Barak UpdatesHappeningsBreaking News
মেঘালয়ের হিংসায় কেন্দ্র সরকারের হস্তক্ষেপ চাইল বরাক বঙ্গ
"উগ্র আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদ ভারতীয়ত্ববোধের চেতনায় আঘাত হানছে"
ওয়েটুবরাক, ৩১ অক্টোবর : মেঘালয়ে সরকার ও প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় সমতলীয় ভারতীয় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সার্বিক নিরাপত্তা বিপন্ন। উগ্র জাতীয়তাবাদীদের ক্রমাগত হুমকি ও নানাবিধ অমানবিক কাণ্ডে তারা অসহায়বোধ করছেন। এই অবস্থায় অবিলম্বে কেন্দ্র সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি তুলল বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মারও হস্তক্ষেপের আর্জি রেখেছে সম্মেলন।
সোমবার বরাকবঙ্গের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত এক বিবৃতিতে এই দাবি তুলে দলমতের উর্ধ্বে বরাক উপত্যকার জনপ্রতিনিধি এবং নেতৃবৃন্দকেও এগিয়ে আসতে আবেদন রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ এগিয়ে আসায় তাঁকে সাধুবাদ দিয়েছেন।
বিবৃতিতে সাধারণ সম্পাদক দত্ত বলেছেন, কর্মসংস্থানের দাবি জানাতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার অধিকার প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীরই রয়েছে । কিন্তু তাই বলে শিলঙে মিছিল বের করে সরকারের কাছে দাবি জানানোর ধুয়ো তুলে রাজপথে বেছে বেছে বাঙালি, হিন্দিভাষী সহ অন্যান্য সমতলীয়দের উপর হিংসাশ্রয়ী হামলার ঘটনায় আয়োজকদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। এত বড় একটি অমানবিক ঘটনার বাহাত্তর ঘন্টা পরও মেঘালয় সরকার ও প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকা বিস্ময়কর৷
বিবৃতিতে দত্ত বলেছেন, ওই ঘটনাকে কোনওভাবেই তাৎক্ষণিক ক্ষোভের বিস্ফোরণ বা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলা বাস্তব তথ্য ভিত্তিক নয়। অতীতে বিভিন্ন সময়ে শিলঙ সহ মেঘালয়ের বিভিন্ন প্রান্তে সমতলীয়দের বিরুদ্ধে সংগঠিত ঘটনার মত ওই হিংসার পেছনেও পূর্ব-পরিকল্পনা ছিল বলে স্পষ্ট আভাস পাওয়া যাচ্ছে। মুখ ঢেকে লাঠি হাতে একদল যুবকের মিছিলে অংশগ্রহণ, হঠাৎ বেছে বেছে পথচারী এবং যানচালক ও আরোহীদের উপর অমানবিক হামলা, ঘটনার খবর পেলেও পুলিশের নির্বিকার ভূমিকা, ভিডিও ফুটেজ দেখার পরও আইনি পদক্ষেপ না নেওয়ায় নেপথ্য মদতের ছবিটা একেবারে জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে । শিলঙ শহরে এক বাজার এলাকায় গত সপ্তাহের অগ্নিসংযোগের ঘটনাও রহস্যাবৃত। এই ঘটনায় বহু সমতলীয় ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছেন। ফলে আরও একবার দেখা গেল, মেঘালয়ে উগ্র আঞ্চলিক জাতীয়তাবাদ ভারতীয়ত্ববোধের চেতনায় আঘাত আনতে অতীতের মতোই এখনও বেপরোয়া। বার বার হামলাবাজ, খুনেদের আড়াল করা ওই রাজ্যে নিয়মে পরিণত হয়েছে। জাতিগত প্রশ্নে ন্যায়বিচার প্রহসনে পরিণত হয়েছে মেঘালয়ে।
বিবৃতিতে সাধারণ সম্পাদক দত্ত বলেছেন, মেঘালয় সমতলীয় ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা যখন বিপন্ন এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকায় যেখানে নানা প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে সেখানে কেন্দ্রকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা দরকার । নইলে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা আরও ঘটবে । মেঘালয়ে সমতলীয়দের বসবাস করা ক্রমশঃ আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।