Barak UpdatesHappeningsBreaking News
ইনক্লুসিভ এডুকেশন : আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত
ওয়েটুবরাক, ৭ আগস্ট : আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দিব্যাঙ্গদের জন্য আর্লি ইন্টারভেনশন ম্যানেজমেন্ট কোর্স চালুর রোডম্যাপ তৈরির জন্য গত শনিবার এক কর্মশালার আয়োজন করা হয় । দিল্লির রিহেবিলেটেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার এক্সপার্টদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই কর্মশালা । বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ কর্ম বিভাগের উদ্যোগে বিপিন চন্দ্র পাল সভাকক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন হয় । উদ্বোধন করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রাজীবমোহন পন্থ৷ সঙ্গে ছিলেন সক্ষমের রাষ্ট্রীয় মহাসচিব তথা ভারত সরকারের দিব্যাঙ্গ মন্ত্রণালয়ের পরামর্শদাতা সদস্য, রিহেবিলেটেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার কাউন্সিল মেম্বার কমলাকান্ত পান্ডে, দিল্লিস্থিত ইগনু ইউনিভার্সিটির ডিসেবিলিটি স্টাডি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. অলোক উপাধ্যায়, সমাজকর্ম বিভাগের প্রধান ড. এম তিনেশ্বরী দেবী, প্রফেসর ড. শুভব্রত দত্ত, ড. এম, গঙ্গাভূষণ, কর্মশালার কনভেনর ড. রিত্বিকা রাজেন্দ্র এবং সক্ষম দক্ষিণ অসম প্রান্ত সচিব মিঠুন রায় ।
অনুষ্ঠানে উপাচার্য পন্থ দিব্যাঙ্গদের গুণের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন, দৃষ্টিহীন হওয়ার পরও রামায়ণ সিরিয়ালে রবীন্দ্র জৈন উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন৷ তিনি আরও বলেন, দিব্যাঙ্গদের জীবনের উন্নতি সাধনে অ্যাকাডেমিক পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য আসাম বিশ্ববিদ্যালয় অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং ডিসেবিলিটি স্টাডি সেন্টারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় একটি দিব্যাঙ্গ হেল্প ডেস্ক খুলবে । দিব্যাঙ্গদের এডভোকেসি, এডুকেশন ও সামাজিক উন্নয়নে এই ডেস্ক কাজ করবে এবং সমস্ত গাইডলাইন মেনে প্রক্রিয়াগত কাজ সম্পন্ন হলেই এখানে ডিসেবিলিটি স্টাডি সেন্টার খোলা হবে ।
সক্ষম সম্পাদক মিঠুন রায় বলেন, বরাক উপত্যকায় প্রায় চল্লিশ হাজারের মতো দিব্যাঙ্গ রয়েছেন । চিকিৎসা শাস্ত্র বলছে, যদি শিশুর জন্মের ঠিক পরই প্রতিটি শিশুর দুর্বলতাকে শনাক্ত করে তার উপচার করা যায়, তাহলে অনেক শিশুই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন । তার জন্য সরকারের ‘আর্লি ইন্টারভেনশন’ নামক প্রকল্প রয়েছে। আর্লি ইন্টারভেনশনের মাধ্যমে যাদের ঠিক করা সম্ভব নয়, তাদের জন্য চাই রিহেবিলেটেশন ব্যবস্থা । যেমন স্পিচ থেরাপি, ফিসিওথেরাপি, অকুপেশনাল থেরাপি, সাইকো থেরাপি, ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট, স্পেশাল এডুকেটার সহ অন্যান্য নানা ব্যবস্থা । কিন্তু দেখা যায় যে, দু-একটি বিষয় ছাড়া বরাক উপত্যকায় ভালো কোনো থ্যারাপি ব্যবস্থা বা আর্লি ইন্টারভেনশন ম্যানেজমেন্ট নেই বললেই চলে । যার জন্য আর্থিক সবল অভিভাবকরা উন্নত চিকিৎসার আশায় বাইরে চলে যেতে পারলেও তার সুরাহা কতটুকু হয়, তার নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে । আর যারা দরিদ্র সীমার নীচে বসবাসকারী অভিভাবক হন তাদের জন্য চিকিৎসা বা রিহেবিলেটেশন এক দিবাস্বপ্ন । হাজার হাজার মাতাপিতা এই সন্তানের দুঃখ, বেদনার গাথা নিয়ে নিজের জীবনের সঙ্গে আপস করে নেন ভাগ্যের লীলা বলে । দিব্যাঙ্গদের জন্য সমর্পিত রাষ্ট্রীয় সংগঠন সক্ষম এই বিষয়ে বরাক উপত্যকায় দীর্ঘদিন থেকে কাজ করছে । আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বিষয়ক কিছু কোর্স চালু করার জন্য আবেদন জানায় সক্ষম । বিষয়টার আঞ্চলিক গুরুত্ব অনুধাবন করে তড়িঘড়ি এই বিষয়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেন উপাচার্য রাজীবমোহন পন্থ ।
কর্মশালায় অনলাইনে বক্তব্য রাখেন ভারত সরকারের স্বচ্ছ ভারত অভিযান অ্যাম্বেসেডর ডি. পি. শর্মা এবং বাংলাদেশের অটিজম পরামর্শদাতা রিফত আরা রিফা । রিহেবিলেটেশনে ভারত সরকারের আরবিএসকে প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে বক্তব্য রাখেন জালালপুর পি.এইচ.সির মেডিকেল অফিসার ডা. অন্নেষা নাথ, এছাড়াও সমাজ কর্ম বিভাগের ছাত্র ইক্রামুল হক ফিল্ড ওয়ার্কের মাধ্যমে দিব্যাঙ্গদের জন্য করা কার্যের খতিয়ান তুলে ধরেন । সহকারী অধ্যাপক ড. আলভিন যোসেফ ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন৷ কর্মশালায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী ছাড়াও বরাক উপত্যকার বিভিন্ন কলেজের ফ্যাকাল্টি এবং ডিসেবিলিটি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন । অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সমাজ কর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপিকা ড. জয়শ্রী দে ।