Barak UpdatesHappeningsSports
Nabakiran Club becomes champion in cricket tournament at Dudhpatilদুধপাতিলে ক্রিকেট, চ্যাম্পিয়ন নবকিরণ ক্লাব
১৯ ফেব্রুয়ারি: ছোট দুধপাতিল গ্রামে সর্বাঙ্গীণ মানব কল্যাণ সংঘ এবং দুর্গাশক্তি ক্লাবের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বরাক চ্যাম্পিয়ন ট্রফি টেনিস বল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিজয়ী হয়েছে রামনগর বেড়াখালের নবকিরণ ক্লাব। বুধবার ফাইনালে স্থানীয় স্পার্টানস দলকে ৭০ রানে হারিয়ে প্রতিযোগিতার প্রথম সংস্করণের চ্যাম্পিয়ন হয় নবকিরণ। বরাক উপত্যকার তিন জেলা থেকে মোট ৬৪ টি দল এতে অংশ নিয়েছিল। ১২ জানুয়ারি প্রতিযোগিতার শুরু হয়৷ চলে দেড় মাস টানা । টেনিস বলেই এলাকায় উৎসবের মেজাজ তৈরি হয়েছিল।
ফাইনালে টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় নবকিরণ৷ প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে রানের পাহাড় গড়ে তোলেন দলের ব্যাটসম্যানরা। দরবারে ১৩৫ রান করেন তারা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান তোলেন বনদীপ চক্রবর্তী। তার স্কোর ৬৬। সর্বোচ্চ রান তোলার সুবাদে ফাইনালের ম্যান অফ দ্য ম্যাচ তিনি৷ ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট খেতাবও জিতেন তিনি। বোলিংয়েও ভালো প্রদর্শন করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন বাবলু, তার স্কোর ২৬। জয়ের জন্য ১৩৬ লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামলেও বিপক্ষ দলের তরফে ভালো পার্টনারশিপ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। দলের সর্বোচ্চ রান তোলেন অমিত বৈশ্য, তার স্কোর ৩৪। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তোলেন শান্তনু দাস, তার স্কোর ৩০। বোলিংয়ে দলের সব থেকে ভালো পারফর্মেন্স গৌরীশ মালাকারের৷ তিনি এক ওভারে ৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট পান।
ছোট দুধপাতিল হাই স্কুল সংলগ্ন মাঠে ফাইনাল ম্যাচ এদিন সকাল এগারোটায় শুরু হয়। মুখ্য অতিথি হিসেবে ছিলেন সাংসদ রাজদীপ রায়। তিনি ফিতা কেটে ফাইনাল ম্যাচ উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি ব্যাট হাতে মাঠেও নামেন। প্রায় দুই ওভার ব্যাটিং করেন৷ এতে বেশ কয়েকটি চার ছক্কা হাঁকান। নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে রাজদীপ রায় বলেন, ‘জেলার গ্রামেগঞ্জে খেলার উন্নতির মাধ্যমে সমাজের পরিবেশ সুন্দর করে তোলা সবথেকে সহজ। শিলচর সংলগ্ন এই গ্রামটিতে প্রায় দেড় মাস ধরে টুর্নামেন্ট চালিয়ে আসছেন আয়োজকরা, এটা অত্যন্ত সুন্দর একটি নিদর্শন। রাজদীপ রায় বললেন, আগামীতে সরকারি অনুদানের মাধ্যমে পরিকাঠামোগত দিক উন্নত করতে তারা সচেষ্ট হবেন৷
এরপর খেলা শুরু হয় এবং মাঠের চারপাশ কানায় কানায় দর্শকে ভরে যায়। দুপুর একটায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব, স্থানীয় বিধায়ক কিশোর নাথ, প্রাক্তন বিধায়ক রুমি নাথ সহ এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। সুস্মিতা দেব দুই দলের খেলোয়াড়দের সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘প্রায় দেড় মাস ধরে ৬৪ দল একটি টুর্ণামেন্টে খেলার পর যারা ফাইনালে আসে তারা দুই দলই আসলে বিজয়ী। আমরা শহরাঞ্চলে খেলার পরিবেশ উন্নত করতে অনেকটা সুযোগ পেলেও গ্রামাঞ্চল এখনো পিছিয়ে রয়েছে। আমাদের সময় সরকার এই ব্যাপারে অনেক কাজ করেছে। আমি চাইবো বর্তমান জনপ্রতিনিধিরাও সাধারণ মানুষকে আরো বেশি করে খেলার সুযোগ করে দিন।
কিশোর নাথ বলেন, আমরা বড়খলার বিভিন্ন এলাকায় সরকারি খেলার মাঠ গড়ে তুলতে চাইছি। বিভিন্ন সময় চেষ্টা করলেও খালি জায়গা পাওয়া সম্ভব হয় না। হাতিরছড়া এলাকায় আমরা একটি বিরাট ফুটবল গ্রাউন্ড বানাচ্ছি। এটি সম্পন্ন হলে বরাক উপত্যকার গ্রামাঞ্চলে ক্রীড়াক্ষেত্রে নতুন জোয়ার আসবে। রুমি নাথ বলেন, ‘শিলচর শহর থেকে এত কাছাকাছি হওয়ার পরও এলাকায় এখনও ক্রীড়াক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত উন্নতি হয়নি। এধরনের টুর্নামেন্ট আয়োজন হলে আগামীতে প্রশাসন এবং সরকারের নজরে আসবে এলাকাটি। এদিক থেকে আয়োজকদের আমি সাধুবাদ জানাই। আমি স্থানীয় বিধায়ক এবং সরকারের কাছে আবেদন রাখছি আপনারা এলাকার উন্নতির দিকে আরেকটু নজর দিন।
প্রসঙ্গত, এ দিন বিজয়ীর পুরস্কার দেওয়া হয় ৫৫, ৫৫৫ টাকা এবং ট্রফি। রানার্স-আপরা পেয়েছেন ২২, ২২২ টাকা এবং ট্রফি। ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্টকে ট্রফিসহ দুই হাজার টাকা ক্যাশ প্রাইজ দেওয়া হয়েছে।