ন ভাষার মধ্যে ঐকতান ও ভ্রাতৃত্ববোধ দেশবাসীকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উৎসাহ প্রদান করে এবং সেই প্রেরণা নিয়েই সকলের চলা উচিত।

কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব চৌধুরী তার ভাষণে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন যে, বাংলা ভাষা বাঙালিদের রক্তের সঙ্গে জড়িত এবং ১৯৬১র সেই ঘটনার জন্যে বাংলা ভাষা আজও অক্ষুন্ন রয়েছে। তিনি মনে করেন, বর্তমান প্রজন্মের কাছে এটি একটি দায়িত্ব ভবিষ্যতের জন্য বাংলা ভাষাকে অক্ষুন্ন রাখা। বর্তমান সময়ে যেখানে মানুষ প্রতি মুহূর্তে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে এই অবস্থায় মানুষের উচিত নিজের মাতৃ ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে আরও সজাগ হওয়া।

কলেজের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সুস্পিতা দাস ও দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. সংঘমিত্রা দেবনাথ।
ড. দেবনাথ বলেন, বর্তমান সময়ে ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার সাথে যাতে অন্যান্য ভাষার মিশ্রণ মাত্রাতিরিক্ত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে । ড. দাস ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরে ভারতীয় সংবিধানের বিভিন্ন দিক নিয়ে তাঁর বক্তব্যে আলোচনা করেন। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডঃ সর্বাণী বিশ্বাস একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। সংস্কৃত বিভাগের প্রধান ড. নৃত্যেন্দু বিকাশ দাস  গানের মাধ্যমে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা অর্পণ করেন।
ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখতে গিয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দত্ত জানান, কলেজ প্রাঙ্গণে স্থায়ী শহিদ বেদী নির্মাণ ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা ছিল কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি বুদ্ধদেব চৌধুরীর। মূলত তাঁরই দিকনির্দেশে এই শহিদ বেদী স্থাপন করা হয়৷

এ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্ষীয়ান দুই শিক্ষক ভবতোষ রায় ও ড. দীপঙ্কর কর, বরিষ্ঠ সাংবাদিক তমোজিৎ ভট্টাচার্য এবং বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের জেলা কমিটির সম্পাদক উত্তম কুমার সাহা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker