Barak UpdatesHappeningsBreaking News
২ বছর ১০ দিন জেল খাটার পর ট্রাইবুনালের রায়, তিনি ভারতীয়
ওয়েটুবরাক, ১৩ অক্টোবরঃ নামের গ্যাঁড়াকলে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছিল তাকে। সেই সুবাদে ২ বছর ১০ দিন ডিটেনশন ক্যাম্পে কাটাতে হয়। গত শনিবার ফরেনার্স ট্রাইবুনাল রায় দিয়েছে, অসমের কাছাড় জেলার উধারবন্দের দুলুবি বিবিই দুলাবজান বিবি ওরফে দুলাবজান বেগম, পুলিশের এই রিপোর্ট পাওয়ার পর তাঁর ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে আর সংশয় নেই।
১৯৯৭ সালে ভোটার তালিকার ব্যাপক সংশোধনীর সময়ে আচমকা দুলুবি বিবির নাম দেখে নির্বাচন শাখার সন্দেহ হয়। মামলার শুনানিতে দুলুবি নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করে যে সব নথি দেন, তার কোনওটি দুলাবজান বিবির, কোনওটি দুলাবজান বেগমের। বাবার নামও এক নথিতে সিরাই মিঞা, আর এক নথিতে সিরাই মিঞা লস্কর। একই ধরনের নামবিভ্রাট ঠাকুর্দার বেলায়ও। একটিতে মজমিল আলি, অন্যটিতে মজমিল আলি লস্কর। সে সব দেখে ফরেনার্স ট্রাইবুনালের সদস্য বিচারক বিকে তালুকদার ২০১৭ সালের ২০ মার্চ তাঁকে বিদেশি বলে ঘোষণা করেন। ২০১8-র ২৮ এপ্রিল পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে শিলচর জেলে পুরে দেয়। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে গৌহাটি হাই কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। করোনার সময়ে তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এ বছরের ২৬ এপ্রিল হাই কোর্ট জানায়, ১৯8৫ সালের ভোটার তালিকার সিরাই মিঁঞা লস্কর ও ১৯৯৩ সালের ভোটার তালিকার সিরাই মিঁঞা একই ব্যক্তি। আবার ১৯৬৫ সালের ভোটার তালিকার মজমিল আলি এবং ১৯8৫ সালের ভোটার তালিকার মজমিল আলি লস্করও একই ব্যক্তি। তাই দুলাবজান বেগম, দুলাবজান বিবি এবং দুলুবি বিবি একই মানুষ কিনা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরকে তা পরীক্ষা করে ট্রাইবুনালে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। পুলিশ রিপোর্টে একই মানুষ বলে উল্লেখ করায় ফরেনার্স ট্রাইবুনালের ওই একই বিচারক এ বার তাঁকে ভারতীয় বলে রায় দেন।
দুলাবজান ওরফে দুলুবি ট্রাইবুনাল চত্বরেই বলতে থাকেন, এখন জেলে থাকার ক্ষতিপূরণ কে দেবে। কী লাঞ্ছনাই সইতে হয়েছে এতটা দিন। তিনি জানান, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে রাঁধুনির চাকরি করতেন, জেল থেকে আসার পর সে কাজ আর ফিরে পাননি। তাঁর আরও প্রশ্ন, কোন কাগজে কী ভাবে নাম লেখা হয়েছে, পড়াশোনা না জানা মানুষ তাঁরা কী করে জানবেন। শিলচরের মানবাধিকার কর্মী কমল চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ বা নির্বাচন শাখা একটু ভাল করে খোঁজ নিলেই বহু মানুষকে অহেতুক শাস্তি ভোগ করতে হয় না।