Barak UpdatesHappeningsBreaking News
Students of Assam Univ manhandled by miscreants, road blocked near Ghungoor Police station
মেডিক্যালের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মারধর, ঘুংঘুর থানার সামনে রাস্তা অবরোধ
৩ ডিসেম্বরঃ ঘুংঘুর থানার সামনে রাস্তা অবরোধ করেছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। নেতৃত্বে রয়েছেন নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক অরিত্র ধর এবং অন্যান্য পদাধিকারী। তাদের অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে মেডিক্যাল কলেজের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র এবং এক ছাত্রীর সঙ্গে কতিপয় দুষ্কৃতী দুর্ব্যবহার করে। ছাত্রীটি রীতিমত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তাকে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে, মোবাইল কেড়ে নিয়ে নষ্ট করে দেয়। শেষে ইট তুলে মারতে চায়। মারে কিল-ঘুসি। প্রচণ্ডভাবে শারীরিক নিগৃহীত হয় দুই ছাত্রও।
অথচ ঘটনার সময় সামনেই দাঁড়িয়েছিলেন এক ট্রাফিক কনস্টেবল। ভীতিগ্রস্ত হয়ে তারা ওই কনস্টেবলের সাহায্য চাইলে তিনি ন্যূনতম সাড়া দেননি। এর দরুন দুই দুষ্কৃতী আরও বেশি চড়াও হয় তাদের ওপর। কোনওক্রমে তাদের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্র সংসদে অভিযোগ জানান। দল বেঁধে ছুটে আসেন অরিত্র সহ জনা ৫০ পড়ুয়া। ঘুংঘুর ফাঁড়ির ইনচার্জের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে দেখা যায়, তিনি নেই। বেশ কিছুসময় অপেক্ষার পরও তাঁকে না পেয়ে ফাঁড়ির সামনে রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। হাইলাকান্দি সড়কে অবরোধ গড়ে তোলেন। সাধারণ সম্পাদক অরিত্রর অভিযোগ, নারী নিরাপত্তা নিয়ে এই শহরেও প্রশ্ন উঠে গেল। দিনদুপুরে মেডিক্যাল কলেজের সামনে এমন ঘটনা, ভাবা যায় না।
ঘটনার সূত্রপাত মূলত কে আগে যাবে, সে নিয়ে। সোশ্যাল ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্টের ছাত্রছাত্রীরা এক মোটর সাইকেলে ছিলেন। বিপরীত দিক থেকে আরেক মোটর সাইকেল গিয়ে মেডিক্যাল কলেজের সামনের মোড়ে দাঁড়ায়। সবসময়ই সেখানে যানজট, ভিড়বাট্টা লেগে থাকে। এ দিন সকালও ব্যতিক্রম নয়। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারা মোটর সাইকেল নিয়ে এগোতে চাইলে দুষ্কৃতীরা উচ্চবাচ্য করতে থাকে। বাইকচালক ছাত্রটি তখন হেলমেট খুলে বলতে চান, তিনি তো ঠিকপথেই এগোচ্ছেন। তার অভিযোগ, কথা শেষ করার আগেই দুষ্কৃতীরা ঘুষি চালায়। তা দেখে পেছনের ছেলে ও মেয়েটি নেমে প্রতিবাদ করে। তখন ওই ছেলেটিকেও মারপিট শুরু করে। ছাত্রীটি দুষ্কৃতীদের চিনে রাখার জন্য তার মোবাইলে ভিডিও করছিলেন। তা দেখতে পেয়ে এ বার ছাত্রদের ছেড়ে এরা ছাত্রীটির ওপর চড়াও হয়। মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছড়ে সেটি নষ্ট করে দেয়।
তিন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে একজন ছিলেন বাঙালি। মোটর সাইকেল চালাচ্ছিলেন দক্ষিণী তরুণ। ছাত্রীটির বাড়ি ডিমা হাসাও জেলায়। দুষ্কৃতীরা বাংলা না জানার জন্যও তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য নানা কটুক্তি করে। অরিত্রদের কাছে আশ্চর্যের, এতক্ষণ ধরে এতসব ঘটনা ঘটে চললেও ভিড়ে ঠাসা এলাকায় কেউ ছাত্রছাত্রীদের সাহায্যে কেউ আসেনি। কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবলের ভূমিকাকে তারা ন্যাক্কারজনক বলে মন্তব্য করেন। রাস্তা অবরোধকারীরা তাই দুষ্কৃতীদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান। সঙ্গে ওই কনস্টেবলকে কর্তব্যজ্ঞানশূন্য বলে উল্লেখ করে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের আর্জি জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গভাষী ছাত্রছাত্রীদের কথায়, দুষ্কৃতীরা বাঙালি-অবাঙালি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়। দুষ্কৃতীদের কোনও জাতি বা জনগোষ্ঠীগত পরিচয় হতে পারে না। এদের একটাই পরিচয়, এরা দুষ্কৃতী। তাঁরা এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুঁজ বের করে গ্রেফতারের জোরালো দাবি জানান।