NE UpdatesBarak UpdatesHappeningsBreaking News
ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালিরা বাধ্য হয়েই অসমিয়া পড়েন, রঞ্জিৎকে বিডিএফ
২১ ডিসেম্বর: ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বাঙালিরা স্বেচ্ছায় এবং আগ্রহী হয়েই অসমিয়া মাধ্যমে পড়াশোনা করছেন। বলছিলেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রঞ্জিৎকুমার দাস৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বরপেটা রোডের শঙ্করদেব শিশু নিকেতনের তথ্য দিয়ে বলেন, সেই বিদ্যালয়ে ৮০ শতাংশ বাঙালি ছেলেমেয়ে অসমিয়া মাধ্যমে পড়াশোনা করছে। বিডিএফ-এর প্রশ্ন, এছাড়া ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালিদের জন্য আর কী কোনও বিকল্প পথ রাখা হয়েছে? তাদের কি চাইলেই মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের সুযোগ রয়েছে? বহুভাষিক আসামে মাতৃভাষায় পঠনপাঠনের সুযোগ ভাষিক আগ্রাসনবাদীরা অনেক আগে থেকেই বন্ধ করে রেখেছে। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালি অধ্যুষিত এলাকার জনবিন্যাস ও আনুপাতিক হারকে সম্মান দিয়ে কয়টা বাঙলা মাধ্যম স্কুল রয়েছে ?
গত পাঁচ বছরের বিজেপি শাসনেও তো এই অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। বরং বর্তমান সরকার ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় অসমিয়া না পড়লে চাকরির জন্য আবেদনও করা যাবে না বলে ফরমান জারি করেছে। এরকম এক চরম ভাষিক আগ্রাসী ভীতিপ্রদ অবস্থায় ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালিরা অসমিয়া মাধ্যমে পড়তে বাধ্য হচ্ছে। বিডিএফ-এর অভিযোগ, বিজেপিও চায়, রাজ্যের বাঙালি সহ অনসমিয়ারা তাদের ভাষা-সংস্কৃতি ভুলে এই পরোক্ষ অসমিয়াকরণের গহবরে ঢুকে যাক। মুখে মুখে টিকে থাকুক হিন্দু বাঙালি প্রেম। বিডিএফ এর সাফ কথা , অসমে সমন্বয় বলতে কি আসলে অসমিয়া ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি প্রশ্নহীন আনুগত্য ও পূর্ণ সমর্পণ ।
এনিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিডিএফ আরও বলে, বরাকের বাঙালি জানে ষাটের দশক থেকেই ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালি সহ বিভিন্ন অনসমিয়া জনগোষ্ঠী ভাষিক আগ্রাসন ও নিপীড়ণের শিকার। সেই উপত্যকার বাঙালি চাপে পড়েই যে অসমিয়ায় লেখাপড়া করতে বাধ্য সেই সত্য আজ আরও প্রকট। মিথ্যা সমন্বয়ের বাণী দিয়ে প্রদেশ বিজেপি সভাপতি পরোক্ষ আগ্রাসনের সত্যকে চাপা দিতে চেয়েছেন। বিডিএফ এর বক্তব্য , ১৯ মে ১৯৬১ তে ১১ জন সহ ১৫ মাতৃভাষা শহিদের লিগাসি অসমের বাঙালি ও অনসমিয়াদের রয়েছে। উগ্র অসমিয়াকরণের চাপে অসম সেই সত্তর দশকেই ভাগ হয়েছে। বরাকের মানুষ , অসমের বাঙালির হয়ে বিডিএফ বারবার অস্তিত্ব ও অধিকারের স্বার্থে প্রকৃত সত্য উচ্চারণ করে যাবে।
বিডিএফ এর বক্তব্য , রঞ্জিত দাস ও তাঁর অনুগামীরা যদি ভাবেন যে তাঁর এসব কথায় সকলেই একসঙ্গে হাততালি দিয়ে উঠবেন, তাহলে ভুল করবেন৷ নীচ ও কুরুচিকর রাজনৈতিক স্বার্থে ও অন্ধ আনুগত্যের বশে যারা এই ধরনের মন্তব্যে তালি বাজায়, তাদের বরাকের আত্মা চিহ্নিত করে যাচ্ছে।
বিডিএফের সাফ কথা, রঞ্জিতবাবুরা চাপা উগ্র অসমিয়াবাদীব মানসিকতা ত্যাগ না করলে অসম আরও টুকরো হবে। আর সে দায় বর্তাবে রঞ্জিতবাবুদের উগ্র অসমিয়া জাতীয়তাবাদী মানসিকতা, বঞ্চনা, ভাওতা, লাঞ্ছনা, আগ্রাসন ইত্যাদির ওপর।