NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
আসাম চুক্তির কোথাও বরাকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখ নেই, বলল বরাক বঙ্গ
December 28, 2020
২৮ ডিসেম্বর : আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের ভাষণে যে সব কথা উচ্চারিত হয়েছে, তা এই উপত্যকার মানুষ কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর ভাষণে ক্ষুব্ধ, মর্মাহত বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনও।
সোমবার বরাক বঙ্গের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত বলেন, আসাম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়ায় বিদেশি বিতাড়ন আন্দোলনের হোতা ও তার পৃষ্ঠপোষকরা দিল্লি- দিসপুরে বিরোধিতা করেছিলেন, এটা ঐতিহাসিক সত্য। আসাম চুক্তির কোথাও বরাকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কথা ছিল না। এই অঞ্চলের মানুষ শিক্ষা সংরক্ষণ সমিতির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আন্দোলন শুরু করেছিলেন ,যা পরে বিভিন্ন সংগঠনের যোগদানে গণ আন্দোলনের রূপ নিয়েছিল । দীর্ঘ টালবাহানার পর যে বিশ্ববিদ্যালয় অবশেষে আত্মপ্রকাশ করেছিল তার বিরোধিতাকারীদের কৃতিত্ব দেওয়া খুবই বেদনাদায়ক।
বিবৃতিতে বরাক বঙ্গের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, বরাক উপত্যকার ভাষিক চরিত্র ও আত্মপরিচয়ের মূলধারাগুলোকে পথভ্রষ্ট করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে যে বহুমাত্রিক চেষ্টা চলছে তাকে হালে আরও বেগবান করে তুলতে নতুনভাবে উদ্যম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বরাক উপত্যকার আঞ্চলিক সরকারি ভাষা বাংলা হওয়া সত্বেও ভাষা আইন বিভিন্নভাবে লংঘন করে চলেছে সরকারি বিভাগগুলো । এমনকি নিযুক্তির ক্ষেত্রেও বাংলাকে উপেক্ষা করে এই ভাষাভাষী মানুষের নিয়োগের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে । কথা দেওয়া হয়েছিল, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর চাকরিতে উপত্যকায় স্থানীয়দের নিযুক্তি দানের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু এই আশ্বাসের কোনও প্রতিফলন দেখেননি এই অঞ্চলের বঞ্চিত কর্মপ্রার্থীরা। বিবৃতিতে খেদ ব্যক্ত করে বলা হয়েছে, সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের বিভিন্ন সংগঠন সরকারি অনুদান পেলেও চলতি আর্থিক বছরে বরাক উপত্যকাকে এক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হয়েছে। এই সব বিষয় নিয়ে সরকারি স্তরে দৃষ্টি আকর্ষণের পরও এখন পর্যন্ত কোনও প্রশাসনিক তৎপরতা নজরে আসেনি।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয় সাম্প্রতিক সমাবর্তন উৎসবের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে প্রচলিত রীতিনীতি লংঘন হয়েছে বলে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে । এভাবে ঐতিহ্য নষ্ট করার ঘটনা মোটেই কাঙ্খিত ছিল না । সমাবর্তন উৎসবের যে বিধিনিয়ম রয়েছে তা অনুসরণ না করায় এই উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে । ইতিমধ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক মান অবনমনের কথা সরকারি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে । কেন এমনটা হচ্ছে, তার উপযুক্ত তদন্ত আবশ্যক হলেও এক্ষেত্রে মোটেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে উপত্যকার মানুষ তা কোনও ভাবেই মেনে নেবেন না বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।