Barak UpdatesIndia & World UpdatesHappeningsAnalyticsBreaking News
২৪ ঘণ্টা নজরবন্দির পর শিলচর ছাড়লেন তৃণমূল মন্ত্রী-সাংসদ
গুয়াহাটির আশা নেই, রাতেই বোঝা গিয়েছিল। তাই আজ সকালে সে যাত্রা বাতিল করে শিলচর বিমানবন্দরে আটক তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের ছয়জন কলকাতার বিমান ধরেন। সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর ও অর্পিতা ঘোষ ফেরেন দিল্লি।
কাল এনআরসি প্রকাশ পরবর্তী অবস্থা পর্যবেক্ষণে শিলচরে এসেছিলেন ৮জনের প্রতিনিধি দল। জেলা প্রশাসন অশান্তির আশঙ্কায় আগেই জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করে। তবু সভার উদ্দেশে বেরোতে চাইলে ভারতীয় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় তৃণমূল নেতাদের সতর্কতামূলক আটক করা হয়। অসম সরকার বিমানবন্দরের লাউঞ্জ ছেড়েই বেরোতে দেয়নি পশ্চিমবঙ্গের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, ৬ সাংসদ ও বিধায়ক মহুয়া মৈত্রকে।
প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত এই নিয়ে তর্ক চলে জনপ্রতিনিধি-সরকারে। আজ সকালে অবশ্য অসম সরকারের পক্ষ থেকে দিল্লি বা কলকাতার একটিকে বেছে নিতে বললে কথা বাড়াননি কেউ। ডিআইজি দেবরাজ উপাধ্যায় ও জেলাশাসক এস লক্ষ্মণনের কথায় সই করে দেন ব্যক্তিগত জামিননামায়।
সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে পশ্চিমবঙ্গের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে বড় দলটি শিলচর ছাড়ে। দুই সাংসদ ওড়েন দুপুর ২টা ২০ মিনিটে। তার পরেই প্রশাসন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।
সকালে শিলচর ছাড়ার আগে মন্ত্রী হাকিম একবার বিমানবন্দরের দোতলায় উঠে অপেক্ষমানদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। সাংবাদিক ছাড়া তখন কেউ ছিলেন না। কাছাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন বলতে কিছু নেই। বৃহস্পতিবার তবু ফুলের তোড়া নিয়ে গুয়াহাটি থেকে হাজির ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক অনুতোষ চৌধুরী, হাইলাকান্দি জেলা সভাপতি সফিক কামাল বরলস্কর । ছিলেন সম্মিলিত ঐক্যমঞ্চের মায়জুর রহমান, পরিমল রায়। বরাক নাগরিক সংসদেরও ২জন উপস্থিত হয়েছিলেন তাঁদের স্বাগত জানাতে। আজ আর কেউ যাননি।
তৃণমূল মন্ত্রী-সাংসদ-বিধায়ককে আটক করার প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সিআরপিসিসি, কোরাস, ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি, নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ, পাইওনিয়ার ক্লাব — আয়োজকদের দু-চারজন কংগ্রেস সমর্থক। বাকিরা বামপন্থী। জেলা প্রশাসনের অনুরোধে সেই সভা স্থগিত রাখা হয়।
শিলচরের সাংসদ সুস্মিতা দেব তৃণমূল নেতাদের আটকে রাখাকে প্রশাসনের বাড়াবাড়ি বলে উল্লেখ করেন। মুখ্যসচিবকে চিঠি লিখেও অহেতুক ১৪৪ ধারা জারির প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি অনুরোধ করেন, মমতা ব্যানার্জি যেন তাঁর রাজ্যে নআরসি নথি পরীক্ষার কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। ওদিকে, কংগ্রেসের প্রদেশ শাখা আবার ভিন্ন সুরে কথা বলল। সভাপতি তথা সাংসদ রিপুণ বরা মমতা-বাহিনীকে আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে যথাযথ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিজেপির প্রদেশ মুখপাত্র রাজদীপ রায়ের বক্তব্য, ১৫১ ধারায় মন্ত্রী-সাংসদদের গ্রেফতার নিয়ে হইচই করার কিছু নেই।জেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতি বিবেচনা করেই তা করতে হয়। লালকৃষ্ণ আডবাণীকেও বিহারে ১৫১ ধারায় আটকানো হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।