AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/২৭ঃ ২০১৫-র বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা শাস্তি ছাড়াই ভারতে থাকতে পারেন !Citizenship/27: As per 2015 Notification, immigrants from Bangladesh can stay in India without any punishment
(যৌথ সংসদীয় কমিটির অনুমোদন লাভের পর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ গত ৭ জানুয়ারি লোকসভায় পেশ হয়। ধ্বনিভোটে পাশও হয়ে গিয়েছে এটি। এ বার রাজ্যসভায় ওঠার কথা ছিল। শেষপর্যন্ত তা আনাই হয়নি। তবে সংসদে সুযোগ না থাকলেও বাইরে এ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকবে। এই প্রেক্ষিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি যে ৪৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে, ওয়েটুবরাক পুরো রিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে চলেছে। আজ এর ২৭-তম কিস্তি।)
১২ মার্চঃ ২.৩৪ প্রস্তাবিত সংশোধনী সংবিধানের ১৪ ও ২৫ নং অনুচ্ছেদকে ঠিকই লঙ্ঘন করে কিনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছেও তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, আইন ও বিচার মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলে দেখা গিয়েছে, প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সংবিধানের ১৪ ও ২৫ নং অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন হয় না।
২.৩৫ কোনও আইনি বা সাংবিধানিক চ্যালেঞ্জ যেন না হয়, সে কথা খেয়াল রেখে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামত নেওয়া হয়েছে কিনা, তাও জানতে চায় কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জবাব ছিল, বিদেশ মন্ত্রক, আইন ও বিচার মন্ত্রক (আইন বিষয়ক ও পরিষদীয় বিভাগ), প্রবাসী ভারতীয় সম্পর্কীয় মন্ত্রক, ক্যাবিনেট সচিবালয় (র) এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর মতামত পাওয়া গিয়েছে। তারা সবাই ক্যাবিনেট নোটটিতে সায় দিয়েছে।
২.৩৬ এ সম্পর্কে পরিষদীয় বিভাগের এক প্রতিনিধি জানান, ১৪ নং অনুচ্ছেদের কথা বললে বলতে হয়, এটি আসলে অনু্চ্ছেদ ৫, অনুচ্ছেদ ১১ ও অনুচ্ছেদ ১৪। কারণ ৫ নং অনু্চ্ছেদে নাগরিকত্বের কথা সংবিধান তৈরির সময়েই বলা হয়েছে। তাতে রয়েছে, কোনও ব্যক্তি নিজে বা তার মা-বাবা যদি যদি ভারতে জন্মায় বা সংবিধান কার্যকর হওয়ার আগে থেকে ভারতে বসবাস করেন, তবে তিনি সংবিধান মতে ভারতীয়। অনুচ্ছেদ ১১-য় নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ক্ষমতা সংসদকে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকত্ব কাদের দেওয়া হবে, তা সংসদেই এ সংক্রান্ত আইন তৈরি হবে। নাগরিকত্ব অধিকার হিসেবে প্রদান করা হয় না। এটা কারও মৌলিক অধিকার নয়। এটি জাতি বা রাষ্ট্র তার সংবিধানের ভিত্তিতে বা সংবিধানের ক্ষমতাবলে তৈরি আইনের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।
পরিষদীয় বিভাগ স্পষ্ট জানায়, সাংবিধানিক বৈধতা ও আইনি জায়গায় টিঁকেছে বলেই একে বিলের রূপ দেওয়া হয়েছে।
২.৩৭ বাংলাদেশ যদি প্রস্তাবিত সংশোধনীতে সাড়া না দেয়, তবে এর কী তাতপর্য থাকবে, জানতে চায় যৌথ সংসদীয় কমিটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বক্তব্য, বাংলাদেশ যদি সাড়া না দেয়, তবে বাংলাদেশ থেকে ওই ছয় জনগোষ্ঠীর যারা কোনও ট্র্যাভেল ডকুমেন্ট ছাড়াই ভারতে রয়েছেন, তারা ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ২ নং ধারা অনুসারে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে গণ্য হবেন। তারা ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে ভারত সরকারের ২০১৫ সালের বিজ্ঞপ্তি (জিএসআর ৬৮৫(ই) ও জিএসআর ৬৮৬ (ই) অনুসারে কোনও ধরনের শাস্তি ছাড়া ভারতে থাকতে পারবেন। কারণ ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১৯৫০ সালের পাসপোর্ট (এনট্রি ইনটু ইন্ডিয়া) রুলস এবং ১৯৪৮ সালের ফরেনার্স অর্ডার সংশোধন করা হয়েছে।
২.৩৮ বাংলাদেশের সঙ্গে বর্তমানে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, এই অবস্থায় সে দেশের ধর্মীয় নির্যাতনের কথা বলা কি ঠিক হবে, এই প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, বাংলাদেশ সরকার তাদের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষের সুরক্ষা এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু অতীতে বাংলাদেশে এমন বহু হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, যা সংখ্যালঘুদের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে।