Barak Updates

শিলচরের মহিলা যাত্রীর সঙ্গে রেল পুলিশের দুর্ব্যবহার
Railway police misbehaves with a female passenger of Silchar

রিজার্ভেশন কামরায় সাধারণ যাত্রী, প্রতিবাদ করায় হেনস্তা

২৫ জুনঃ রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা, তাদের সুযোগ-সুবিধে দেখার জন্যই রেল পুলিশের চাকরি। কিন্তু তাদের একাংশ উল্টো কাজটাই করেন। এর প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হলেন শিলচরের এক মহিলা যাত্রী। আপত্তিকর মন্তব্য, ঠেলাধাক্কা, বাঙালি-অসমিয়া বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা—কোনও কিছুই বাদ রাখেননি। শেষে অন্য যাত্রীরা এগিয়ে গেলে রঙিয়া স্টেশনে নেমে যান অভিযুক্ত পুলিশকর্মী মীর হোসেন আলি। সোসিয়ার মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি রেলকর্তাদের নজরে যায়। এ নিয়ে সর্বত্র চর্চা হচ্ছে।

শিলচরের সাংস্কৃতিক কর্মী, রক্তদান আন্দোলনের কর্মকর্তা শ্বেতা রায় তাঁর মাকে নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে শিলচর থেকে শিয়ালদহ যাচ্ছিলেন। কামাখ্যা স্টেশনে পৌঁছালে মীর হোসেন আলি যাত্রীদের রিজার্ভেশন কামরায় ঠেলে দিচ্ছিলেন। থিকথিকে ভিড়ে নড়াচড়া করতে পারছিলেন না রিজার্ভেশন টিকিটের যাত্রীরা। প্রতিবাদ জানান শ্বেতা রায়। সাধারণ যাত্রী তোলার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতেই খাকি পোশাকের দৌলতে মীর হোসেন প্রশ্ন করে, এটা তোমার বাবার ট্রেন নাকি। ক্ষেপে যান শ্বেতা। কিন্তু তার কোনও কথার জবাব না দিয়ে বারবার অসমিয়ায় কথা বলতে চাপ সৃষ্টি করেন। একসময় তিনি মহিলা যাত্রীকে ধাক্কা মেরে বসেন। তখনই এগিয়ে যান কামরার অন্যান্য যাত্রীরা। তার নাম জানতে চাইলে বলতে অস্বীকার করেন। ইউনিফর্মের নেমপ্লেট দেখতে গেলে তিনি তা ছিড়ে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেন। শ্বেতা সহ বিভিন্ন যাত্রীরা গোটা ব্যাপারটা ভিডিও করতে থাকলে ট্রেন গিয়ে রঙ্গিয়া স্টেশনে দাঁড়াতেই ওই রেল পুলিশ নেমে পড়েন।

শ্বেতা এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গিয়েও কম দুর্ভোগে পড়েননি। এ বলেন ওখানে যান, ও বলে আমার তা দায়িত্ব নয়। ততক্ষণে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। ট্যুইটারে রেলমন্ত্রী সহ বিভাগীয় কর্তাদের দৃ্ষ্টি আকর্ষণ করা হয়। শেষে ফারাক্কায় পৌঁছালে রেলকর্তাদের একটি দল ট্রেনে উঠে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। সমস্ত বিষয় লিখে নেন। উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তাঁরা।

শ্বেতা রায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের খবরে শিলচর সহ বরাক উপত্যকাতেও প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন থেকে সাধারণ মানুষ এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান। উপযু্ক্ত তদন্তের দাবি করেন। কারণ এই ঘটনার সঙ্গে রেলে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা, ভাষিক আগ্রাসন, রিজার্ভেশন টিকিট করার যৌক্তিকতা ইত্যাদি বহু বিষয় জড়িয়ে রয়েছে।

শ্বেতার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন প্যাসেঞ্জারস অ্যামেনিটিজ কমিটির সদস্য, বিজেপি নেতা অমরেশ রায়ও। তিনি বলেন, এই পুলিশ কর্মীর কড়া শাস্তি হওয়া চাই, যাতে আর কোনও মহিলা যাত্রী এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়।

English text here

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker