Feature Story

৫০ বছরের পুজো এ বার, টেক্কা দিতে তৈরি শ্রীপল্লীও


১৩ অক্টোবরঃ সুবর্ণ জয়ন্তী বলে কথা। তাই শ্রীপল্লী দুর্গাপূজা সমিতিতে এ বার ৪০ জনের সম্পাদকমণ্ডলী। সাধারণ সম্পাদক এলাকার পুরসদস্য অসিত (রতন) সরকার। সভাপতি নৃপেন্দ্রকুমার দেব। ১৯৬৯ সালের প্রথম পূজা আয়োজকদের কেউ নেই বললেই চলে। সম্পাদক ছিলেন (প্রয়াত) হারান রায়চৌধুরী। শুরু থেকে চাঁদানীতি ছিল, যে যা দেবেন, তা দিয়েই পুজো করা। ১৯৮১ সালে নীতিবদলের প্রয়োজন দেখা দেয়। সে বার সর্বসাকুল্যে চাঁদা ওঠে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। খুব টেনেটুনে পুজো সম্পন্ন করতে হয়। ২০১২ সালে চাঁদানীতিতে আরেকপ্রস্ত সংস্কার হয়। শুরু হয় বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদা আদায়। সেই সূত্রেই ১৯৮১ সালের খরচের ৪৬৭ গুণ বাজেট ধরে পূজায় নেমেছেন নৃপেন্দ্রবাবু, অসিতবাবুরা। সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের পূজায় এ বারের বাজেট ৩৫ লক্ষ টাকা। প্রতিমা, মণ্ডপ, আলোকে অন্য অনেককে টেক্কা দেবে শ্রীপল্লী। আড়াই লক্ষ টাকায় সাবেকি শাস্ত্রীয় প্রতিমা তৈরি করছেন কাঁথির উত্তম জানা। প্রতিমার মুখ তৈরি কি বাহন বানানো—-কোথাও সাজের সাহায্য নেননি তিনি। একশো শতাংশ হাতে গড়া মূর্তি তৈরি করছেন তিনি ও তাঁর কারিগরেরা। মণ্ডপ বাঁশ-বেতের। বাইরের দিক থেকে তাঁদের চমক দেখানোর সুযোগ কম। তাই মণ্ডপের যাবতীয় সূক্ষ্ম কাজ হচ্ছে ভেতরে। নবদ্বীপ থেকে আগত সঞ্জীব দেবনাথ এই কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অন্য বছর আলোকে বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও এ বার পঞ্চাশের পুজো বলে কথা! তাই শ্রীপল্লীর এ মাথা-ও মাথা মিলিয়ে মোট ৪টি আলোর গেট বসানো হবে। স্থানীয় আলোকশিল্পী বিপুল নাথ ৮০০ মিটার এলাকা আলোয়-আলোয় ভাসিয়ে দেবেন। থাকবে সিসিটিভি, বেসরকারি, বিশাল স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী।

কথায় বলে, ভোরেই বোঝা যায়, দিনটা কেমন যাবে। শ্রীপল্লী পূজা কমিটিও মহালয়াতেই দেখিয়ে দিয়েছে, পুজোর দিনগুলির জন্য ভালোভাবেই তৈরি তাঁরা। পঞ্চমীতে মণ্ডপ ও আলোকসজ্জার উদ্বোধন। সে জন্য রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহারাজদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় হবে আগমনী অনুষ্ঠান। ২০জন প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আগমনী উপলক্ষে তাদের সঙ্গে সময় কাটাবেন ক্লাবের কর্মকর্তা, সদস্যরা। মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমীতে মহাপ্রসাদের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পূজার পরে হবে চারদিনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড। এ নিয়েও চিন্তাভাবনা করে চলেছেন কর্মকর্তা, কলাকুশলীরা। সব্যসাচী পুরকায়স্থ, শিপ্রা পুরকায়স্থ জানান, ২৬ থেকে ২৯ অক্টোবর নানা অনুষ্ঠান হবে। ওইসব অনুষ্ঠানেই কৃতী ছাত্রদের সংবর্ধনা হবে। প্রাক্তন পুজো আয়োজকদেরও সম্মান জানানো হবে। প্রতিদিন নাটক হবে। পাড়ার পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক নাটকের পাশাপাশি নাটক প্রদর্শন করবে দশরূপকও।

কার্যবাহী সভাপতি বিজন চক্রবর্তী, কোষাধ্যক্ষ শৈলেন্দ্র নাথের বক্তব্য, শুধু পুজো নয়, দশমীর শোভাযাত্রাও এলাকার সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। তারা প্রতি বছর দশমী তিথিতেই প্রতিমা বিসর্জনে বের হন। এ বারও এর ব্যতিক্রম হবে না। তবে শ্রীপল্লী দুর্গাপূজা সমিতি যে ইতিবাচক ব্যতিক্রমে সাক্ষ্য রেখে চলেছে, তারা অনেক বড় পুজো সহজে চ্যালেঞ্জ ঠুকতে পারেন। ১৯৭০ সালে তারা পুজোর জন্য ১০ কাঠা জমি কিনে নিয়েছেন। শুধু পুজো-অর্চনাই নয়, এর অর্ধেকটা আবার দান করে দিয়েছেন শ্রীপল্লী স্কুলকে। পরবর্তী সময়ে আরেক টুকরো জমি কিনে সেখানে পার্ক করা হয়েছে। এমন রেকর্ড এই অঞ্চলে আর কোন কমিটির আছে, এমন কথা বলতেই পারেন সুবিমল চক্রবর্তী, অরূপ দেবরায়, বিজয় দাস, রাজীব চৌধুরী, দেবদত্ত পালচৌধুরী, বিভাবসু দাস-রা।

English text here

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker