Barak UpdatesHappeningsBreaking News

হিন্দু-মুসলমানের পরিসংখ্যানেই আটকে করিমগঞ্জের ভোটের লড়াই

ওয়েটুবরাক, ২৪ এপ্রিলঃ এক আইনজীবীর কাছে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের বর্তমান হাল হকিকত জানতে চেয়েছিলাম৷ জবাব দিলেন, এখানে ১৪ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোট রয়েছে৷ হিন্দুর চেয়ে মুসলমানদের ২ লক্ষ ভোট বেশি৷ দুইজন মুসলিম প্রার্থী থাকায় কিছু হিন্দু ভোট যিনি টানতে পারবেন, তিনিই জিতবেন। একই প্রশ্নে করিমগঞ্জের এক কলেজ শিক্ষক জানালেন, মুসলমানদের একটা বড় অংশ এখন বিজেপির দিকে ঝুঁকছে৷ গেরুয়াবাহিনীর সভা-সমিতিতে প্রায়ই তাদের দেখা যায়৷ ২৬ এপ্রিল  পর্যন্ত এই প্রবণতা বজায় থাকলে বিজেপি প্রার্থী কৃপানাথ মালাই জিতবেন। স্থানীয় এক সাংবাদিক বন্ধুও এই ভাবেই হিন্দু-মুসলিমের নানা পরিসংখ্যান টেনে ভোটের লড়াই বোঝালেন৷
দক্ষিণ অসমের করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি দুই জেলাকে নিয়ে করিমগঞ্জ লোকসভা আসন ৷ স্বাধীনতার পর থেকেই আসনটি ছিল তফসিলি জাতি সংরক্ষিত। এবার পুনর্বিন্যাস বা ডিলিমিটেশনের মাধ্যমে করিমগঞ্জ সংরক্ষণ মুক্ত হয় ৷ এরপরও বিজেপি তাদের প্রার্থীবদল করেনি ৷ বর্তমান সাংসদ তফশিলি জাতি সম্প্রদায় ভুক্ত কৃপানাথ মালাই ফের মনোনীত হয়েছেন৷ একই   ডিলিমিটেশনে করিমগঞ্জ লোকসভা আসনের দুটি বিধানসভা কেন্দ্র কমিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আগের আট জন বিধায়কের জায়গায় আগামী বিধানসভা নির্বাচনের পর করিমগঞ্জ পাবে ৬ জন বিধায়ক৷ এ সব নিয়ে কি কোনও কথা নেই?
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল যেদিন আইনে পরিণত হয়েছিল সেদিন করিমগঞ্জে ব্যাপক বাজিপটকা ফাটে৷ কিন্তু কিছুদিন আগে যখন এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষিত হল, সেদিন প্রায় নীরবই থাকলেন সবাই৷ গত একমাসের নির্বাচনী প্রচারে কেউ যেমন এ নিয়ে কৃতিত্ব দাবি করছেন না, তেমনি কেউ কৈফিয়তও চাইছেন না৷ এই আইন উদ্বাস্তুদের কতটা সুবিধা দেবে বা আদৌ দেবে কিনা সেই সব এই ভোটে চর্চায় নেই। এমনকি মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগ বা মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি, কিংবা সরকারি নিযুক্তি কতটা হল বা হয়নি, সে সব হারিয়েই গিয়েছে নির্বাচনী প্রচারে৷
কেন এমনটা ? আইনজীবী, অধ্যাপক কি সাংবাদিক সকলেরই এক কথা, রাজনীতিটাই এখন এমন হয়ে গিয়েছে৷ হিন্দুরা চায় হিন্দু প্রতিনিধিত্ব, মুসলমানরা খোঁজে নিজেদের জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি৷ একই জনগোষ্ঠীর একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন বলেই শুধু কাটাকুটির হিসাব কষতে হয়৷ ওই হিসেবেই ইউডিএফের সাহাবুল ইসলাম চৌধুরী কিংবা কংগ্রেসের হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে রাখছেন না তাঁরা৷ তাদের কথায়, শেষ পর্যন্ত এমনও হতে পারে মুসলিম ভোট জোট বেঁধে গিয়েছে৷ তখন যার পক্ষে একচেটিয়া ভোট পড়বে, শেষ পর্যন্ত তিনিই জয়ের হাসি হাসবেন৷ আর তা না হলে মুসলিম ভোটের বিভাজনে পাঁচ বছরের কাজকর্মের কৈফিয়ত ছাড়াই কৃপানাথ ফের লোকসভায় যাবেন৷

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close
Close

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker