Barak UpdatesHappeningsBreaking News
করিমগঞ্জে ৫৭০ জনকে আনন্দরাম বরুয়া পুরস্কার
ওয়েটুবরাক, ৮ সেপ্টেম্বর : করিমগঞ্জ জেলায় ৫৭০ জন ছাত্র-ছাত্রীকে ড. আনন্দরাম বরুয়া পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে৷ চলতি বছর সেবা বোর্ড পরিচালিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় যেসব ছাত্র-ছাত্রী ৭৫ শতাংশ অথবা তার উপরে নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদেরই দেওয়া হয়েছে পুরস্কার স্বরূপ শংসাপত্র৷ তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ১৬ হাজার টাকা করে পুরস্কারের অর্থ জমা করা হয়েছে। এই পুরস্কার গ্রহণের জন্য জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারা উপস্থিত হন৷
বুধবার বেলা ২ টায় করিমগঞ্জের জেলা গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জেলাশাসক মৃদুল যাদব বলেন, আনন্দরাম বরুয়া আসামের প্রথম এবং ভারতবর্ষের মধ্যে পঞ্চম ভারতীয় সিভিল সার্ভিস আধিকারিক, আসামের মধ্যে প্রথম অধিবক্তা এবং সংস্কৃত ভাষার এক পন্ডিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ২০০৫ সাল থেকে এই মহান ব্যক্তিত্বের স্মৃতিতে তাঁর নামে এই পুরস্কার প্রকল্প চালু করা হয়েছে৷ এর অধীনে রাজ্য সরকার থেকে এবার ১৬ হাজার টাকা প্রদান করা হচ্ছে। এর সঠিক ব্যবহার করতে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জেলাশাসক ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের সরকারের পক্ষ থেকে প্রদান করা প্রি-মেট্রিক, পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ সহ তফশিলি জাতি-জনজাতি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রদান করা বিভিন্ন স্কলারশিপের সুবিধা গ্রহণ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি জানান, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নীতকরণের জন্য রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে বারো হাজার বিদ্যালয়কে প্রাদেশিকীকৃত এবং দুই লাখ শিক্ষকের চাকরি নিয়মিত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ ২০০৫ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের অধীনে পুরস্কার প্রাপক ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানান এবং আগামী দিনের শিক্ষায় আরও ভাল ফলাফল করতে উৎসাহিত করেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের শুধু কাগজে-কলমে শিক্ষাদান গ্রহণ না করে শিক্ষার মাধ্যমে নিজের মধ্যে সঠিক মূল্যবোধকে গড়ে তুলে শিক্ষিত হতে পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে করিমগঞ্জ জেলা তফশিলি জাতি উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দাস এই পুরস্কারের প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারের ভূয়ষী প্রশংসা করেন। পাশাপাশি দ্বাদশ শ্রেণীতে ভাল ফল করে উত্তীর্ণ ছাত্রীদেরকে স্কুটি প্রদান করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন এবং এ ধরনের পুরস্কারের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা উৎসাহিত হয়ে পড়াশোনায় আরও বেশি মনোনিবেশ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন করিমগঞ্জের বিদ্যালয়ের সমূহের পরিদর্শক অনুপকুমার দাস। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক বিপুল দাস। অনুষ্ঠানে জেলাশাসক ও অন্যান্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে পাঁচ জন ছাত্রছাত্রীকে শংসাপত্র প্রদান করে করিমগঞ্জে এই পুরস্কার প্রদানের সূচনা করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের মূল অনুষ্ঠানও গুয়াহাটি থেকে সরাসরি সম্প্রচার করে জেলা গ্রন্থাগার ভবনে উপস্থিত সবাইকে দেখানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বোতাম টিপে প্রতিটি ছাত্রছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই পুরস্কারের অর্থ সরাসরি প্রদান করেন এবং ভাষণ প্রদান করে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিনন্দন জানান এবং উৎসাহিত করেন। এদিন ছাত্র- ছাত্রীদের পক্ষ থেকে সেন্ট জোসেফ হাই স্কুলের ছাত্র অভ্রজ্যোতি দেবনাথ ভাষণ প্রদান করে তার মনের অনুভূতি সকলের সম্মুখে প্রকাশ করে এবং এই পুরস্কার প্রদানের জন্য রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানায়৷ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আনিপুরের নারায়ণ নাথ উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রঞ্জন ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিছু গরমিল পাওয়া গিয়েছে এবং বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষদের তা জানানো হয়েছে। তাই কোনও ছাত্র-ছাত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে যদি অর্থ সরাসরি জমা না হয় তবে নির্ধারিত বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অথবা বিদ্যালয় সমূহের পরিদর্শক কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।