Barak UpdatesHappeningsBreaking News
আসামে বাঙালিরা লাঞ্ছিত-বঞ্চিত, ক্ষোভ আমরা বাঙালির
৪ ফেব্রুয়ারি: মৌলিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, নাগরিক অধিকার যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় স্বীকৃত হলেও আসামের বাঙালিদের ক্ষেত্রে সবই পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছে। ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য সব ক্ষেত্রেই বঞ্চনার শিকার তাঁরা। অভিযোগ করেছে আমরা বাঙালি দলের আসাম রাজ্য কমিটি৷ সচিব সাধন পুরকায়স্থ বলেন, আসামে বসবাসকারী অতি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সাহিত্য সংস্কৃতি সংস্থাকেও ‘অসম গৌরব প্রকল্পে’ সরকার অনুদান বন্টন করেছে। মোট ২১টি প্রতিষ্ঠানকে এই অর্থ বন্টন করা হয়েছে। বাঙালিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সম্পূর্ণ উপেক্ষিত করা হয়েছে। তাঁর কথায়, বিজেপি নেতৃত্বাধীন আসাম সরকার যে একশ শতাংশ বাঙালি বিদ্বেষী, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আসামে দ্বিতীয় বৃহত্তর জনগোষ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও সরকারি ভাবে তাদের ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
এই পরিস্থিতিতেও আসামের বাঙালি জনপ্রতিনিধিরা নীরব ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ করেন সাধনবাবু৷ তিনি বলেন, অসমিয়া জাতীয়তাবাদের কাছে তাঁরা আত্মসমর্পণ করেছেন। তাঁর কথায়, বিজেপি এখন উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদীতে পরিণত হয়েছে। চাকরি ক্ষেত্রে বিজেপি দলের প্রতিশ্রুতি ছিল, চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণির সরকারি কর্মচারী জেলাভিত্তিক নিয়োগ করা হবে৷ সরকার সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে৷ গুয়াহাটি থেকে নিয়োগপত্র দিয়ে বাঙালি অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর জনপ্রতিনিধিরা নির্লজ্জের মত বলছেন, চাকরি যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়।
চৌকিদার, পিয়ন, সাধারণ কেরানির চাকরি করার যোগ্যতা কি বাঙালিদের নেই? আসলে জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের ক্ষমতার রাজনীতিতে টিঁকে থাকার জন্য স্বজাতি স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে চলেছেন। যদি দিসপুরের অসমিয়া নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়ে যান, সেই ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না। অতীতে আসামে ক্ষমতাসীন সরকারগুলো সামান্য হলেও নিরপেক্ষ ছিল। বর্তমানে একমাত্র করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ছাড়া বাঙালি জাতির অধিকারের প্রশ্নে কেউ কথা বলেন না৷
এদিকে বাঙালির মধ্যে বিভাজন আনবার অনবরত খেলা চলছে। সম্প্রতি বাংলাভাষী উন্নয়ন পরিষদ গঠন করা হয়েছে৷ সেখানে সবাই একই ধর্মীয় গোষ্ঠীর। আমরা বাঙালি দলের পক্ষ থেকে
সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, বাঙালি জাতিসত্তা ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হয়নি। তাই সমস্ত রকম বিভাজন, অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনে সামিল হতে সাধনবাবু আহ্বান জানান।