Barak UpdatesHappeningsBreaking News
দুদিন ধরে দক্ষিণ শিলচরে জল সরবরাহ বন্ধ, দুর্ভোগ চরমেWater supply stopped in South Silchar since 2 days, people in deep crisis
ওয়েটুবরাক, ২৮ জুলাই : সমগ্র দক্ষিণ শিলচর ( লিংক রোড, আবুল কালাম আজাদ রোড, কাঠাল রোড, হাইলাকান্দি রোড, চিত্তরঞ্জন এভিনিউ, সোনাই রোড) অঞ্চলে জল সরবরাহ মঙ্গলবার থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ। আট মাস থেকে দক্ষিণ শিলচরের একমাত্র পরিশোধিত জল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ‘আরবান ওয়াটার এন্ড সুয়ারেজ বোর্ড’ -এর কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। ফলে তারা জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন৷ এ ব্যাপারে তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছে শিলচরের সক্রিয়পন্থী প্রবীণ নাগরিক মঞ্চ৷
তাঁরা অবশ্য কর্মীদের আন্দোলনের প্রতি নয়, ক্ষুব্ধ আসাম আরবান ওয়াটার এন্ড স্যুয়ারেজ বোর্ড’-এর ওপর৷ মঞ্চের সভাপতি মিহির কর পুরকায়স্থ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দিলীপকুমার দে বলেন, জল জোগানের প্রতিটি ‘কানেকশন’-এর সাথে ‘মিটার’ লাগানো রয়েছে, যার মাসিক ন্যূনতম কর ৩০০ টাকা৷ একত্রিশ দিনের মাস হলে আরও দশ টাকা বেশি৷ আর মিটার রিডিং বেশি হলে সাতশ থেকে হাজার পর্যন্ত বিল উঠছে। বিলের টাকা প্রতি মাসে দক্ষিণ শিলচরের জনসাধারণকে হাইলাকান্দি রোডের অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে নগদে জমা দিতে হচ্ছে। এখানে ব্যাঙ্কের চেক, ইলেকট্রনিক ট্রান্সফার, পে-টিম অচল। সব টাকা কাউন্টারে সংগ্রহ করে কর্মীরা ‘আসাম আরবান ওয়াটার এন্ড স্যুয়ারেজ বোর্ড’-এর তহবিলে জমা দেন। এর প্রধান কার্যালয় গুয়াহাটিতে৷ সেখানে শিলচরের ইঞ্জিনিয়ার ‘ডিউটি’ করেন। কিন্তু শিলচরের কর্মচারীদের বেতন মাসের পর মাস আটকে রাখেন। এমনকী রাস্তার জলের পাইপ ফেটে গেলেও গুয়াহাটির কেন্দ্রীয় অফিসের অনুমোদন ও বরাদ্দ ছাড়া মেরামত করা যায় না।
এই জলসরবরাহ কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়েছিল তৎকালীন বিধায়ক প্রয়াত বিমলাংশু রায়ের উদ্যোগে। পুরনো অনেকে এখনও বলেন, ‘বিমলাংশুবাবুর জল’। তখন বাড়ির কানেকশনের জন্য মাসে ১০৮ টাকা আদায় হত দিনে দুবার জল সরবরাহ বাবৎ। গ্রাহকরা চেক যোগে বা নগদে বা ব্যাঙ্কে বিলের টাকা জমা দিতেন। রাঙ্গিরখাড়ি পর্যন্ত জল আসে পুরসভা ও ‘পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং’ নিয়ন্ত্রিত পরিশোধনাগার থেকে। প্রতি বাড়িতে কানেকশনের জন্য আদায় হয় প্রতি মাসে নির্ধারিত ১০০ টাকা হারে, এর বেশি নয়। অথচ পুরসভার অন্তর্গত দক্ষিণ শিলচরের অধিবাসীদের দিতে হয় তিনশ থেকে হাজার টাকা। এত টাকা নিয়েও জলসরবরাহ হয় অনিয়মিত, প্রায়ই অপরিশোধিত ও অপেয় ।
মঞ্চের আরও অভিযোগ, সংগৃহীত টাকা চলে যায় গুয়াহাটির ওই বোর্ডের অফিস চালাতে, জি-এস রোড ও দিসপুর অঞ্চলের জল সরবরাহ বজায় রাখতে। এখানকার কর্মীরা বেতন বঞ্চিত থাকেন, গ্রাহকরা থাকেন জলবঞ্চিত।
মিহিরবাবু-দিলীপবাবুরা বলেন, শিলচরের সাংসদ, বিধায়ক সহ রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা শিলচরে হম্বিতম্বি করেন কিন্তু শহরের বিশাল অঞ্চলের মানুষের কথা দিশপুরে তুলে ধরেন না। লিখালিখি করলেও উত্তর দেবার সৌজন্য দেখান না। জেলা প্রশাসন ও পুর প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। উপায়ুক্ত কোনও চিঠির উত্তরই দেন না। শিলচরের সক্রিয়পন্থী প্রবীণ নাগরিক মঞ্চ গত ২৭ জুলাই শিলচরে উপস্থিত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জেলাশাসক মারফত এক জরুরি স্মারকলিপি দিয়ে অবিলম্বে বঞ্চিত কর্মীদের দীর্ঘদিনের বেতন সমস্যা সমাধান করে জলসরবরাহ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার অনুরোধ করেছে। এছাড়া, দক্ষিণ শিলচরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা সুরাহারও অনুরোধ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২৭ ও ২৮ তারিখে পাইপযোগে আরবান বোর্ডের জল সরবরাহ বন্ধ থাকলেও বেসরকারি গাড়ি দিয়ে প্লান্ট থেকে অনেকে উচ্চমূল্যে ‘প্রাইভেটে’ জল আনাচ্ছেন নিজেদের বাড়িতে। এ নিয়েও সাধারণ মানুষের ক্ষোভ পরিলক্ষিত হচ্ছে৷