Barak UpdatesHappeningsBreaking News
সাধারণতন্ত্র দিবসে হাইলাকান্দির সরকারি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যর ভাষণ
ভারতবর্ষের ৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবসের এই পুণ্য প্রভাতে আমি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ক্রীড়া ময়দানে উপস্থিত বিশিষ্ট নাগরিক বৃন্দ, ছাত্র ছাত্রী সহ হাইলাকান্দি বাসী সর্বস্তরের জনগণকে জানাই আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
সুধী,
শ্রদ্ধেয় নাগরিক বৃন্দ।
১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন করে আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। আর এই স্বাধীন রাষ্ট্রকে সুচারুরূপে পরিচালনা করার জন্য ডঃ বি আর আম্বেদকারের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া ভারতবর্ষের সংবিধান ১৯৫০ সালের ২৬ শে জানুয়ারি তারিখে গৃহীত হয়। আর এর পর থেকেই প্রতিবছর ২৬ শে জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করে আসছি ।
তাই, আজকের এই পুণ্য দিনে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদানকারী প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর উদ্দেশে আমি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। একই সঙ্গে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জহরলাল নেহেরু, প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, শহিদ ক্ষুদিরাম, শহিদ ভগৎ সিং, বিনয়- বাদল -দীনেশ, শহিদ কনকলতা, মাস্টারদা সূর্য সেন সহ দেশমাতৃকার জন্য জীবন উৎসর্গকারী প্রত্যেক ভারতমায়ের বীর সন্তানকে।
স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতির এই বৈচিত্র্যময় দেশকে এক উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার তৎপরতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। আর এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ভারতবর্ষের বর্তমান যশস্বী প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমাদের দেশ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে। ঠিক একই ভাবে আমাদের আসামের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কুশল নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের প্রতিটি বিভাগ তৎপরতার সঙ্গে জনউন্নয়ন মূলক কাজ জোর গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
গোটা রাজ্যের সাথে দক্ষিণ আসামের এই প্রান্তিক হাইলাকান্দি জেলার সর্বাঙ্গীন উন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে রাজ্য তথা কেন্দ্র সরকার। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর অভিলাষী জেলা হিসেবে হাইলাকান্দিও একটি। তাই হাইলাকান্দি জেলার বিভিন্ন কার্যসূচি রূপায়ণে বিগত অর্থবছরে প্রায় ৯ কোটি টাকা ব্যয় করতে বিভিন্ন কার্যসূচি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হাইলাকান্দি জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে হাইলাকান্দি শহরের ইন্দ্রকুমারী গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের অতিরিক্ত ভবন নির্মাণের পর এখন আরও ছয়টি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ১১টি অতিরিক্ত ভবন নির্মাণের জন্য গত অর্থবছরে ২৫ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। এছাড়াও জেলার তিনটি শিক্ষা ব্লকে বিভিন্ন স্কুলে ৪৪টি শৌচাগার নির্মানের জন্য ১ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। সমগ্র শিক্ষা অভিযান মিশনের জেলা মিশন সমন্বয়কের কার্যালয়ের অতিরিক্ত ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগেও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে লালা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অতিরিক্ত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এবং প্রত্যন্ত এলাকার সন্তানসম্ভবা মায়েদের জন্য সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে কাটলিছড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি ওয়েটিং হোম তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, জেলায় 8টি ভেটেনারি সাব সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া ও এসকে রায় সিভিল হাসপাতালে দিব্যাঙ্গদের জন্য নিউট্রিশাস রিহ্যাবিলেটেশন সেন্টার তৈরি হচ্ছে।
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন,
