AnalyticsBreaking NewsFeature Story

অনলাইন ক্লাশের সঙ্গে দরকার যোগাভ্যাসও, লিখেছেন শতাক্ষী ভট্টাচার্য

শতাক্ষী ভট্টাচার্য

অনলাইন ক্লাস এখন সব ছাত্রছাত্রীকেই করতে হচ্ছে। প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষারত পড়ুয়া প্রত্যেকেরই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা চলছে এই পথে।সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা ভিডিও মিট-এর মাধ্যমে পাঠ দিচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। করোনাকালের দাবি মেনে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার এটাই আজকের দিনের উত্তম পন্থা। সবকিছু বিবেচনা করে সরকার ও বিভাগ করোনাপর্বে ই-ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

একে এখন নিঃসন্দেহে বলতে হয়, ‘নিড অব দ্য আওয়ার’। ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার বানিয়ে আমরা শিক্ষাকে নতুনভাবে আপন করে নিচ্ছি। আপন করতে বলছি ছাত্রছাত্রীকেও। যে যার মতো করে মোবাইল, ল্যাপটপ, ট্যাব এগুলো ব্যবহার করে নিজেদের ই-ক্লাস বজায় রাখছে পড়ুয়ারা। প্রাথমিক স্তরের ছোট্ট সোনারাও খুব মনোযোগ দিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বেশ মজাও পাচ্ছে তারা।

তবে, অভিভাবকের কাছ থেকে অনেক সময় ক্লাসের প্রতি তাদের আগ্রহের কথা শোনা যায়। আবার শোনা যায় তাদের মধ্যে দেখা দেওয়া ক্লান্তির ছাপের কথাও। উচ্চশিক্ষায় তো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার আজকের দিনে অত্যাবশ্যক বললে ভুল হবে না।কিন্তু প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের তো আমরা সবসময় মোবাইল,

ল্যাপটপ, ট্যাব এগুলো থেকে দূরে থাকার কথা বলে আসছি। তার কারণ, আমরা যেটা সাধারণভাবে বুঝি, সবকিছুরই সঠিক সময় থাকে। সেইমতো মোবাইল, ল্যাপটপ দিয়ে পড়াশোনার এখনও ওদের সময় আসেনি। ঠিক এই যুক্তিটাই আমরা মানি। বাকি তো বিজ্ঞানসম্মতভাবে মোবাইল, টেলিভিশন, কম্পিউটার এসবের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত হয়ে শারীরিক ও মানসিক দুই দিকেই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাচ্চাদের বেলায় একটু বেশি।

এখন কথা হচ্ছে, সময়ের দাবি মেনে বাচ্চাদের হাতে সময়ের প্রয়োজন বলে আমরা মোবাইল, ল্যাপটপ তুলে দিয়েছি। পুরো নেট দুনিয়ায় তাদের বিচরণ করাচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সময়ের দাবি মেনে আমাদের শিশুরা কি সেই অভ্যেস এত সহজে বদলাতে পারবে? পাশাপাশি হঠাৎ করে এত অনলাইন ক্লাসের চাপ পড়ুয়াদের কি সঠিক অর্থে মনোযোগী রেখেছে? নাকি শুধু প্রতীকী পড়াশোনা করছে তারা? এমন বহু প্রশ্ন উঠতেই পারে। অফ থেকে অনলাইন ও অন থেকে অফলাইন এই ধারাবাহিকতাকে ঠিক মানিয়ে নিতে নিজেদের কীভাবে পড়ুয়ারা প্রস্তুত রাখতে পারে, আমার মনে হয় এখানেই আসল ‘গোল’।

আর এই গোলে পৌঁছাতে গেলে জরুরি নিয়মিত যোগ অনুশীলন। কারণ, শৈশব-কৈশোরের দৌড়ঝাঁপও তো এই করোনাকাল রুখে দিয়েছে। কতদিন তা বলা মুশকিল। তাই নিয়মিত কিছু খালিহাতের ব্যায়াম, আসন, সহজ প্রাণায়াম ও প্রাথমিক স্তরের ধ্যান, ওঁমকার চ্যান্টিং অভ্যাস পড়ুয়াদের স্বতঃস্ফূর্ত রাখতে পারে। তাদের সবরকমের চাপ মুক্ত করতে পারে। সময়ে সবকিছুকে মানিয়ে নিতে অভ্যস্ত করে তুলতে পারে। তাই অনলাইন ক্লাসের পাশাপাশি বয়স অনুযায়ী যোগ প্রক্রিয়া অনুশীলনের প্রয়োজন রয়েছে পড়ুয়াদের।এক্ষেত্রে অভিবাবকরা উপযুক্ত যোগ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে নিজেদের ছেলেমেয়ের জন্য জরুরি পরামর্শ নিতে পারেন। সেসঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষও যোগ প্রশিক্ষকের কাছ থেকে পরার্মশ নিয়ে নিজেদের ক্লাস ফরম্যাটে তা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। একবাক্যে বললে যে কোনোভাবেই হোক অনলাইন পড়াশোনার সঙ্গে যোগাভ্যাস সম্পর্কে পড়ুয়াদের সচেতন করা জরুরি। প্রতিদিন কুড়ি থেকে তিরিশ মিনিট যোগঅনুশীলন ও চ্যান্টিং ২৪ ঘন্টার জন্য ছাত্রছাত্রীকে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। সমাজে করোনার কুপ্রভাবকে দূরে সরিয়ে এই অভ্যাস সহায়ক হবে তাদের সর্বাঙ্গীন বিকাশেও।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker