NE UpdatesAnalyticsBreaking News
বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি, কৃতজ্ঞতা বাংলা সাহিত্য সভার
ওয়ে টু বরাক, ৫ অক্টোবর : কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট বাংলা সহ আরও পাঁচটি ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ায় গভীর আনন্দ প্রকাশ করেছে বাংলা সাহিত্য সভা অসম। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বাংলা, অসমিয়া, পালি, প্রাকৃত ও মারাঠিকে ধ্রুপদী ভাষা রূপে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এই প্রেক্ষিতে বাংলা সাহিত্য সভা অসম-এর রাজ্য সমিতির পক্ষে রাজ্য সহকারী সাধারণ সম্পাদক সন্দীপন দত্ত পুরকায়স্থ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের এই পদক্ষেপে গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, বাংলা সাহিত্য সভা ২০২৩-এর মার্চ মাসে গুয়াহাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম রাজ্য সম্মেলনে শিলচর শাখার সভাপতি সমরবিজয় চক্রবর্তী ভারতীয় সংবিধানে বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পাবার জন্য তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
সমরবাবু বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছিলেন, ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতিই এখন বাংলার ধ্বস্ত সময়ে ভারতে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলার রক্ষাকবচ হতে পারে। সভায় বাংলার পাশাপাশি অসমিয়াকেও ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেবার জন্য দাবি উত্থাপন করা হয়। কেননা, দুটি ভাষায় মাগধীপ্রাকৃতজাত ভগিনীভাষা। অথচ অনেক আগেই ওড়িয়াকে ধ্রুপদী ভাষা রূপে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ওই বছরই জুলাই মাসের প্রতিনিধি সভায় এই দাবি বিধিবদ্ধভাবে গৃহীত হয় এবং সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। বিষয়টি কার্যকর করার জন্য রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ড. প্রশান্ত চক্রবর্তী নানা ক্ষেত্রে লাগাতার সংযোগ স্থাপন করে সদর্থক ভূমিকা পালন করেন। তিনি ভাষিক উন্নয়ন দপ্তরের অধ্যক্ষ শিলাদিত্য দেবের সহযোগিতায় ত্রিপুরা সরকারের দ্বারা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপনের পরিকল্পনাও করেছিলেন।
শিলচর শাখার সভাপতি সমরবিজয় চক্রবর্তী আনুষ্ঠানিক-সভার বাইরেও এ বিষয় নিয়ে সরব ছিলেন, জনমত তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। আর রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তীর নিরলস যোগাযোগের মাধ্যমে দাবিটি ক্রমশ বিরাট আকার ধারণ করেছিল। এক্ষেত্রে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার অসামান্য ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সন্দীপন দত্ত পুরকায়স্থ। তিনি বলেন, যে ভাষায় রাষ্ট্রীয় সংগীত রচিত, সেই ভাষাটিকে এতকাল পর ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিতে হল, এটাও দুর্ভাগ্যজনক। অনেক আগেই বাংলা ভাষার প্রাপ্য ছিল এটা। এখন বাংলা শুধু ভারতের সংবিধানে অষ্টম তালিকাভুক্ত ২২টি আঞ্চলিক ভাষার একটি নয় ধ্রুপদী ভাষা হিসেবেও তা অন্তর্ভুক্ত হল, এ সত্যিই আনন্দের।
এদিকে মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তকে প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “আমাদের সরকার ভারতের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার কাজ করে। আমরা আঞ্চলিক ভাষাগুলোকে জনপ্রিয় করার বিষয়ে দায়বদ্ধ। আমি অত্যন্ত খুশি যে অসমিয়া, বাংলা, মারাঠি, পালি ও প্রাকৃতকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রীসভা। এই ভাষাগুলো অপূর্ব। এগুলো আমাদের অসাধারণ বৈচিত্র্যের সাক্ষ্য বহন করে।” সন্দীপনবাবু বলেন, ধ্রুপদী ভাষা রূপে স্বীকৃতির ফলে সাংস্কৃতিক পরিচয় সংরক্ষণ সম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, নানা ভাষার সঙ্গে সমন্বয়ী কাজ করা অর্থাৎ যোগাযোগের ভাষা হিসেবে কাজ করা যাবে। তৃতীয়ত, অ্যাকাডেমিক এবং বৌদ্ধিক চর্চার উন্নয়ন সম্ভব হবে। চতুর্থত, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সংরক্ষণ ও চর্চার পরিসর বৃদ্ধি পাবে।