Barak UpdatesHappeningsBreaking News
কৃতীদের সংবর্ধিত করল রূপম সাংস্কৃতিক সংস্থা
ওয়েটুবরাক, ২৩ মেঃ স্বরূপা নাথ থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। রক্তের পরিমাণ অস্বাভাবিক বেড়ে যায় বলে প্রতি মাসে দুই বার হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দিতে হয়। এমন এক জটিল রোগ সঙ্গী হওয়ার পরও ডিএনএনকে স্কুলের ছাত্রী স্বরূপা দুটি লেটার সহ ৭১ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে।
সুচরিতা দাস শারীরিক প্রতিবন্ধী। খর্বাকৃতি বলে অনেকে তাকে এড়িয়ে চলে। একেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে রামানুজ গুপ্ত সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্রী সুচরিতা ৭৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে।
অমিত রায় সাধারণ সবজি বিক্রেতার সন্তান। টিউশন পড়ার বদলে মাধ্যমিক পাশের পর নিজে টিউশন পড়িয়েছে। শুধু নিয়মিত স্কুলে গিয়ে পড়া তৈরি করে পাঁচটি লেটার সহ নব্বই শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছে।
কঠোর শিক্ষাসাধনার মধ্য দিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার রূপম সাংস্কৃতিক সংস্থার ব্যবস্থাপনায় রূপম প্রতাপ-প্রিয় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট তাদের সংবর্ধনা জানায়। এরা তিনজনই নিজেরা উপস্থিত থেকে বৃহস্পতিবার সংবর্ধনা গ্রহণ করে। তালিকায় ছিল উচ্চ মাধ্যমিকে বরাক সেরা নম্বর প্রাপক রামানুজ গুপ্ত সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলের বিশ্বদীপ নাথ, মাধ্যমিকে বাংলায় রাজ্য সেরা পিসি বড়জালেঙ্গা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী রোশনি দেবও। এরা অবশ্য উপস্থিত হতে পারেনি। এ দিন সংবর্ধিত হয় রূপম পরিবারের মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাও। তারা হল সদস্য রঞ্জনকুমার পালের নাতনি রাজশ্রী পাল, সত্যজিত দের কন্যা সোহানা দে, বিধান চৌধুরীর নাতনি অর্চিতা চৌধুরী, উত্তম সরকারের পুত্র দেবরাজ সরকার এবং বিশ্বদীপ নাগের কন্যা রোশনি নাগ। এরাও নম্বর তোলার দিকে অন্যদের চেয়ে কম নয়। সোহানা ও রাজদীপ পাঁচটি করে লেটার পেয়েছে। বাকিদের মার্কশিটেও দুটি-তিনটি লেটার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বরিষ্ঠ অধ্যাপক মানবেন্দ্র দত্তচৌধুরী বলেন, নম্বর দিয়ে সবসময় মেধার বিচার হয় না। কারণ মেধার সঙ্গে জিনের গঠন ও বিকাশের সম্পর্ক রয়েছে। ফলে কারও একটু আগে মেধার বিকাশ ঘটে, কারও কিছুটা দেরিতে। তবে তাঁর কথা্য়, যে মানুষ যত বেশি সংস্কৃতিমনস্ক, তিনি তত সুন্দর।
শিলচর কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষা শাশ্বতী রায় স্কুল যে জটিল সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল, এর উল্লেখ করে বলেন, এর পরও ছাত্রছাত্রীরা খুব ভালো ফল করেছে। ১৭৪ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৭৩জনই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। তিনি অভিভাবকদের পরামর্শ দেন, তাঁরা যেন ছেলেমেয়েদের বেশি বেশি নম্বরের জন্য অহেতুক চাপ সৃষ্টি না করেন। বরং তাদের উৎসাহিত করা উচিত।
অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন সভাপতি বিভাস দেব। উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সভাপতি প্রদীপ দত্তরায়, সম্পাদক নিখিল পাল, কার্যকরী সভাপতি রাজকুমার পাল, সহ-সভাপতি নীহাররঞ্জন পাল, পঙ্কজ পুরকায়স্থ, কল্যাণ পাল প্রমুখ।