India & World UpdatesHappeningsBreaking News
সিলেটে বেড়েছে পুজোর সংখ্যা, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
ওয়েটুবরাক, ২১ অক্টোবরঃ বাংলাদেশের সিলেট জেলায় দুর্গাপূজার সংখ্যা প্রতিবছর বাড়ছে। ২০২১ সালে ৬০৫টি মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। গত বছর হয় ৬১১টি। এ বারও ছয়টি বেড়ে ৬১৭টি পূজা নথিভুক্ত হয়। এর মধ্যে সর্বজনীন ৫৬৯টি, বাকি ৪৮টি পারিবারিক। মহানগরী ও এর বাইরের পূজার হিসেব টানলে সংখ্যাটি ক্রমে ১৫১ ও ৪৬৬।
অন্যান্য অঞ্চলের মতো সিলেটেও আগে মূলত বনেদী বাড়িতেই দুর্গাপূজা হতো। এখন সে সব বাড়ির অধিকাংশেই আর দুর্গোৎসব হয় না। শেখঘাটের লাল ব্রাদার্স বাড়ি, নয়া সড়কে রাজকুমার সেন ও চৌধুরী পরিবার, হাওয়াপাড়ার ঘোষ ভবন, জামতলায় দেবেন্দ্র মহাজনের বাড়ি, চৌহাট্টায় সেন্ট্রাল ফার্মেসির বাড়ি, শিবগঞ্জে সুধীর দের বাড়িতে শারদবন্দনা হলেও আগের জৌলুস নেই। এখন মূলত দর্শনার্থীরা ভি়ড় জমান সিলেট রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রম, শ্রীশ্রী দুর্গামন্দির বালুচর, শিববাড়ি সিলেট প্রভৃতি পূজামণ্ডপে।
সিলেট রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পাদক স্বামী চন্দ্রনাথানন্দ মহারাজ জানান, দুর্গাপূজার দিনগুলিতে রাত সাড়ে দশটায় মন্দিরের সদর দরজা বন্ধ করা হয়। শেষমুহূর্ত পর্যন্ত দর্শনার্থীতে ঠাসা থাকে পূজাপ্রাঙ্গণ। মহানবমীতে হবে মহাপ্রসাদ বিতরণ। অসংখ্য ভক্ত সেদিন প্রসাদ গ্রহণ করেন।
চা বাগানগুলিতেও শ্রমিকরা দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। বিশেষ করে মালিনীছড়া, দলদলি, লাক্কাতুরা, খাদিম চা বাগানে পূজার দিনগুলিতে মেলা বসে।
এই সময়েও সিলেটের বাজারে পূজার কেনাকাটার ভিড়। বিশেষ করে, জামা-কাপড়ের দোকানে অনেক রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। দাড়িয়ামুখের তরুণ সোহাগ দাস সিলেট শহরের এক বস্ত্রবিপণীতে কাজ করেন। বললেন, বছরের অন্য সময় রাত আটটাতেই ছুটি মেলে। দুর্গাপূজা ও ঈদের সময় সাড়ে দশটাতেও বেরনো যাওয়া যায় না। একই কথা শোনালেন মণিপুরি পল্লীর নিউ নীলাচলের কর্ণধার জাবেদ খানও।
পুলিশ জানায়, পুজোয় আইনশৃঙ্খলা ও সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সিলেট মহানগরী শাখা স্থানে স্থানে সম্প্রীতি সভা করেছে। পুজোর চারদিন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি থাকছে সাদা পোশাকের গোয়েন্দাবাহিনী। অধিকাংশ মণ্ডপে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। জেলা প্রশাসন সে সময় অতিরিক্ত মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। জেলাশাসকের কার্যালয়ে থাকছে হটলাইন৷
সিলেট চাঁদনিঘাটে রাত নয়টা পর্যন্ত এবং অন্যত্র সন্ধ্যার আগে প্রতিমা নিরঞ্জন শেষ করে নিতে বলা হয়েছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ইলিয়াস শরিফের কথায়, প্রকৃত অর্থেই সম্প্রীতির নগরী সিলেট। শারদীয় দুর্গোৎসব এখানে সম্মিলিত ভাবে উদযাপন করা হয়। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপকুমার দেব বলেন, দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় থেকে কোতোয়ালি স্তর পর্যন্ত রয়েছে দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটি। এরা সবাই দুর্গোৎসবের আগে বার্ষিক প্রতিনিধি সভা করেছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে তাঁরাও শান্তিশৃঙ্খলার দিকে নজর রাখছেন।