NE UpdatesBarak UpdatesHappenings
আসাম-মিজোরাম সীমা নির্ধারণ দ্রুত সম্পন্ন করতে কেন্দ্রকে শিলচরের নাগরিকদের স্মারকপত্র
২৫ অক্টোবর: আসাম-মিজোরাম সীমা বিবাদকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া উত্তেজনা প্রশমনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে শিলচরের নাগরিকদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকপত্র কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে৷ কাছাড়ের জেলাশাসক মাধ্যমে প্রেরণ করা স্মারকপত্রে উল্লেখ করা হয়, বরাক উপত্যকার তিন জেলা কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দির জনগণ আসাম-মিজোরাম সীমা বিবাদকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
সম্প্ৰতি সংগঠিত এই ঘটনা উভয় রাজ্যের পারস্পরিক সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটিয়েছে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে বসবাস করা উভয় রাজ্যের মানুষের মধ্যে বর্তমানে চরম অবিশ্বাসের পরিবেশ বিরাজ করছে। কাছাড় জেলার মিজোরাম সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় উভয় রাজ্যের সাধারণ নাগরিকের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন ও অনেক সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। অন্যদিকে মিজোরামের বহু পণ্যবাহী গাড়ি আসাম সীমান্তে আটকে থাকায় মিজোরামের সাধারণ মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকটের আশংকা সৃষ্টি হয়েছিল। স্মারকপত্রে এও উল্লেখ করা হয়েছে যে উগ্র-প্রাদেশিকতাবাদী শক্তি এই পরিস্থিতির সুযোগে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে আসামের এবং মুলত বরাক উপত্যকার তিন জেলার যে সব নাগরিক মিজোরামে কর্মরত রয়েছেন তারাও গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন যাপন করছেন। স্মারকপত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলা হয়, এধরনের ঘটনা নতুন নয়৷ দুটো রাজ্যের সীমানা নির্ধারণের কাজ দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখার ফলে নিরপরাধ মানুষ বারবার আক্রান্ত হচ্ছেন।
স্মারকপত্র প্রদান কালে উপস্থিত অজয় রায় বলেন, একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্রের দুটো রাজ্যের সীমানা নির্ধারণের দায়িত্ব কেন্দ্র সরকারের৷ কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আসাম – মিজোরাম সীমা বিবাদ নিষ্পত্তির কোনও চেষ্টা কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেওয়ার আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। নাগরিকদের পক্ষ থেকে দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, কর্মসংস্হানের প্রয়োজনে উভয় রাজ্যে বসবাস করা প্রত্যেক নাগরিকের জীবন, সম্পত্তি ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে এবং বিবামান স্থান চিহ্নিত করে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দিতে হবে, সীমা বিবাদকে কেন্দ্র করে উভয় রাজ্যের সাধারণ নাগরিকের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে, সীমা বিবাদকে কেন্দ্র করে যাতে কোনও অবস্থায় ভাষিক ও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে । স্মারকপত্রের প্রতিলিপি আসাম ও মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীর নিকট প্রেরণ করা হয়৷
স্মারকপত্রে স্বাক্ষর করেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তথা সিআরপিসিসি’র সভাপতি তপোধীর ভট্টাচার্য, ডঃ গুণাকর দাস, প্রাক্তন শিক্ষক মলয় ভট্টাচার্য, আইনজীবী ইমাদউদ্দিন বুলবুল, জেলা বার সংস্থার সম্পাদক আব্দুল হাই লস্কর, কবি তমোজিৎ সাহা, সমাজকর্মী আশিস চৌধুরী, সরকারি বালক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ দীপঙ্কর চন্দ, অধ্যাপক অজয় রায়, প্রাক্তন অধ্যাপক সৌরিন্দ্রকুমার ভট্টাচার্য, সমাজকর্মী জয়দীপ ভট্টাচার্য, শ্রমিক নেতা নির্মল কুমার দাস, বিশিষ্ট সংগঠক ভবতোষ চক্রবর্তী , প্রাক্তন অধ্যক্ষ পরিতোষ চন্দ্র দত্ত, প্রাক্তন শিক্ষক সুব্রতচন্দ্র নাথ, সমাজকর্মী কমল চক্রবর্তী, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষার বিশিষ্ট কবি শীবেন্দ্র সিনহা, সমাজকর্মী অরবিন্দ রায়, হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি শিহাবউদ্দিন আহমদ, ডা. এম শান্তি কুমার সিংহ, হিল্লোল ভট্টাচার্য প্রমুখ।