Barak UpdatesHappeningsBreaking News
সড়কপথেই গুয়াহাটি থেকে প্লাজমা এল শিলচরে, দুই কোভিড আক্রান্তের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা
২২ আগস্টঃ দুই কোভিড আক্রান্তকে বাঁচানোর জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিল ন্যাশনাল মেডিকোস অর্গানাইজেশন (এনএমও)। দুদিন আগেই তাঁরা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হেল্পডেস্ক খুলেছে। দুই কোভিড আক্রান্তের পরিবারের পক্ষ থেকে প্লাজমা জোগাড়ের জন্য সেখানেই দফায় দফায় অনুরোধ করা হচ্ছিল। দুজনই প্রবীণ ব্যক্তি, করোনায় সংক্রমিত হয়ে অবস্থা অবনতির দিকে। ডাক্তাররা প্লাজমাথেরাপি করতে চাইছেন। কিন্তু বি-পজিটিভ প্লাজমা ব্লাড ব্যাঙ্কে নেই। ব্যক্তিগতভাবে এবং বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আবেদন জানালেও সাড়া মেলেনি। পরিবারের সদস্যরা অসহায় অবস্থায়৷ শেষে ন্যাশনাল মেডিকোস অর্গানাইজেশন সাংগঠনিক স্তরে কথাবার্তা শুরু করে। তারা শিলচর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁকে অনুরোধ করেন, গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে বি-পজিটিভ প্লাজমার জন্য অনুরোধ জানাতে। অধ্যক্ষ বাবুল বেজবরুয়া অবশ্য দেরি করেননি। চিঠি পেয়ে সাড়া দেন গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। সঙ্গে সঙ্গে দুই ইউনিট প্লাজমা মঞ্জুর করেন।
প্লাজমা তো হল, এ বার আনা কীভাবে। সামাজিক মাধ্যমে এ ব্যাপারে সাহায্যের আবেদন জানান সক্ষমের সম্পাদক মিঠুন রায়। এগিয়ে আসে মাড়োয়ারি যুব মঞ্চ। প্রথমে স্থির হয়েছিল, বিমানে পাঠানো হবে প্লাজমা। গ্রিন করিডরে দ্রুত চলে আসবে গুয়াহাটি প্লাজমা ব্যাঙ্ক থেকে শিলচরের কোভিড ব্লকে। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে এক সার্টিফিকেটে। নন-হ্যাজার্ডাস সার্টিফিকেট ছাড়া রক্ত বা প্লাজমা বহন করতে পারে না কোনও বিমান। মাড়োয়ারি যুব মঞ্চের গুয়াহাটি কর্তারা আশ্বস্ত করেন, তাঁরা যখন একবার জড়িয়েছেন, প্লাজমা তাঁরা শিলচরে পৌঁছে দেবেন। গাড়িভাড়া করে শিলচরে প্লাজমা পাঠান তাঁরা। গুয়াহাটিতে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন এনএমও-র কর্মকর্তা ডা. রক্তিম তামুলি ও ডা. রঞ্জনা ধর।
রাত বারোটায় ওই প্লাজমা নিয়ে শিলচরে পৌঁছান বাণিজ্যিক যানের চালক প্রাঞ্জল দাস। দায়িত্ব নিয়ে এমন মূল্যবান জিনিস নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর জন্য এমএমও-র পক্ষ থেকে প্রাঞ্জলকে গামছা দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। শিলচর মেডিক্যাল কলেজের পক্ষে মিঠুন রায় এবং এনএমও-র পক্ষে ডা. দীপ্তাংশু ভট্টাচার্য প্লাজমা গ্রহণ করে দ্রুত রোগীর চিকিৎসায় লাগানোর ব্যবস্থা করেন।
এরই মধ্যে একজনের প্লাজমাথেরাপি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও এক ইউনিটও আরেক রোগীকে শীঘ্র দেওয়া হবে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা চলছে৷
গুয়াহাটিতে মাড়োয়ারি যুব মঞ্চের পক্ষে মোহিত নাহাটা ও রাহুল আগরওয়াল যাবতীয় দৌড়ঝাঁপ করেন। শিলচরে তৎপর ছিলেন মনীশকুমার কামাথ, প্রমোদ শর্মা, নিশান্ত জৈন, ধনরাজ সুরানা, অজয় আগরওয়াল ও কমল সারদা। এনএমও এবং সক্ষম তাঁদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।