Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
ভাষার প্রশ্নে শত্রু এখন ভেতরেও, প্রতিষ্ঠা দিবসে বঙ্গসাহিত্যের আক্ষেপ
শিলচরের অনুষ্ঠানে ৭ ব্যক্তিত্বকে সংবর্ধনা
৮ জানুয়ারি: ১৯৬১-র পর ১৯৭২। অসমে বাংলাভাষার ওপর আক্রমণ বেড়ে চলছিল। আগ্রাসনবাদীদের মোকাবিলায় একটি বৌদ্ধিক সংগঠনের প্রয়োজন বোধ করেন প্রেমেন্দ্রমোহন গোস্বামী, প্রিয়নাথ দেব, সুসিত দত্ত, দেবব্রত দত্ত-রা।১৯৭৭ সালের ৮ জানুয়ারি আত্মপ্রকাশ করে বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন। আজ ৪৪ বছর পেরিয়েও ভাষা-বৈষম্য কাটেনি। কমেনি আগ্রাসী মনোভাবও। তাই নিয়ত বরাক উপত্যকায় চলছে নিয়োগ বঞ্চনা, ১৯ মে-র দিনে পরীক্ষা, উন্নয়নে উদাসীনতা।
বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের ৪৫-তম প্রতিষ্ঠা দিবসে আজ শুক্রবার তীব্র আক্ষেপ প্রকাশ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতমপ্রসাদ দত্ত। তিনি বলেন, সঙ্কট শুধু গাঢ়তরই হয়নি, ভয়াবহতার মাত্রাও বেড়েছে। আগে শুধু বাইরের শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছিল। এখন ভাষার প্রশ্নে ভেতরের শত্রুদেরও মোকাবিলা করতে হচ্ছে।এনআরসি নিয়ে ছেলেখেলা, আসাম চুক্তির ৬ নং ধারা ইত্যাদি বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বঙ্গসাহিত্যের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সভাপতি ড. সৌরীন্দ্রকুমার ভট্টাচার্য, কাছাড় জেলা সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী, সম্পাদক ড. জয়ন্ত দেবরায়, শিলচর শহর আঞ্চলিক সভাপতি সঞ্জীব দেবলস্কর, সহসভাপতি অমিত সিকিদার প্রমুখ।
প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপনের শুরুতে শিলচর বঙ্গভবন প্রাঙ্গণে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন জেলা সভাপতি তৈমুর রাজা চৌধুরী। সবাই মিলে গান ধরেন ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা।’ পরে সভাগৃহে হয় মূল অনুষ্ঠান। বঙ্গসাহিত্যের কাছাড় জেলা সভাপতি ও শিলচর শহর আঞ্চলিক সমিতি যৌথভাবে এর আয়োজন করে। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন সংগঠনের নিজস্ব শিল্পীদল।এ দিন এই অঞ্চলের সাত বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। তাঁরা হলেন উমাশঙ্কর আচার্য, সুমিত্রা দত্ত, কল্যাণ চক্রবর্তী, হরিদাস দত্ত, নিপু শর্মা, শুক্কুর আলি ও সাইদুল হক লস্কর। সুমিত্রা দত্ত অবশ্য শারীরিক কারণে উপস্থিত থাকতে পারেননি। বার্তা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সংবর্ধনার জবাবে নিপু শর্মা বাপী দত্তরায়ের লেখা একটি গান গেয়ে শোনান।অন্যরা সবাই বাংলাভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
একই অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র জয়ন্তী ও বিদ্যাসাগরের জন্মের দুইশো বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অন-লাইন প্রবন্ধ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান করা হয়৷ ওই প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছিল বঙ্গ সাহিত্যের শিলচর শহর আঞ্চলিক সমিতি ও সংগঠন পরিচালিত দূরশিক্ষা কেন্দ্র৷ পুরস্কারজয়ীরা হলেন: বিদ্যাসাগরের ওপর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় প্রথম দীপালি ভট্টাচার্য, দ্বিতীয় উত্তরা সাহা ও তৃতীয় রূপশ্রী নাথ৷ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওপর প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ক-বিভাগে প্রথম আদিত্য দে, দ্বিতীয় দিবায়ন দাস ও তৃতীয় হিমবন্ত ভট্টাচার্য৷ গ-বিভাগে প্রথম সোমাভা বিশ্বাস, দ্বিতীয় ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য ও তৃতীয় দেবমিতা রায়চৌধুরী৷ খ-বিভাগে শুধু অঙ্কিতা পালকেই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে৷