অরুণোদয় প্রকল্পে মাসিক অনুদানের পরিমাণ একহাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২৫০ টাকা করা হয়েছে। এ বার অরুণোদয়-টু …এর কাজ শুরু হয়েছে। এখন এই প্রকল্পে 17 লক্ষ বেনেফিসিয়ারি রয়েছেন। অরুণোদয় প্রকল্পে এ ক্ষেত্রে হাইলাকান্দি জেলার ৩৮ হাজার ৫৬৩ জন হিতাধিকারী উপকৃত হবেন।
আমরা সবাই জানি, স্বাস্থ্যই সম্বল। আর সেক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার জনগণের সুবিধার্থে বিভিন্ন কার্যসূচি গ্রহণ করেছে। এনএইচএম ও রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হাইলাকান্দি জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বিগত করোনা কালে জনগণকে সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বস্তরের কর্মী দিনরাত পরিশ্রম করেছেন। আসাম সরকার রাজ্যের জনগণকে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করতে বদ্ধপরিকর রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর রোগ নির্ণয় কার্যসূচির অন্তর্গত প্রায় ১০ লক্ষাধিক জনগণ বিগত অর্থবছরের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যপরিষেবা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছেন। আসাম সরকারের বিনামূল্যে ঔষধ প্রদান সেবার অন্তর্গত সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে আগত রোগীদের ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ডায়ালাইসিস প্রকল্পের অন্তর্গত আসামের বিভিন্ন ডায়ালাইসিস কেন্দ্রসমূহে রোগীরা স্বাস্থ্যপরিসেবা পাচ্ছেন। আসামের চা বাগানের গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মজুরি ক্ষতিপূরণ প্রকল্পের অধীনে চা বাগান এলাকায় বসবাসকারী প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। স্বাস্থ্য এবং পরিবার বিভাগের অন্তর্গত জন্মগতভাবে হৃদযন্ত্রে অসুখে ভোগা শিশুদের জন্য বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার ইত্যাদির সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। স্নেহস্পর্শ প্রকল্পেরও পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে। ন্যাশনাল আয়ুর্বেদিক মিশনের আওতায় অসমে ৫০ শয্যার চারটি, ৩০ শয্যার এবং ১০ শয্যার একটি করে আয়ুর্বেদিক হাসপাতাল নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে।
হাইলাকান্দিতে এস কে রায় সিভিল হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট ছাড়াও ডায়ালেসিস ইউনিট চালু হওয়ায় জনগণ সুবিধা পাচ্ছেন। সন্তান প্রসবকালে মা ও সন্তানের জীবন সুরক্ষিত রাখতে হাসপাতালে সন্তান প্রসবের জন্য জন সচেতনতা অভিযান চালানোর পাশাপাশি মোবাইল মেডিকেল ইউনিটের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদান করা হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। জননী সুরক্ষা যোজনার অধীনে আর্থিক সাহায্যও প্রদান করা হচ্ছে। আয়ুস্মান ভারত অভিযানের অন্তর্গত হাইলাকান্দি জেলার ৬৫টি সাব সেন্টার, ১৫ টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং দুইটি আরবান সেন্টার কে হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টারে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। তাছাড়াও হাইলাকান্দির এস কে রায় সিভিল হাসপাতাল সহ তিনটি সিএইচসি, ৪ টিপিএইচসি ও ১০টি হেল্থ অ্যান্ড ওয়েলনেস সেন্টার কায়কল্প সম্মানে ভূষিত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ মিশন ভূমিপুত্র প্রকল্পে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হচ্ছেন। হাইলাকান্দি জেলাতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা কাস্ট সার্টিফিকেট গ্রহণ করার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করেছেন। ইতিমধ্যে জেলার ১৩৮ স্কুলের ৪০৫৮ ছাত্র-ছাত্রী কাস্ট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার সার্টিফিকেট প্রদান সম্পন্ন হয়েছে।
ভারতবর্ষকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এই বিশাল দেশের ভাবী প্রজন্মকে প্রকৃত শিক্ষায় পারদর্শী হতে হবে । তাই আমাদের সরকার পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করে ভারতবর্ষে শিক্ষার অধিকার আইনকে সুচারুরূপে প্রতিষ্ঠিত করতে বদ্ধপরিকর রয়েছে। নতুন শিক্ষানীতি অনুসারে প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন ডিপার্টমেন্টকে যুক্ত করা হয়েছে। ২১৪টি হাই স্কুলকে চার ক্লাশের উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে উন্নীত করা হয়েছে।
