AnalyticsBreaking News
নাগরিকত্ব/২৩ঃ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া যায় না Citizenship/23: Illegal migrants cannot be given the status of refuges
(যৌথ সংসদীয় কমিটির অনুমোদন লাভের পর নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল ২০১৬ গত ৭ জানুয়ারি লোকসভায় পেশ হয়। ধ্বনিভোটে পাশও হয়ে গিয়েছে এটি। এ বার রাজ্যসভায় ওঠার কথা ছিল। শেষপর্যন্ত তা আনাই হয়নি। তবে সংসদে সুযোগ না থাকলেও বাইরে এ নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকবে। এই প্রেক্ষিতে যৌথ সংসদীয় কমিটি যে ৪৪০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে, ওয়েটুবরাক পুরো রিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে চলেছে। আজ এর ২৩-তম কিস্তি।)
৭ মার্চঃ ২.১৯ তাহলে কি শুধুই ৩১ হাজার ৩১৩জন তাতে উপকৃত হবেন, এই প্রশ্নে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর ডিরেক্টর জানান, হ্যাঁ, এটাই ঠিক। কারণ তাঁরা দাবি জানিয়েছেন, আবেদন করেছেন। আরও অনেকে হয়তো এসেছেন, তারা হয়তো অন্যান্য উপায়ে নাগরিকত্ব পেয়ে গিয়েছেন। তারা পাসপোর্ট, রেশন কার্ডও হয়তো পেয়ে যেতে পারেন। তাদের হাতে থাকা বিভিন্ন নথিপত্রের মাধ্যমে তারা হয়তো ভোটার তালিকায় নাম তুলে নিয়েছেন। ফলে তারা প্রয়োজনীয় কাজকর্মের জন্য ভারতীয় হয়েই গিয়েছেন। কেউ যদি জালিয়াতির সাহায্যে এগুলির কোনওটি আদায় করে থাকে, তবে তা বের করার জন্য ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। এ অবশ্য ভিন্ন ইস্যু। এই বিল শুধু তাদেরই জন্য যারা দাবি করেছেন এবং আবেদন জানিয়েছেন যে, তারা নিজদেশে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে এ দেশে প্রবেশ করেছেন।
২.২০ ডিরেক্টর আরও জানান, যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, আমার হিসেবে, তা খুবই নগণ্য সংখ্যা। তবু আমি মনে করি, মানবিক কারণেই তাদের আবেদন গৃহীত হোক। তারা কয়েক দশক আগে নিজেদের দেশ ত্যাগ করেছেন। তারা এখানে রয়েছেন এবং রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন। এই দেশের নাগরিকরা যে সব সুযোগসুবিধে পাচ্ছেন, সে সব পান না। আবার নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ারও উপায় নেই। এই সব বিবেচনা করেই সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিলটি এনেছে।
২.২১ বিলটি পাশ হয়ে গেলে কি সব আবেদনকারী নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন, নাকি আবার তাদের পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে, এ ব্যাপারেও কমিটি জানতে চেয়েছিল। ডিরেক্টর জানান, বিল পাশ হয়ে গেলেই যে সব আবেদনকারী অনেক বছর ধরে এখানে রয়েছেন, তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর করা হবে। এখানে অবস্থানকালে তাদের ব্যাপারে আপত্তিকর কোনও কিছু আইবি, স্থানীয় পুলিশ, স্থানীয় গোয়েন্দাদের নজরে পড়েছে কিনা। রাষ্ট্রের পক্ষে উদ্বেগের এমন কোনও কাজকর্মে তারা জড়িয়ে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হবে। তাদের আবেদনগুলি বিশেষভাবে পরীক্ষানিরীক্ষা হবে।
২.২২ র-র যুগ্ম সচিব সাক্ষ্যদান কালে জানান, আমাদের শুধু একটাই চিন্তা, যে সব সংস্থা আমাদের প্রতি শত্রুমনোভাবাপন্ন, তারা না পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে নেয় এবং তাদের নিজেদের লোককে ভারতে ঢুকিয়ে দেয়। এ আমাদের কাছে বড় দুশ্চিন্তার।
২.২৩ নাগরিকত্বের সঙ্গে উদ্বাস্তুদের রাজনৈতিক অধিকারের মতো বিশাল তাতপর্যবাহী ব্যাপার জড়িয়ে রয়েছে। তাই তাদের নাগরিকত্ব প্রদানই কি জরুরি, নাকি শুধু শরণার্থী বা অস্থায়ী আবাসিকের মর্যাদা দেওয়া যায়? এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, বৈধ নথি নিয়ে যে সব বিদেশি ভারতে বসবাস করছে, তাদের নাগরিকত্ব দিলে তারা যেমন বিভিন্ন অধিকার ভোগ করবেন, তেমনি রাষ্ট্রের দায়দায়িত্বও পালন করবেন। ১৯৫১ সালের রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের এ সংক্রান্ত প্রোটোকলে ভারত যেহেতু স্বাক্ষর করেনি, তাই তাদের শরণার্থীর মর্যাদা দেওয়া যায় না। আইনসঙ্গত হলে তাদের ভারতের নাগরিকত্বই দেওয়া যেতে পারে।
২.২৪ এই ইস্যুতে পরিষদীয় বিভাগ জানায়, প্রস্তাবিত বিলের মাধ্যমে সরাসরি তাদের নাগরিকত্ব প্রদান সম্ভব নয়। তারা আবেদনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী হলেন মাত্র। নাগরিকত্ব আইনের তৃতীয় অনুচ্ছেদের ৬ নং ধারা অনুসারে তাদের আবেদন গৃহীত হলেই তারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর অভিধামুক্ত হবেন।
২.২৫ অন্য আরেক জিজ্ঞাসায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, এ পর্যন্ত কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশকারীকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি। তবে ২০১৬ সালের নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল আইনে পরিণত হলে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য ৫(১)(এ) ধারায় (রেজিস্ট্রেশন) এবং ৬ ধারায় (ন্যাচারালাইজেশন) আবেদন জানাতে পারবেন। আবেদন জানাতে হবে জেলাশাসকের মাধ্যমে।