India & World UpdatesHappeningsBreaking News
২৩ মিলিয়ন ডলারের শৌচাগার, লিখেছেন হিমাদ্রি শেখর দাস
২ অক্টোবরঃ সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পেটে কি চাপ অনুভব করেন? প্রকৃতির টানে কি শৌচাগারে ছুটে যান? উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয় তাহলে তো আপনি ভাগ্যবান! শৌচাগারের রুমে বসে পেটে চাপ দিতে দিতেই প্রতিটি মুহূর্তে আপনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে থাকবেন । এ এক আলাদা আরাম, আলাদা অনুভূতি, যাকে পৃথিবীর আর কোনো সুখের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না!
এবার যদি কাউকে পৃথিবীর বাইরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয় (যেখানে ভর শূন্য থাকে), তবে এই সুখ কিন্তু আর থাকবে না। আয়াস করে শৌচাগারে বসে আকাশকুসুম কল্পনা করে মল ত্যাগ করা তার কপালে জুটবে না। সেখানে শৌচাগারের আকার খুবই ছোট হয়। দৈর্ঘ্যে এক মিটার, আর প্রস্থে এক মিটার। কমোডে সিট বেল্ট লাগানো থাকে যাতে মহাকাশচারী শূন্যে ভেসে না যান। ভেতরে ওয়াশ বেসিন বা শাওয়ার থাকে না। মহাকাশচারীর মল ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট পাত্রে সঞ্চিত হয়। পরে সেই বর্জ্য পদার্থ সরিয়ে নেওয়া হয়। সব থেকে মজার ব্যাপার, টয়লেটের কোনও দরজা থাকে না, শুধু একটি পর্দা থাকে। তাই ভেতরের শব্দ বাইরে শোনা যায়।
এতে মহাকাশ স্টেশনের কেউ লজ্জাবোধ করেন না। যেহেতু সর্বক্ষণ ভাসমান অবস্থায় থাকতে হয়, তাই মল ত্যাগের ব্যাপারটাও বেশ কষ্টকর। মহাকাশচারীদের পৃথিবীতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় কিভাবে মহাকাশ স্টেশনে শৌচাগার ব্যবহার করতে হবে। নাসার অবসরপ্রাপ্ত স্টেশন কমান্ডার পেগি হুইটসন দীর্ঘদিন মহাকাশ স্টেশনে সময় কাটিয়েছেন। তিনি একবার বলেছিলেন,”মহাশূন্যে ভেসে থাকতে ভালই লাগে, কিন্তু বাথরুমে যাওয়া বেশ বিরক্তিকর।”
গত ২৯ সেপ্টেম্বর আমেরিকার স্পেস এজেন্সি ‘নাসা’ ২৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করে একটি অত্যাধুনিক শৌচাগার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রেরণ করেছে। ইউনিভার্সাল ওয়েস্ট ম্যানেজ সিস্টেম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে সেই শৌচাগারে। এটি বর্জ্য রিসাইক্লিয়ে খুব সহায়ক হবে। বর্তমান শৌচাগারের চেয়ে নতুন-টির আকার এবং ওজন অনেকটাই কম। সেই স্টেশনে যেহেতু মহাকাশচারীরা ভাসমান অবস্থায় থাকেন, তাই সেই সমস্যা দূর করতে এতে থাকছে ফুট রেস্টার এবং হ্যান্ডল। মহিলাদের জন্য রয়েছে বিশেষ আসন। আর এই আধুনিক শৌচাগার পরিষ্কার করাও নাকি অনেক সহজ হবে। যাক যে সব মহাকাশচারীরা সেখানে থাকবেন, তাদের জন্য অবশ্যই এটা ভাল খবর।