Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsBreaking News
কলকাতায় মুক্তি পেলো শিলচরের মেয়ে দীক্ষিতার প্রেমের ছবি ‘প্রমিস’
ওয়ে টু বরাক প্রতিবেদন : এমনই এক গল্প। যেখানে একদিকে রয়েছে বাবা-মেয়ের সম্পর্ক, আবার অন্যদিকে লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপের কথা। জয়িতা দীর্ঘদিন ধরে তার প্রেমিক নীলের সঙ্গে লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপে রয়েছেন। ভৌগোলিক দূরত্বই তাদের সম্পর্কের মধ্যে প্রধান বাধা, আর এতে একজন অন্যজনকে একেবারেই সময় দিতে পারে না। এভাবে ক্রমশ আলগা হতে থাকে সম্পর্কের বাঁধন।
এই জটিলতার মধ্যে জয়িতা চলে আসে তার বাবার কাছে। মাকে হারানোর পর এখন জয়িতার কাছে তার বাবাই প্রধান ভরসার স্থল। বাবাকে সব কথা খুলে বলে জয়িতা। সম্পর্কের এই টানাপোড়েন থেকে মেয়েকে কিছুটা রিলাক্স এনে দিতে একটি গল্পের অবতারণা করেন বাবা উদয়। আর সেই গল্পই জয়িতার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তাহলে জয়িতা-নীলের সম্পর্ক শেষমেশ কোন খাতে বয়ে চলে ? সেটা জানার জন্য দেখতে হবে পুরো ছবিটা। দেখতে হবে বাংলা ছবি ‘প্রমিস’।
কলকাতার সেরা অভিনেতাদের সঙ্গে এই ছবিতে রয়েছেন শিলচরের মেয়েরা। পরিচালনা থেকে অভিনয়, সবেতেই বিশেষ পারফরম্যান্স দেখিয়ে শিলচরের নাম পৌঁছে দিয়েছেন টলিউডের সিনেমা জগতে। গত ২৭ জুলাই কলকাতার সাউথ সিটি মলের আইনক্স-এ প্রথম স্ক্রিনিং হয়েছে স্বল্প দৈর্ঘের বাংলা ছবি ‘প্রমিস’-এর। এর পরিচালক শিলচরের মেয়ে দীক্ষিতা দাস। সহ-পরিচালক অস্মিতা দাস। তাদের পরিচয়, শিলচরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রয়াত ক্ষীতিশ চন্দ্র দাসের নাতনি৷ ক্ষীতিশবাবুর ছোট ছেলে সৌম্যকান্তি দাস ও সুব্রতা দাসের মেয়ে দীক্ষিতা ও অস্মিতা।
এই ছবিতে জয়িতার বাবার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বিখ্যাত অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী। জয়িতার ভূমিকায় রয়েছেন সৌম্যকান্তি দাসের দ্বিতীয় মেয়ে শিলচরের উদিতা দাস ও পরিচালক দীক্ষিতার স্বামী বিপ্লব কেশরী মহান্তি। আবার ছবির এক্সিকিউটিভ প্রডিউসারও শিলচরেরই দেবশ্রী দে। ফলে প্রমিস-এর সঙ্গে এক গাঁটছড়া ইতিমধ্যেই তৈরি হয়ে গেছে শহর শিলচরের। দীক্ষিতা, উদিতা, অস্মিতা– তিন বোনের মেয়েবেলা কেটেছে এই শহরেই। এরা তিনজনই মুক্তশ্রী হাইস্কুলের ছাত্রী।
দীক্ষিতা বাংলা ছবির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করেছেন ২০১৬ সালে। কস্টিউম ডিজাইনার, চিফ অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, ফিল্ম প্রমোশন সুপারভাইজার, ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার ইত্যাদি বিভিন্ন ভূমিকায় তাঁকে দেখা গেছে। এর পাশাপাশি তিনি একাধিক অ্যানিমেশন প্রজেক্টেও কাজ করেছেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ব্যাঙ্গালোরের আইসিএটি কলেজ থেকে কমিউনিকেশন ডিজাইনে স্নাতক হয়েছেন। ক্যারিয়ারে তাঁর হাতেখড়ি সুদেষ্ণা রায় ও অভিজিত গুহের ছবি ‘সেই মেয়েটা’য় সহকারী হিসেবে কাজ করে।
এছাড়া তিনি বেশ কয়েকটি টেলিভিশন প্রজেক্ট, ওয়েব সিরিজ ও ছায়াছবিতে কাজ করেছেন। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুজন নীল মুখোপাধ্যায়, লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো ডিরেক্টরদেরও তিনি সহায়তা করেছেন। এভাবে ছবি পরিচালনায় নিজের ভিত্তিটাকে আগেই তৈরি করেছিলেন দীক্ষিতা।
গত ২৭ জুলাই কলকাতার সাউথ সিটি মলের আইনক্সে ছবিটির প্রথম স্ক্রিনিং-এর সময়ও বাংলা ছায়াছবির জগতের নামি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সুদেষ্ণা রায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, বরুন চন্দ, শ্রীলেখা মিত্র, সুদীপ্তা চক্রবর্তী প্রমুখ।
এ দিন অনুষ্ঠানে নিজের মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে সব্যসাচী বলেছেন, ‘যারা এই ছবিটি তৈরি করেছেন, তাঁরা অনেক ভাল একটা কাজ করেছেন। তবে এটি তাদের প্রথম ছবি। আমি আশা করি, তাদের আগামী ছবি আরও ভাল হবে।’ সুদেষ্ণা রায় বললেন, ‘দীক্ষিতা এর আগেও আমাদের সঙ্গে কাজ করেছে। এ বার সে অসম্ভব একটি নিটোল ছবি তৈরি করেছে। উদিতা, অস্মিতা, বিপ্লব, সবাই তাঁর পরিচিত বৃত্তের। কিন্তু সবাই যেভাবে অভিনয় করেছে, যেভাবে গোটা বিষয়টিকে একসূত্রে গেঁথেছে, তা সত্যিই অনবদ্য।’
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে শুরু হয় প্রমিসের শুটিং। তবে মধ্যে কিছুদিন শুটিং-এর কাজ বন্ধ ছিল। ২০১৯ সালে তা শেষ হয়। মূল ছবির শুটিং হয় কলকাতায়। গানের শুটিং হয়েছে মেঘালয়ে। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে অভিলাশ মহান্তি। গত ভ্যালেন্টাইন দিবসে ছবিটি মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোভিডের কারণে পিছিয়ে যায়। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তা ২৭ জুলাই মুক্তি পায়।