Barak Updates
মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ডোনার কার্ড বন্ধ, রক্ত সঙ্কট বাড়বে, শঙ্কায় ফোরামBVVBDF comes out with sharp criticism of prevalent corruption in Blood Bank at SMCH
৪ জুনঃ শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ব্যাপক আর্থিক দুর্নীতি থেকে মুক্ত নয় রিজিয়নাল ব্লাড ব্যাঙ্কও। সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত চলছে। তখনকার সুপারিন্টেন্ডেন্ট সহ বেশ কয়েকজন কর্মী বর্তমানে জেলে রয়েছেন। এই সময়ে ব্লাড ব্যাঙ্ককে দুর্নীতিমুক্ত করার নামে বিভিন্ন পদক্ষেপে রক্তের সঙ্কট তীব্রতর হতে চলেছে। বিশেষ করে রক্তদান আন্দোলন মার খেয়ে যায় কিনা, এ নিয়ে উদ্বেগে বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম।
মঙ্গলবার সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে ফোরামের সম্পাদক আশু পাল জানান, ব্লাড ব্যাঙ্কে দুর্নীতির ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্বেচ্ছা রক্তদান আন্দোলন। সাধারণ মানুষ এক উচ্চতর মানবিক চেতনায় নিঃস্বার্থে রক্তদানের পর যখন দেখতে পাচ্ছেন তার দান করা রক্ত নিয়ে কিছু কিছু মানুষ যথেচ্ছ পয়সা রোজগার করছে, তখন থেকে আর স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরে রক্তদান করতে এগিয়ে আসছেন না।
এর মধ্যে দুর্নীতি মোকাবিলা করার যুক্তিতে ডোনার কার্ডের বিনিময়ে রোগীদের রক্ত দেওয়ার প্রথা একতরফা ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই সার্কুলার জারির দরুন কার্ডের বিনিময়ে রক্ত না পেয়ে মহাসঙ্কটে রোগীরা। এই প্রেক্ষাপটে ডাঃ কুমার কান্তি দাশের সভাপতিত্বে বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি এক জরুরি সভায় মিলিত হয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের দুর্নীতি সংক্রান্ত তদন্ত দ্রুত এবং নিরপেক্ষ ভাবে শেষ করে প্রয়োজনীয় সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিতে দাবি জানিয়েছে। সঙ্গে সিদ্ধান্ত হয়, সাধারণ স্বেচ্ছা রক্তদাতাদের রক্ত পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা না মেটানো পর্যন্ত শিলচর মেডিকেল কলেজ ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের আয়োজন সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম জানায়, সরকারি চিকিৎসা পরিষেবায় দক্ষিণ আসাম, ত্রিপুরা,মিজোরাম এবং মণিপুরের একাংশ এলাকার প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ মানুষের ভরসার স্থল এই হাসপাতাল। তাতে সংঘটিত ব্যাপক দুর্নীতির আরও দ্রুত তদন্তের প্রয়োজন। দরকার প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আদালতে সোপর্দ করা।
আশুবাবু বলেন, ব্লাড ব্যাঙ্কে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন নয়। ২০০২ সালে ফোরাম প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি প্রায় হাজার খানেক রক্তদান শিবির আয়োজন করেছেন তারা। আর তা করতে গিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের দৈনন্দিন কাজের সঙ্গে নিবিড় ভাবে যুক্ত হয়েছে ফোরাম। এরই প্রেক্ষিতে দুর্নীতি রুখতে ঘন ঘন পরিদর্শন (সারপ্রাইজ ভিজিট), ব্লাড ব্যাঙ্কের স্থানে স্থানে সি সি টি ভি ক্যামেরা বসানোর দাবি বছর দশেক আগেই তাঁরা জানিয়েছিলেন।
ফোরামের বক্তব্য, ২৪ ঘন্টা নিরবচ্ছিন্ন জীবন রক্ষাকারী এই সেবা চালু রাখার জন্য প্রয়োজনে আরও চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান, নার্স, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নিয়োগ করা হোক। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই যেন মানুষ এই সেবা থেকে বঞ্চিত না হন, অযথা হয়রানির শিকার না হন। রক্তের অভাবে যেন কোনো রোগীকেই প্রাণ হারাতে না হয়, সেটা সুনিশ্চিত করা শুধু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লক্ষ্য হলেই চলবে না, প্রাথমিক ভাবে সে দায়িত্ব ব্লাড ব্যাঙ্ক-কেই নিতে হবে।
আশুবাবুর কথায়, বরাক ভ্যালি ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স ফোরাম গত ১৭ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে রক্তদান শিবির আয়োজনের মাধ্যমে ব্লাড ব্যাঙ্কের ভাঁড়ারকে মজবুত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে শিলচর মেডিকেল কলেজ ব্লাড ব্যাঙ্কের সঙ্গে স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের আয়োজন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা ছাড়া উপায় নেই। এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে করুণাময় পাল, পরিতোষ দত্ত, সব্যসাচী রুদ্রগুপ্ত সহ অনেক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।