Barak UpdatesBreaking NewsFeature Story
No fees to pay lawyer, man lands in detention camp! released on bail after 4 yearsউকিলের ফি কোথায়, তাই ডিটেনশনে! ৪ বছর পর জামিনে মুক্ত শুকদেব
২৬ ফেব্রুয়ারি: গরু-ছাগল বেচে নথি জোগাড় করলেও উকিলের টাকা মেটাবেন কোথা থেকে! প্রতি কিস্তিতে ২-৩ হাজার টাকা! তাই নিজেকে ভাগ্যের হাতেই সঁপে দিয়েছিলেন হাইলাকান্দি জেলার মোহনপুরের শুকদেব রী৷ পুলিশ ২০১২ সালে তাকে বিদেশি সন্দেহ করে রিপোর্ট করে৷ ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল নোটিশ পাঠায়৷ মামলা চলে৷ উকিলের টাকার ভয়ে ট্রাইব্যুনালে যাওয়াই বন্ধ করে দেন৷
এর আগেই অবশ্য ভারতীয় প্রমাণের যাবতীয় নথি আদালতে জমা করেছিলেন তিনি৷ কিন্তু ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের সদস্য সে সব দেখতেও চাননি৷ ২০১৬ সালের ১৭ মার্চ জিজ্ঞাসাবাদের দিনে অভিযুক্তকে না পেয়ে একতরফাভাবে তাকে বিদেশি বলে রায় দেন৷ তিনমাসের মাথায় ৩ জুন পুলিশ তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে আনে৷ সোজা পুরে দেয় শিলচর ডিটেনশন ক্যাম্পে৷ আসলে শিলচর সেন্ট্রাল জেলে৷
তিন বছরের বেশি সময় ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকলে তাদের জামিনে মুক্তি দিতে গত বছর রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্তু শুকদেবের স্ত্রী-সন্তান কী করে জানবেন তা! কিন্তু তারা যে সব সঁপে দিয়েছে ভাগ্যদেবীর কাছে! শুকদেবের স্ত্রী শিশুবালা আজও বিশ্বাস করেন, ভাগ্যদেবীই সমাজকর্মী কমল চক্রবর্তীকে তাঁদের বাড়ি পাঠান৷ এনআরসি নিয়ে অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করতে গিয়ে কমলবাবু ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দিদেরও খোঁজখবর শুরু করেন৷ শুকদেব রী নামটা জেনেই তিনি বিস্মিত হন৷ এ তো চা বাগান জনগোষ্ঠীর৷ এনআরসিতেও তাদের নথির কড়াকড়ি থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে৷
কমলবাবু একদিন দুপুরে মোহনপুরে তাদের বাড়ি গিয়ে তাঁর বিস্ময়ের মাত্রাটা বেড়ে যায়৷ বাবা বিরাজ রীর নাম রয়েছে ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকায়! তা ট্রাইব্যুনালে জমাও করা হয়েছিল৷ কিন্তু এখন ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে গেলে হাইকোর্টে যেতে হবে৷ তা তাদের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব৷ শেষে কমলবাবুই পরামর্শ দেন, তিন বছর পেরিয়ে যাওয়ায় জামিনে মুক্তির আবেদন জানাতে৷ কিন্তু জামিনের জন্য যে একলক্ষ টাকা করে দুইজন জামিনদার নিতে হবে৷ শেষে অনেক ছোটাছুটি করে এর ব্যবস্থা করা হয়৷
বূধবার ডিটেনশন ক্যাম্প-জেল থেকে বেরিয়ে আসেন শুকদেব৷ গেটের বাইরে স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ বলেন, সব বেচেও ভারতীয় হতে পারলাম না! এখন প্রতি সপ্তাহে তাঁকে থানায় গিয়ে হাজিরা দিতে হবে!