NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
আদালতে নিযুক্তিতে অসমিয়া বাধ্যতামূলক, বরাকে ক্ষোভ
গৌহাটি হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার বৃহস্পতিবার বিভিন্ন জেলা আদালতে এলডিএ-টাইপিস্ট পদে নিযুক্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন। মোট ২৩৭টি পদের মধ্যে বরাক উপত্যকার তিন জেলার জন্যও রয়েছে ৩৩টি শূন্যপদ। কাছাড়ে ১৯, করিমগঞ্জে ৫ এবং হাইলাকান্দিতে ৯৷ কিন্তু সবকটি পদের ক্ষেত্রেই আবশ্যিক যোগ্যতার তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, রাজ্যের সরকারি ভাষা জানা বাধ্যতামূক। সরকারি ভাষা কী, তা জানাতে গিয়ে বন্ধনীতে শুধুই অসমিয়ার উল্লেখ রয়েছে।
হাই কোর্টে ওই আইনের লঙ্ঘনকে বরাকের মানুষ মেনে নিতে পারছেন না। শিলচর বার লাইব্রেরির সভাপতি নীলাদ্রি রায় জানিয়েছেন, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে রেজিস্ট্রারকে চিঠি লিখবেন। তাঁর কথায়, এর আগেও এমন হয়েছিল, তাঁরাই লড়াই করেছেন। এ সব ব্যাপারে এই অঞ্চলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন। একই প্রশ্ন বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনেরও। কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্তের আক্ষেপ, “মানুষ বিচার চেয়ে আদালতে যায়, হাই কোর্টে আপিল করে, সেই হাই কোর্টেই যদি বাংলাকে বেআইনি ভাবে উপেক্ষা করা হয়, তাহলে আমরা কোথায় যাব!” কাছাড় জেলা সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী জানান, এটা নতুন নয়। বছর তিনেক আগে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে ১৬০০ তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। সেখানেও অসমিয়া বাধ্যতামূলক থাকায় বরাক উপত্যকা থেকে মাত্র ১২জন চাকরি পেয়েছে। জুডিশিয়াল সার্ভিসের পরীক্ষাতে ৩০ নম্বরের পরীক্ষা হয় অসমিয়ায়। সেটিতে পাশ করা বাধ্যতামূলক। তা না করলে অন্যান্য বিষয়ের পরীক্ষায় খুব ভালো ফল করলেও নিযুক্তির জন্য বিবেচ্য হয় না। তিনি জানান, একই কাণ্ড ঘটেছে কিছুদিন আগে আবগারি দফতরেও।
অবসরপ্রাপ্ত জেলা বিচারপতি বিষ্ণু দেবনাথ বলেন, এই অঞ্চলের স্কুল-কলেজে যেহেতু অসমিয়া পড়া বাধ্যতামূলক নয়, ছেলেমেয়েরা এই ভাষাটা না জানাই স্বাভাবিক। ভাষা আইনেও বরাকের সরকারি ভাষা বাংলা৷ তাই অসমিয়ার পাশাপাশি বরাকের জন্য বাংলা জানার কথা উল্লেখ করা দরকার ছিল৷
হাই কোর্টের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলার উল্লেখ না থাকায় ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন শিলচর টিচারস ট্রেনিং কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিলীপকুমার দে-ও৷ তিনি বলেন, “এ কেমন কথা, গৌহাটি হাইকোর্ট পরীক্ষা নেবে, তাতে অসমিয়া ভাষা সব প্রার্থীর জন্য ( এমনকী বরাকের পদগুলোর জন্যও) আবশ্যিক করা হল! আইন অনুসারেই বরাকের সরকারি ও নিম্ন আদালতের কাজের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও খোদ হাইকোর্ট কেন এটা করল? বিধায়ক, সাংসদ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ চুপটি করে বসে আছেন কেন? এ তো ভাষা আইন লঙ্ঘন!”