Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News
নিবেদিতা-র রোহিঙ্গা কিশোরীকে আর মায়ানমারে পাঠানো হবে না, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত
ওয়েটুবরাক, ৭ এপ্রিল : শিলচরের নিবেদিতা নারী সংস্থায় বেড়ে ওঠা রোহিঙ্গা কিশোরীকে আর মায়ানমারে পাঠানো হবে না। তার কান্নাকাটিতে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷ বরং হায়দরাবাদে ঠিকই যদি তার কাকা থাকেন এবং তিনি দায়িত্ব নিতে রাজি হন, তাহলে তাঁর কাছেই রাখা হবে তাকে। কাছাড়ের পুলিশ সুপার রমনদীপ কৌর জানিয়েছেন, তাঁরা বাংলাদেশে তার বাবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছেন। তাঁর কাছ থেকে হায়দরাবাদের ব্যক্তিটি সম্পর্কে জানতে চাইবেন৷ পুলিশ নিশ্চিত হতে চাইছে, হায়দরাবাদে ষোল বছরের কিশোরী নিরাপদেই থাকবে।” কৌর জানান, নইলে আঠারো বছর বয়স হলে সংস্থা থেকে তাকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে।
২০১৯ সালে শিলচরের রংপুরে জাতীয় সড়কের পাশে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল চোদ্দ বছরের এই কিশোরীকে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির নির্দেশে শিলচরের নিবেদিতা নারী সংস্থায় পাঠায়।
তার মা-বাবা বাংলাদেশের কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। সেও সেখানেই ছিল। তার কথায়, একদিন বাবা মালয়েশিয়ার এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। মোবাইলে তারা ‘নিকাহ কবুল’ করে। এর পরই দালালের মাধ্যমে তাকে মালয়েশিয়া পাঠানো হচ্ছিল। সে জানায়, পথে একদিন রাতে তাকে কী খাইয়ে অচেতন করে দেয়। পরদিন যখন জ্ঞান ফেরে, দেখতে পায়, তাকে ঘিরে রেখেছে কয়েকজন পুলিশ এবং বহু পথচলতি জনতা।
নিবেদিতা নারী সংস্থায় পাঠানোর পরই তাকে প্রত্যর্পণের জন্য লেখালেখি শুরু হয়। মায়ানমার সরকার তাকে গ্রহণেও সম্মত হয়। সে অনুসারে গত বছরের ১ এপ্রিল অসম পুলিশ কিশোরীটিকে নিয়ে যায় মণিপুরের মোরে সীমান্তে। কিন্তু মায়ানমার রক্ষীরা গেট খোলেননি। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক ভারত সরকারকে সম্মতিসূচক চিঠি পাঠালেও তাদের কিছুই জানায়নি। বাধ্য হয়ে অসম পুলিশ তাকে নিয়ে ফিরে আসে। সিদ্ধান্ত হয়, আরও এক বছর তাকে হোমেই রাখা হবে। এর মধ্যে মায়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ করবে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।
এক বছর পরে তাকে মায়ানমারে পাঠানো হবে জেনেই কান্নাকাটি শুরু করে সে। নিবেদিতা নারী সংস্থার সচিব দিবা রায় বলেন, “নানা চেষ্টা করে তার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। হায়দরাবাদের কাকার সঙ্গেও কথাবার্তা হয়।” পরে শিশু সুরক্ষা কমিশনের এক প্রতিনিধি শিলচরের নারী সংস্থায় এলে সমস্যাটা বুঝতে পারে। তাঁরাই কেন্দ্রকে জানান, মায়ানমার সরকার রাজি হলেও তাকে সেখানে পাঠানো যায় না। কারণ নিজের দেশে এখন আর তার কেউ থাকেন না। সে বাংলাদেশে যেতে চাইলেও তা সম্ভব নয়। পরে গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কাছাড়ের পুলিশ সুপারের কাছে নির্দেশ আসে, তাকে যেন আর মায়ানমারে পাঠানো না হয়।