Barak UpdatesHappeningsBreaking News
বন্যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিলচর জেলা কংগ্রেস, ডিসিকে মেমোরেন্ডাম
ওয়েটুবরাক, ২৭ ফেব্রুয়ারি : শীতের মরশুম শেষ , সামনেই বর্ষা। গত বৎসরের ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে দিল শিলচর জেলা কংগ্রেস কমিটি৷ সভাপতি তমালকান্তি বণিক বলেন, এক বছরে দুই-দুইবার বানভাসি হয়েছেন কাছাড়ের মানুষ৷ রেলপথ, সড়কপথ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকায় দিনের পর দিন যোগাযোগ বিহীন হয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছেন মানুষ। মাত্র ৩৫০ কি:মি: দূরে থাকা রাজধানী শহর গুয়াহাটিতে আকাশপথে যাতায়াত করতে সাধারণ মানুষকে গুণতে হয়েছে ২৮-৩০ হাজার টাকা।
তাঁর অভিযোগ, বন্যার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারের কোনও হেলদোল নেই। মেঘালয় হয়ে রাজধানীতে যাওয়া-আসায় নানা সমস্যা। সেক্ষেত্রে একমাত্র বিকল্প হলো শিলচর -সৌরাষ্ট্র মহাসড়ক হয়ে যাতায়াত করা। বর্তমানের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গাড়কারি ঘোষণা করেছিলেন, মহাসড়কের কাজ ২০২৩ সালের মধ্যেই শেষ হবে। এখন শিলচরের সাংসদ ডা. রাজদীপ রায় জানাচ্ছেন, ২০২৬ সালে কাজ শেষ হবে। তমালের কথায়, বর্তমানে মহাসড়কের হারাঙ্গাজাও থেকে শিলচর পর্যন্ত রাস্তার কোনও অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। যে কাজগুলো আগে করা হয়েছিল, সেগুলোও দিনের পর দিন অবহেলায় অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থায়, মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। অথচ সরকার বা শাসক দলের এমএলএ-এমপিদের কিছু আসে-যায় না, তাঁরা নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছেন।কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এক কথা বলেন, আর নির্বাচিত সাংসদ আরেক কথা বলেন৷ এর থেকে হাস্যাস্পদ আর কী হতে পারে ! মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে ভাড়ের মতো আচরণ করছে সরকার, বলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি।
তাঁর অভিযোগ, গত বৎসরের প্রলঙ্করী বন্যার সময় প্রায় ১৮টি জায়গায় নদীবাঁধ কোথাও ভেঙে, কোথাও উপচে জল ঢুকেছে শহরে। ভাঙা স্লুইস গেটগুলোর মেরামতি সহ কোনও ইতিবাচক কাজ করেনি বর্তমান সরকার। গত বৎসরের বন্যায় বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া হাজার হাজার মানুষ এখন পর্যন্ত পাননি কোনোও সরকারি সহায্য। কিন্তু সরকার তার বয়ান বাজি অটুট রেখেছে।
তমাল বলেন, এই শহরে এসে ক্যাবিনেট মিটিংয়ের নামে পিকনিক করে, সরকারি তহবিলের আদ্যশ্রাদ্ধ করে মিথ্যা ভাষণের ফুলঝুড়ি উড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সহ তাঁর গোটা ক্যাবিনেট। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজের কাজ কিচ্ছু হয়নি। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরির পরীক্ষায় কাছাড় জেলা থেকে কতজন পাশ করেছেন, শিলচরে অনুষ্ঠিত ক্যাবিনেট মিটিংয়ে তার একটি মনগড়া মিথ্যা সংখ্যা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জেনেশুনেই মিথ্যা কথা বলেছেন কারণ সত্য বলার সাহস নেই তাঁর । যদি পাশের তালিকা প্রকাশিত হয় তবে মুখ্যমন্ত্রী যে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন সেটা যেমন প্রকাশ পাবে, তেমনি বরাকের বেকারদের প্রতি যে অমানবিক বৈষম্য করা হচ্ছে সেটাও প্রমাণিত হবে৷ তাতে যে অসন্তোষের আগুন জ্বলবে বরাকে, তা টের পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী জেনেশুনে তাঁর কুকর্মকে ঢেকে রাখার স্বার্থে চাকরিপ্রত্যাশীদের পাশের তালিকা প্রকাশ করছেন না।
কংগ্রেসের দাবি, অবিলম্বে জেলার প্রত্যেকটি বিকল স্লুইস গেট, ও ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধ গুলির মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ করার পাশাপাশি মহাসড়কের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সমাপ্ত করা হোক। গত বারের মতো সরকারি উদাসীনতায় সৃষ্ট কোনও দুর্যোগের শিকার যদি এ বারও হতে হয় তবে হ বরাক উপত্যকায় ক্ষোভের তীব্র আগুন জ্বলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি।
জেলাশাসককে স্মারকপত্র দিয়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সোনাবাড়িঘাট থেকে তারাপুর মজুমদার বাজার পর্যন্ত ইঅ্যান্ডডি বাঁধ পুরো মজবুত করে তোলার দাবি জানানো হয়৷ বেতুকান্দি, বেরেঙ্গা, আঙ্গারজুর এবং রাজনগরের রায়পুর এলাকার কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন তাঁরা৷