Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
সুরমন্দিরের অনুষ্ঠান সম্পর্কে আমার অনুভূতি, লিখেছেন ইন্দ্রজিৎ দেব
||ইন্দ্রজিৎ দেব||
গত রবিবার শিলচর বঙ্গভবন মিলনায়তনে সুরমন্দির শিলচর শাখা আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সাম্প্রতিকালে শিলচরে আমার দেখা এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান। মুখ্য অতিথি নির্বাচন থেকে শুরু করে অতিথিদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন, মুখ্য অতিথি সুমিত্রা দত্তের বক্তব্য, গান, নাচ, কবিতা আবৃত্তি, ব্যালে পরিবেশন তথা কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন, সম্পাদকের বক্তব্য প্রদান ইত্যাদি অনুষ্ঠানের ক্রম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আয়োজক মণ্ডলীর দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের পরিণতমস্তিষ্ক, পেশাদারিত্ব এবং অভিনবত্বের সম্পূর্ণ ছাপ ছিল। গোটা অনুষ্ঠানে নানা স্বাদের সাংস্কৃতিক কার্যসূচিকে এমনভাবে সাজানো হয়েছিল, যাতে দর্শক-শ্রোতারা একঘেয়েমি উপলব্ধি না করেন এবং সম্পূর্ণ উৎসাহ ও একাগ্রতা নিয়ে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন, যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। বাড়তি পাওনা হিসেবে ছিল সঞ্চালক অংশুমান আচার্যের সম্পূর্ণ পেশাদারী সঞ্চালন ক্ষমতা যা অনুষ্ঠানকে ভিন্নমাত্রা এনে দিয়েছিল। এদিনের সব কটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই ছিল অত্যন্ত ভালো মানের পরিবেশনা৷ হলভর্তি দর্শকরা দারুণ উপভোগ করেছিলেন। সঞ্চালক মহোদয় সঠিকই বলেছিলেন যে, আমরা যেন জি-বাংলার কোনও অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলাম। বিশেষ করে দুটো অনুষ্ঠান আমার সবচাইতে ভালো লেগেছে৷ তাই এগুলোর উল্লেখ না করে পারলাম না। প্রথমত, সুর মন্দিরের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ‘সুরের মূর্ছনা’। এই অনুষ্ঠানটি এত মনোগ্রাহী হয়েছিল যে, পুরো হলের মধ্যে এক আলাদা পরিবেশের সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। অনুষ্ঠানের শেষে পুরো হলে এক নিস্তব্ধতার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সঙ্গে সুর মন্দিরের সম্পাদক ঋষিকেশ চক্রবর্তীর (সবার পরিচিত মিঠুদার) কলমে অনুসূয়া মজুমদার ও কৌশিকী ভট্টাচার্যের সুর এবং নৃত্যায়নের অধ্যক্ষ চন্দন মজুমদারের নৃত্য নির্দেশনায় মঞ্চস্থ ব্যালে ‘লকডাউন’। অতি অল্প সময়ের মধ্যেও চন্দন মজুমদারের কঠোর পরিশ্রম, উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ও কঠিন অনুশাসন এবং শিক্ষার্থীদের কঠোর অনুশীলনের ফলে ব্যালে লকডাউন ছিল এক সম্পূর্ণ সফল উপস্থাপনা, যা সবাই দারুন উপভোগ করেছিলেন। তাছাড়া, অভিভাবকদের সমবেত সংগীত ‘চলে গেছে কত রাত্রি দিন’ এবং অনুষ্ঠানের শেষপ্রান্তে পরিবেশিত কীর্তনটিও ছিল উন্নত মানের উপস্থাপনা। সুরমন্দিরের অধ্যক্ষা অনুসূয়া মজুমদার এবং সম্পাদক ঋষিকেশ চক্রবর্তীর অক্লান্ত পরিশ্রম, অনুশাসন, নিয়মানুবর্তিতা, সকল শিক্ষার্থীদের কঠোর অনুশীলন, একাগ্রতা এবং অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এদিনের গোটা অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত সফলভাবে আয়োজিত হয়েছিল। সুরমন্দির আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাবে এবং প্রধান অতিথির কথা অনুযায়ী শতায়ু হবে এই কামনা করছি। একজন অভিভাবক হিসেবে সুরমন্দির পরিবারের একজন সদস্য হওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত বোধ করছি। ঋষিকেশ চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে এবং অনুসূয়া মজুমদারের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে সুরের সাধনার পথে আরও এগিয়ে যাবে এবং সুরমন্দিরের নাম স্বর্ণোজ্জ্বল করে রাখবে বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী।