CultureBreaking News
বিদ্যার দেবীর আরাধনার সঙ্গে শিক্ষাব্রতীদের সংবর্ধনা দক্ষিণ বিলপারেEducationists felicitated during Saraswati Puja at Dakhhin Bilpar
১১ ফেব্রুয়ারি : শুধুমাত্র পুজোর মধ্যেই আয়োজন সীমাবদ্ধ না রেখে সমাজের প্রতি নিজেদের দায়িত্ব ও কর্তব্যের জায়গাটাকে সবার সামনে মেলে ধরলেন মহিলারা। স্কুলের পুজো নয়, পাড়ার ক্লাবও নয়। সরস্বতী পুজো আয়োজনের জন্য নতুন করে কমিটি গঠন করে এর মাধ্যমে সম্মান জানালেন কয়েকজনকে শিক্ষাব্রতীকে। সাধারণভাবে কোনও অনুষ্ঠানে গুণিজন সংবর্ধনার বিষয়টি নতুন নয়, কিন্তু সরস্বতী পুজো আয়োজনের পাশাপাশি এমন উদোগ সম্ভবত শিলচরে প্রথম।
এ দিন দক্ষিণ বিলপার সরস্বতী পূজা কমিটি চারজন ব্যক্তিত্বকে সংবর্ধনা জানায়। এঁরা হলেন, পাবলিক হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক পূর্ণেন্দু ভট্টাচার্য, নেতাজি বিদ্যাভবনের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা রেখা দেব, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়ন্ত দেবরায় এবং রাধামাধব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. যশবন্ত রায়। সম্মান গ্রহণ করে প্রত্যেকেই আপ্লুত হয়ে মহিলাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
এ দিন সংবর্ধনার উত্তরে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আমন্ত্রিত শিক্ষকরা বলেন, বিভিন্ন সময়ে বহু অনুষ্ঠানে তাঁরা সংবর্ধিত হয়েছেন। কিন্তু সরস্বতী পুজোর দিনে শিক্ষা জগতের কয়েকজনকে সংবর্ধনা পর্ব এই প্রথম তাঁরা দেখেছেন। যে ভাবনা নিয়ে মহিলারা এই পুজো কমিটি গড়েছেন, তাও আগামীতে ফলপ্রসূ হয়ে উঠুক বলে এ দিন তাঁরা উল্লেখ করেন।
সংবর্ধিতরা আবেগপ্রবণ হয়ে বলেছেন, সংস্কৃতির শহর শিলচরে বহু সংস্থাই বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। কিন্তু সরস্বতীর আরাধনার সঙ্গে একই দিনে বাস্তবের সমাহার ঘটিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মান জানানোর এই ভাবনা এর আগে কেউ করেননি। এই চিন্তাধারাকে প্রকৃতঅর্থে বিদ্যার দেবীর বন্দনা বলে তাঁরা উল্লেখ করেন। এ দিন এই শিক্ষাব্রতীদের উত্তরীয় ও পুষ্পস্তবক দিয়ে সম্মান জানানো হয়।
শিক্ষকদের সংবর্ধনা জানানোর পাশাপাশি এ দিন শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলোর আয়োজন করা হয়। সকালে হয়েছে চকোলেট দৌড়, এক মিনিট শো ইত্যাদি। বিকেলে শিশুদের মধ্যে প্রতিভা প্রদর্শনের এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া পাড়ার মহিলাদের মধ্যে রাতে মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবশেষে ছিল বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী পর্ব।
এ দিন ওয়ে টু বরাক প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পুজো কমিটির সভাপতি রেখা বণিক বলেন, পাবলিক স্কুল রোডে প্রথমবার পুজো, খেলাধুলো ও গুণিজন সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন তাঁরা। আসলে আধুনিকতার মোড়কে প্রায় হারিয়ে যাওয়া বাঙালির কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গে নতুন প্রজন্মকে পরিচিত করাতেই এ ধরনের অনুষ্ঠান তাঁরা হাতে নিয়েছেন।
কোষাধ্যক্ষ প্রিয়াঙ্কা সাহা বলেছেন, প্রথমবার আয়োজন বলে খুব বড় পরিসরে সবকিছু করা সম্ভব হয়নি। আগামীতে আরও বৃহত্তর আঙ্গিকে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। সহ-সভাপতি মৌমিতা গুপ্ত বলেছেন, এলাকার সবার কাছ থেকেই তাঁরা ভাল সাড়া পেয়েছেন।
মহিলাদের উদ্যোগ হলেও পুরুষরা সমানভাবে এগিয়ে এসেছেন। তবে আগামী বছর এমন অনুষ্ঠান আয়োজনে কমিটির প্রত্যেক সদস্য যে প্রত্যয়ী, তাও বোঝা গিয়েছে এদিন তাঁদের কথায়।