Barak UpdatesAnalyticsBreaking News
এনআরসিতে নাম থাকলেও স্বস্তিতে নেই!Though 2 crore 85 lakh people’s citizenship is certain, yet none seems to be at peace!
২৯ আগস্টঃ অসমে প্রায় ২ কোটি ৮৫ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এনআরসি কর্তৃপক্ষ সরকারিভাবে জানিয়ে দিয়েছে, খসড়াছুট ৪০ লক্ষ এবং বাদপড়া ১ লক্ষেরই তালিকা বেরোবে ৩১ আগস্ট। আর যাদের নামে আপত্তি উঠেছিল তারাও ওই দলে। বাকিরা সবাই ভারতের নাগরিক। এর পরও মানুষের মধ্যে স্বস্তির লক্ষণ নেই।
৩ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষের সবাই এনআরসি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। সকলের নথিপত্র ফের পরীক্ষা হবে কিনা, কিছুদিন আগেও শুনানি চলে শীর্ষ আদালতে। এ বার কঠিন পরীক্ষার পর কাগজেপত্রে নাগরিক স্বীকৃতি মিলল যাদের, তাদেরও কারও মনে উচ্ছ্বাস নেই। কারণ ৪১ লক্ষের মধ্যে যে অনেকেরই নিকটাত্মীয় রয়ে গিয়েছে। সবাই উতকণ্ঠায়, ৩১ অগস্ট তাদের ভাগ্যে কী ঘটতে চলেছে!
আকাশবাণী শিলচরের অবসরপ্রাপ্ত ঘোষক অমিত সিকিদার বললেন, তাঁদের পরিবারে ৮জনের নাম রয়েছে এনআরসি খসড়াতে। আছে তাঁর নিজের নামও। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ও ভ্রাতৃবধূর নাগরিকত্ব ঝুলে রয়েছে। এ ছাড়া, বড় দাদার পরিবারের ৪জনের কারও নাম আসেনি। তাই ৮জনের স্বীকৃতি মোটেও উচ্ছ্বাসের নয়। তিনি এও উল্লেখ করেন, দেশভাগের বলি হাজার হাজার মানুষের নাম থাকবে না, এটা নিশ্চিত। এই সময়ে নিজের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়াটা বড় কথা নয়।
এক স্কুলশিক্ষিকা বললেন, স্বামী-শ্বশুরের নাম থাকলেও তাঁর ও শাশুড়ির নাম ৪০ লক্ষের তালিকায়। ও দিকে, তাঁর বাবার নাম খসড়ায় ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে ১ লক্ষের তালিকায় ফেলে ফের কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে। ফলে তাঁর দুই বাড়িতে সবাই দু্শ্চিন্তায়, কী হয় ৩১ তারিখে। সব পরিবারেই এক-দুজনকে নিয়ে উদ্বেগের সঙ্গে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
টেলিকম কর্মী নভুনন্দন শুক্লবৈদ্য বললেন, তাঁর এবং স্ত্রী-সন্তান সবার নাম খসড়াতে ছিল। কিন্তু তাঁর বিবাহিত বোন ও ভ্রাতৃবধূকে পুনরাবেদন করতে হয়েছে। আশা করছেন, তাদের নাম এ বার চলে আসবে। তিনি ভাবছেন, যারা বাদ পড়ে যাবেন তাদের কথা। বললেন, মানবিক দৃষ্টিতে তাদের জন্য সরকারের ভাবা উচিত।
একই বক্তব্য আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গণেশ নন্দীর। বললেন, আমাদের সকলের নাম আছে। নেই মায়ের নামটাই। নতুন করে আবার কাগজ দিতে হয়েছে। তাঁর কথায়, কীসের উচ্ছ্বাস! নিজের দেশে বারবার পরীক্ষা দিয়ে নাগরিকত্ব টেঁকাতে হচ্ছে। এর ওপর, নথি রাখতে না পারার দরুন কত অশিক্ষিত দুস্থ পরিবারকে এখন দুর্ভোগে পড়তে হবে!
সরকারি তরফে জানানো হয়েছে, ৩১ অগস্টের তালিকাতেও যারা বাদ পড়ে যাবেন, তাদের ১২০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আপিলের আবেদন করতে হবে।