Barak UpdatesBreaking News
পঞ্চায়েত ভোট বিজেপিকে প্রচুর মুসলিম নেতা দিয়েছে, লিখেছেন আমিনুল হক লস্কর
নির্বাচনে হার-জিত থাকবেই। পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলাফল নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে চর্চা চলবে, বিশ্লেষণ হবে, এটাই স্বাভাবিক। দীর্ঘদিন যে কোনও দল ক্ষমতায় থাকলে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বয়। মধ্যপ্রদেশে তা-ই হয়েছে। রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের বিরুদ্ধে নানা কারণে মানুষের ক্ষোভ ছিল। তাঁরা ভোটের বাক্সে এর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের যে আস্থা অটুটু রয়েছে, লোকসভা নির্বাচনেই এর প্রমাণ মিলবে। কিন্তু ছত্তিশগড়ের ফলাফল আমাকে ভাবায়। রমন সিং এমন মানুষ, যে সারাক্ষণ সাধারণ জনতার কথা ভাবেন। দুর্নীতির ধারেকাছে নেই। উন্নয়নও কম হয়নি তাঁর আমলে। কিন্তু হেরে গেলেন। আর তেলেঙ্গানায় ভোট হয়েছে স্থানীয় ইস্যুতে। তাই সেখানে আঞ্চলিক দল টিআরএস ক্ষমতায় ফিরে এসেছে। এই রাজ্যে জয়ের কথা বিজেপি নেতারা ভাবেনওনি। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল হল মিজোরামে। আমাদের পার্শ্ববর্তী এই রাজ্যটিতে কংগ্রেস উতখাত হওয়ায় গোটা উত্তর-পূর্ব কংগ্রেস-মুক্ত হল। খ্রিস্টান রাজ্যটিতে বিজেপি একটি আসন জিতে খাতা খুলতে সক্ষম হয়েছে, সে কম কথা নয়। পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী লাল থানহাওলা দুই আসনে দাঁড়িয়ে দুই জায়গাতেই হেরেছেন। সেখানে সরকার গড়ছে এমএনএফ। এরা হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বাধীন নেডার শরিক।
এ বার আসি নিজের জেলায়। বুধবার কাছাড়ে পঞ্চায়েত ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হবে। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের আগে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে এর কোনও প্রভাব বুধবারের গণনায় থাকার কথা নয়। আমরা বিশ্বাস করি, নিরপেক্ষভাবে ভোট গণনা হবে। তাতেই কংগ্রেসটে হটিয়ে বিজেপি জেলা পরিষদ গঠন করবে। কংগ্রেসের এত উতসাহের কারণ নেই। অসমের পঞ্চায়েতের ফলাফল ছাড়াও লোকসভা নির্বাচনে ধূলিসাত হয়ে যাবে রাহুল গান্ধীর দল।
এই পঞ্চায়েত নির্বাচন বিজেপির কাছে আরেক কারণে গুরুত্বপূর্ণ, তাতপর্যবাহী। এ বার জেলায় সংখ্যাগুরু, সংখ্যালঘু সব আসনে দল প্রার্থী দিতে সক্ষম হয়েছে। ২০১২ সালে সংখ্যালঘু এলাকাকে ছেড়েই দিয়েছিলেন নেতারা। কারণ প্রার্থী নেই। এ বার চিত্র ভিন্ন। আমি বিধায়ক থাকায় বিজেপির প্রতি মুসলমানদের আস্থা বেড়েছে। তাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলে দলে বিজেপি অফিসে সামিল হয়েছেন। দফায় দফায় তাঁদের সঙ্গে সভা হয়েছে। বিজেপির সভ্যপদ গ্রহণ করেছে। পরে টিকিটের জন্য আবেদন করেছে। ফলে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন শুধু মুসলমান সমর্থক বা ভোটই বাড়ায়নি, বেড়েছে বিজেপির মুসলমান নেতাও। সংখ্যালঘু এলাকায় মুসলমান প্রার্থী দিতে পারায় দলের মোট ভোটপ্রাপ্তিও অনেকটা বেড়ে যাবে, তা নিশ্চিত। এই বাড়তি ভোট এবং প্রার্থীরা লোকসভা নির্বাচন সহ অন্যান্য সাংগঠনিক কাজে দলের সম্পদ হয়ে থাকবে।
আমার বিশ্বাস, দলের প্রদেশ এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিষয়টি গুরুত্ব সহ পর্যালোচনা করবেন। তাতে আগামীদিনে বিজেপির ভবিষ্যত উজ্জ্বলতর হবে।