Barak UpdatesHappeningsBreaking News

শিলচরে প্রবল শব্দের দাপাদাপি, গভীর রাত পর্যন্ত চলল ভাসান
High decibel sound during high voltage Bijoya Dashami, Immersion continues till late night

৮ অক্টোবর : মা থাকবে কতক্ষণ, মা যাবে বিসর্জন। পুজো, পুজো, পুজো। পুজো শেষ। এ বার বিদায়ের পালা। বাপের ঘর অন্ধকার করে ছেলেমেয়ে নিয়ে উমা ফিরছেন পতিগৃহে। তারপর বছরভর অপেক্ষা। বাঙালি ফিরবে নিজের জীবনে। আর পাঁচটা আম দিনের মত সুখে দুঃখে কাটবে সময়। তার আগে অবশ্য বিজয়ার বিদায়বেলায় অন্য এক খুশির আনন্দে মেতে ওঠে বাঙালি। ঘাটে ঘাটে চলে ভাসান। নাচের তালে হইহই করে সবাই চেঁচিয়ে ওঠেন ‘আসছে বছর আবার হবে।’

বিজয়া দশমীর সকালে সিঁদুর খেলার পরই শুরু বিসর্জনের তোড়জোড়। বাড়ির পুজোগুলোর বিসর্জন হয়ে যায় দুপুরের মধ্যেই। পরিবারের লোকজন আসেন বিসর্জনে। এখানে কোথাও আড়ম্ভরতা চোখে পড়ে না। মাইকের দাপাদাপিও নেই। অনেক পরিবার নিজস্ব কিছু রীতি মেনে প্রতিমা বিসর্জন করেন। বিকেল যত গড়াতে থাকে ততই শিলচর শহরের সদরঘাটে জমতে থাকে বারোয়ারি পুজোর ভিড়। এক এক করে লরি আসতে থাকে ঘাটে। সুশৃঙ্খলভাবে চলে বিসর্জন। বিকেল থেকে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে চলে একের পর এক ভাসান।

এদিকে রাত যত বাড়ে ততই বাড়তে থাকে বারোয়ারির ভিড়। লরির লম্বা লাইন পড়ে যায় রাস্তায়। শিলচর শহরে প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া রুট অনুযায়ী পুজো কমিটিকে চলতে হয়। ফলে শহরের যে প্রান্ত থেকেই প্রতিমা আসুক না কেন, সারিবদ্ধভাবে মূল লাইনে গিয়ে পড়তে হবে। একটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, রাত ১টা নাগাদ ১৯০টির মতো প্রতিমা নিরিঞ্জন করা হয়েছে। রাস্তায় মূর্তির সারি তখনও সেন্ট্রাল রোডে। পুরসভারই এক কর্তা জানালেন, সবগুলো প্রতিমা বিসর্জন শেষ হতে ভোর হয়ে যাবে।

তবে এই সময়টা যে কীভাবে কেটে যায় বোঝাই যায় না। রাস্তার দুপাশে মানুষের ঢল। ভাসান দেখার ভিড়। আলো, হৈচৈ। একটা অন্য পরিবেশ। আর শব্দের কথা তো বলে লাভ নেই। পুজোর আগে দফায় দফায় বৈঠক করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কত নিয়মই না বলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দশমীর রাতে সব নিয়ম কর্পূরের মতোই উবে গেল। রাত দশটা নাগাদ প্রেমতলা পয়েন্টে কানফাটানো একটি সাউন্ড সিস্টেমের সামনে একদল পুলিশকে দেখে সত্যিই খুব অসহায় মনে হয়েছে। কারোর কিছু করার নেই। জেলাশাসকের কড়া নির্দেশও এখানে কতটা যে অসার তা ফের প্রমাণিত হল। এই ছবি বিসর্জনঘাটেও।

বিজয়া মানেই প্রণাম, বিজয়া মানেই আশীর্বাদ, বিজয়া মানেই মিষ্টি মুখ, বিজয়া মানেই কোলাকুলি। বাঙালি যতই বদলে যাওয়া বিশ্বের সঙ্গে পা মেলাক না কেন, এই রীতিগুলো তাদের আজও নাড়া দেয়। আনন্দ দেয়। ভাল লাগে। আসলে এটা একটা আবেগ, নস্টালজিয়া। নইলে ইংল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকায় বসেও বাঙালি চুটিয়ে পদ্ম ফুল সাজিয়ে, বিশুদ্ধ মন্ত্রোচ্চারণে দুর্গাপুজো করে! আর সবশেষে মণ্ডপে গিয়ে পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণে মাথায় শান্তির জল নিয়ে শেষ হয় দুর্গোতসবের। আর সঙ্গে আগামী বছরের অধীর অপেক্ষা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker