Barak UpdatesHappeningsBreaking News

রাস্তা থেকে তুলে প্রসূতি ও নবজাতককে জীবনজ্যোতিতে পৌঁছে দিল বিএসএফ, অভিভাবকের ভূমিকায় ডা. মণিকা

ওয়েটুবরাক, ২১ জানুয়ারিঃ তখনও মা-মেয়ের নাড়ির সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি। নিজের হাতেই নাভির জায়গাটি চেপে রেখেছিলেন অরুণা সরকার (পরিবর্তিত নাম)। পথচারীরা মোবাইল ক্যামেরায় ব্যস্ত। ওই ভিড় থেকে সদ্যোজাতের কান্না কানে পৌঁছনোয় স্থির থাকতে পারলেন না বিএসএফ কনস্টেবল সাদ্দাম হোসেন। বিভাগীয় চালক রাজেশ কুমারকে বললেন, অ্যাম্বুলেন্স দাঁড় করাতে। দুজনে মিলে ভিড় ঠেলে মা-মেয়েকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে রওয়ানা হলেন শিলচরের জীবনজ্যোতি নার্সিং হোমে।

ডিরেক্টর মণিকা দেবের হাতে তাদের তুলে দিয়ে বললেন, “কিছু লাগলে আমাদের বলবেন, যেটুকু পারি সাহায্য করব।” মণিকা দেব প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ। তিনি সঙ্গে সঙ্গে নাভি সংযোগ কেটে  প্রসবপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করান। কিন্তু অরুণার অসংলগ্ন কথাবার্তার দরুন শিশুটির পিতা সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত হতে পারছেন না। মণিকা দেবী জানান,  বিভিন্ন সূত্রকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা জানতে পেরেছেন, অরুণা শহরের কাবিউড়ায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন। পরিচারিকার কাজ করেন। ওই বাড়িতে খবর করে খোঁজ মিললেও তার স্বামী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অনেকদিন ধরে তাদের মধ্যে সম্পর্ক নেই।  তিনি নবজাতকের পিতা নন জানিয়ে তার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অরুণার ভাইয়ের সন্ধান বার করলেও তিনিও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে রাজি নন বলে জানিয়ে দেন। ফলে মণিকাদেবীরা বাধ্য হয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হচ্ছেন।

মা-মেয়ে বর্তমানে শারীরিক ভাবে সুস্থ বলেই জানিয়েছেন ডা. মণিকা। তাদের নিয়ে সমস্যায় পড়লেও তিনি বিএসএফ জওয়ান সাদ্দাম হোসেন ও রাজেশ কুমারের ভূমিকার উচ্চ প্রশংসা করেন। বিএসএফের পক্ষ থেকেও তাদের জওয়ানদের কৃতিত্বে গর্বিত বলে প্রেসবার্তায় জানানো হয়েছে। প্রেসবার্তায় বলা হয়েছে, তাঁরা শুধু সীমান্ত প্রহরাই করেন না, মানবিক ও সামাজিক নানা কাজেও স্বেচ্ছায় অংশ নেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker