Barak UpdatesHappeningsBreaking News

নাগরিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদেরই ভোট দিতে বলল সিআরপিসিসি

ওয়েটুবরাক, ৮ এপ্রিল : নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি, ( সি আর পি সি সি) আসাম এর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে রাজ্যের ভোটদাতা জনসাধারণকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোট প্রয়োগ করার পূর্বে আবেগ মুক্ত মন নিয়ে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোট প্রদানের আবেদন জানানো হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় জানানো হয় যে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভোটদাতা জনসাধারণকে ভেবে দেখতে হবে যে বিজেপি দল পুনরায় কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে দেশের সংবিধান, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও রাজ্যের সাধারণ মানুষের নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে কি না? গত দশ বছরে দেশভাগের বাস্তবকে উপেক্ষা করে ও মানবাধিকারের নীতিকে পদদলিত করে শাসকশক্তি যেভাবে সীমাহীন পীড়ন করে চলেছে, তাতে এই নির্বাচন কার্যত জনগণের কাছে আত্মরক্ষার শেষ সুযোগে পরিণত হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা আসাম সহ গোটা দেশে ১৯৫১ সালকে ভিত্তিবর্ষ ধরে এন আর সি করাবেন। আসামের জনসাধারণকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোয়াতে বাধ্য করে ২০১৮ সালে যে এন আর সি’র তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল তার মান্যতা প্রদান করেনি বিজেপি সরকার। বরং তারা এন আর সি তালিকায় নাম থাকা ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু মানুষের নথিপত্র পুনরায় যাচাইয়ের দাবি তুলছে। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের ভবিষ্যৎ কী তা সহজেই অনুমেয়।

Rananuj

সংগঠনের পক্ষ থেকে এও বলা হয়, রাজ্যের ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্বহীন করার উগ্র প্রাদেশিকতাবাদী শক্তির অভিসন্ধি বাস্তবায়নে কেন্দ্র ও রাজ্যের বিজেপি সরকার এন আর সি তালিকা পুনরায় যাচাই করতে বদ্ধপরিকর। ফলে কেন্দ্র ও রাজ্যে একই দলের সরকার থাকলে তা করতে অসুবিধা হবে না। এতে পুনরায় সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে পড়বেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ। এন আর সি তালিকায় নাম না থাকা ভারতীয় নাগরিকদের বিজেপি সরকারের কেবিনেট মন্ত্রী অমিত শাহ উইপোকা, ঘুসপেটিয়া বলে বিদ্রুপ করেছিলেন তারপর কি আর তাদের ভোট চাওয়ার অধিকার থাকে? বিজেপি সরকারের আমলে আসামের নিরপরাধ নাগরিকদের নাগরিকত্ব কেড়ে নিয়ে বন্দি করতে গোয়ালপাড়া জেলার মাটিয়াতে তৈরি হয়েছে এশিয়ার সবচেয়ে বড় ডিটেনশন ক্যাম্প। আসামে বিজেপির শাসনকালে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় সম্পূর্ণ নির্দোষ হাইলাকান্দির বুলু শব্দকর, শোণিতপুর জেলার দুলাল পাল ও নলবাড়ির ফালু দাসের মৃত্যুর ঘটনার ভয়াবহতা আজও রাজ্যবাসী ভুলেননি। এছাড়াও রাজ্যের ২৭ লক্ষ নাগরিকের আধার কার্ড আটকে রেখে তাদের নাগরিক অধিকার সংকুচিত করা হয়েছে, সেখানে ১৯ লক্ষ এন আর সি ছুট নাগরিকদের ভবিষ্যত কী হবে তা ভোট দেওয়ার আগে সবার ভাবা প্রয়োজন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের যে ধারা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তা দেশভাগের বলি শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের পরিবর্তে বিদেশি চিহ্নিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ অবস্থায় আসামের নাগরিকদের বিজেপি সরকার যে মানসিক ও আর্থিক চাপের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে সে সম্পর্কে সচেতন হয়ে এবার সবাইকে ভোট দিতে আহ্বান জানানো হয়। যেহেতু লোকসভার নির্বাচনে জাতীয় পরিস্থিতি বিবেচ্য, দেশ জুড়ে বিজেপি সরকারের চরম কুশাসন, বিভাজন নীতির বেপরোয়া প্রয়োগ, ধনকুবেরদের কাছে জাতীয় সম্পদ হস্তান্তর, ভয়াবহ বেকার সমস্যা, সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থাকে সরকারের অনুগামী করে তোলা, নির্বাচনী চাঁদার অপব্যবহার প্রভৃতির যোগ্য জবাব ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সময়ে মনে রাখতে সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। রাজ্যের ভাষিক ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু নাগরিকদের নাগরিকত্ব রক্ষার আন্দোলন সহ গণতান্ত্রিক, ধর্ম নিরপেক্ষতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদেরকে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠানোর আবেদন নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় সমিতি, আসাম এর পক্ষ থেকে করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker