Barak UpdatesHappeningsBreaking News
হাইলাকান্দিতে কার্ফু জারি করল প্রশাসন
১০ মে : মোটর বাইকের সিট কাটাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর উন্মত্ত আচরণে কার্ফু জারি করতে বাধ্য হল প্রশাসন। শুক্রবার দুপুরে হাইলাকান্দির মারোয়ারি পট্টি মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয় এ দিনের হট্টগোল।
জুম্মার নামাজে এই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে, দুদিন ধরেই আঁচ করা যাচ্ছিল। সিট কাটার ঘটনা পুলিশকে জানালেও দুষ্কৃতী চিহ্নিত হয়নি। তাতে ক্ষেপে ছিল একদল মানুষ। তারাই বিভিন্ন এলাকা থেকে মারোয়ারি পট্টিতে গিয়ে জুম্মার নামাজ আদায়ের আহ্বান জানান। সোস্যাল মিডিয়ায় তা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু প্রশাসনের তরফে কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে আজ প্রচুর মানুষ নামাজ আদায়ের জন্য ওই মসজিদে জড়ো হন। ভেতরে জায়গা না হওয়ায় রাস্তা আটকেই নামাজ আদায়ের তোড়জোড় চলছিল। এ নিয়ে শুরু হয় হই হট্টগোল, গালিগালাজ। একদল লোক রাস্তা আটকে নামাজ আদায়ে বাধা দেয়। তাতে উভয় পক্ষ প্রকাশ্য সড়কেই উন্মত্ত আচরণ করতে থাকে। পুরান বাজার থেকে তা ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে। হাসপাতাল রোড, ডিএসএ-র সামনে বেশ কিছু দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত প্রচুর যানবাহন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যায় পুলিশ। প্রথমে লাঠি উঁচিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু এতেও মারমুখী জনতাকে শান্ত করতে না পেরে পুলিশ শূন্যে গুলি ছোড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় হাইলাকান্দি প্রশাসন শহরে কার্ফু জারি করতে বাধ্য হয়। শেষ খবরে জানা গেছে, কার্ফু চলার দরুন পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েকজন অল্পবিস্তর জখম হলেও মৃত্যুর আশঙ্কা নেই।
জেলাশাসক কীর্তি জল্লি জানান, বিশেষ অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে কেউ বের হতে পারবেন না। পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবত থাকবে।
জীবন-সম্পত্তি হানির আশঙ্কায় জেলাশাসক বেলা ১টায় কার্ফু জারি করলেও আচমকা এই ধরনের সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষ উতকণ্ঠিত হয়ে ওঠেন। বিশেষ করে, তখন স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা রয়েছে। কোথাও একটু পরেই ছুটি হবে, কোথাও খানিক দেরিতে। তাদের কী করে ঘরে ফেরানো, চিন্তায় পড়ে যান অভিভাবকরা। ফলে সন্তানের মায়ায় কার্ফু উপেক্ষা করেই মা-বাবারা ছোটেন স্কুলের উদ্দেশে। পুলিশ অবশ্য তাদের বাধা দেননি।
এ দিকে, কার্ফুর দরুন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইলাকান্দিগামী বাসও আটকে পড়ে। পরে তাদের এসকর্ট দিয়ে হাইলাকান্দি পৌঁছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য উভয় পক্ষের কাছে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিয়েছেন।