Barak UpdatesHappeningsBreaking News
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে উত্তাল বিশ্ববিদ্যালয়, সড়ক অবরোধ করে ছাত্রদের প্রতিবাদProtest mounts on by students of Assam University, road blocked
৪ ডিসেম্বর : আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নিগ্রহ সহ দুই ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় বুধবারও আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। সকাল থেকেই মূল গেট বন্ধ করে ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলনে নেমে পড়েন। এর পর প্রতিবাদী ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে অবরোধ গড়ে তুলে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। বেলা বাড়তেই সড়কের দু’পাশে গাড়ির লম্বা লাইন লেগে যায়। খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন শিলচর সদর থানার ওসি দিতুমণি শইকিয়া। তিনি নানাভাবে ছাত্রদের বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেও বিফল হন। আন্দোলনরত ছাত্রদের একটাই দাবি, যেকোনও মূল্যে অভিযুক্তদের সবাইকে গ্রেফতার করতে হবে। এ দিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে কাছাড় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
এ দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেটের সামনে আন্দোলনরত ছাত্ররা ওই নিগ্রহের ঘটনার সময় সেখানে থাকা ট্রাফিক পুলিশের বরখাস্তের দাবিও তোলেন। তাঁরা সাফ জানান, মঙ্গলবারের ঘটনার পর বুধবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও ওই ট্রাফিক পুলিশকে বরখাস্ত করা হয়নি। ছাত্ররা পুলিশ সুপারের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলেছেন, এই বিষয়টিতে পুলিশ আন্তরিক হলে এই পদক্ষেপ এতক্ষণে নেওয়া হতো। এ দিকে সদর ওসি দিতুমণি শইকিয়া জানান, অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে অন্য দু’জনকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। তাকে গ্রেফতার করার সবধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে পুলিশ।
অন্যদিকে, ছাত্রদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনওভাবেই তারা দাবি থেকে সরে আসবেন না। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলন চলতেই থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় গবেষক সংস্থার পক্ষে এ দিন মিলন দাস দিতুমণি শইকিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে তিনি আন্দোলনস্থলে জমায়েত হওয়া ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন, পুলিশ নানাভাবে তাদের আন্দোলন বানচাল করে দিতে চাইছে। সে সময় উপস্থিত ছাত্ররা আওয়াজ তোলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে কোনও ব্যাপারে আপসে যেতে তাঁরা রাজি নন। মিলন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এমন ঘটনা দিনের বেলায় না হয়ে রাতে ঘটলে এটি হায়দরাবাদ ঘটনারই পুনরাবৃত্তি হত।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক অরিত্র ধর এ দিন বলেন, তাদের কাছে খবর রয়েছে অভিযুক্ত দুজন বর্তমানে শিলচর ছেড়ে আইজলে রয়েছে। তিনি কড়া ভাষায় বলেছেন, পুলিশ ইচ্ছে করলে তাদের আইজল থেকেও গ্রেফতার করতে পারবে। আসাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কর্মচারী সংস্থার পক্ষ থেকেও এ দিন পড়ুয়াদের নায্য দাবির প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে। আসাম কলেজ শিক্ষক সংস্থাও একইভাবে বলেছে, এই ইস্যুতে ছাত্রদের দাবি যথেষ্ট সঙ্গত। এর আগে নিগৃহীত ছাত্রী তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই বর্বরোচিত ঘটনার বিচার চেয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পেছনে কোনও জাতিবিদ্বেষ কাজ করেনি। তিনি যেকোনও মূল্যে অপরাধীর শাস্তি চেয়েছেন।
শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইনচার্জ প্রদ্যোষ কিরণ নাথ এই পরিস্থিতি নিয়ে কাছাড় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে এমর্মে এক চিঠিও পাঠিয়েছেন। জানিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে। তিনি টেলিফোনে জেলাশাসকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। জানা গেছে, কাছাড়ের জেলাশাসক লায়া মাদ্দুরি বর্তমানে বাইরে রয়েছেন। তবে তিনি এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে একজন অতিরিক্ত জেলাশাসককে নিয়োজিত করবেন বলে জানান। জানা গেছে, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার খুব শীঘ্রই ঘটনাস্থলে পৌছচ্ছেন।
অন্যদিকে সকাল থেকে এই আন্দোলনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল গেট বন্ধ থাকায় ছাত্র ও শিক্ষকদের কেউই ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্তারাও এই ন্যাক্কারজনক ঘটনায় ক্ষোভ ব্যক্ত করে কাজে যোগ দেননি।