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পেরিয়ে এই প্রথম অসম সরকার চা বাগানে হাইস্কুল তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ৯৭টি হাইস্কুল নির্মাণ করা হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জেলার চা বাগান এলাকায়।
হাইলাকান্দি জেলার লক্ষী নগর ও কৈয়া চা বাগানে দুটি মডেল হাই স্কুল চালু হওয়ায় চা বাগান অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীরাও উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে এখন থেকে আরও সুবিধা পাবে। পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন স্থানে আরো কয়েকটি আদর্শ বিদ্যালয় তৈরির কাজও জোর গতিতে চলছে।
এ ছাড়া, বঙাইগাঁও, বিহালি, শুয়ালকুচি, নলবাড়ি, নগাঁও ও উদালগুড়িতে ৬টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের নির্মাণকার্য চলছে। হচ্ছে নতুন ৮টি পলিটেকনিক, ১০টি আইন কলেজ। আরও চারটি মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের কথা এই বছর ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্বঘোষিত করিমগঞ্জ সহ নতুন আরও 8টি মেডিক্যাল কলেজের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ থেকে শুরু করে স্কুল ইউনিফর্ম, সেল্ফ ডিফেন্স, খেলাধুলার সামগ্রী, শিক্ষা মূলক ভ্রমণ সহ স্কুলে মধ্যাহ্ন ভোজনের জন্য পিএম পোষণ অভিযানের অন্তর্গত প্রতিটি সরকারি বিদ্যালয় মধ্যাহ্নভোজন প্রকল্পকে সুদুরপ্রসারি রূপ দিতে সরকার সচেষ্ট রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎকর্ষতা বৃদ্ধির জন্য রাজ্য সরকার গুণোৎসবেরর যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তাতে তৃণমূল স্তরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুণগত মান যাচাই করে ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে আরও উন্নত করতে প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে, মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা রাজ্যের প্রতিটি জেলায় বিগত গুণোৎসবে এ- গ্রেড প্রাপ্ত স্কুল প্রধান দের সম্মানিত করেছেন এবং সেই সব স্কুল গুলোকে এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে হাইলাকান্দি জেলার ১১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুণোৎসবে এ প্লাস গ্রেড পায়।
অন্যদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে ওই এলাকার প্রত্যেক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণের জন্য আয়োজিত কমিউনিটি ফ্যাস্টিভ্যালের মাধ্যমেও সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সহ বিদ্যায়তনিক প্রতিভা প্রকাশ পেয়েছে। তাছাড়াও এখন থেকে সরাসরি অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিভিন্ন অনুদানের পুঁজি সদ্ব্যবহার করার এক সময় উপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রজ্ঞান ভারতীর অধীনে হাইয়ার সেকেন্ডারি উত্তীর্ণ পড়ুয়াকে এ বছর স্কুটি দেওয়া হয়েছে।
বন্ধুগন।
ভারত বর্ষ এক কৃষি প্রধান দেশ। তাই স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে থেকেই ভারতবর্ষের কৃষি ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য সরকার সচেষ্ট রয়েছে। বর্তমান সময়ে আয় বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। বিগত অর্থবছরে হাইলাকান্দি জেলাতে ও pm-kisan প্রকল্পের অন্তর্গত প্রায় ৭০ হাজার কৃষক বছরে ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা দুজনার অন্তর্গত কৃষকের পঞ্জীয়ন সম্পন্ন হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সমগ্র গ্রাম্য উন্নয়ন দুজনার ২৮৯ টি ট্রাক্টর প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়াও কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে RKVI,NFSM ও BGREI প্রকল্পের মাধ্যমে রেহাই মূল্যে কৃষকদের ট্র্যাক্টর প্রদান করা হয়েছে। কমিউনিটি নার্সারি প্রোগ্রাম এর অন্তর্গত ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ও আর কে ভি ওয়াই প্রকল্পের অধীনে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকদের রবিশস্য প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর অভিলাষী জেলা হিসেবে ৫৫ এলএলপি প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়াও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন হাইলাকান্দি জেলার কৃষকরাও।
গণবণ্টন বিভাগের অন্তর্গত আর্থিকভাবে অনগ্রসর জনগণের জন্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার অধীনে সুবিধা পাচ্ছেন রাজ্যের জনগন। এক্ষেত্রে হাইলাকান্দি জেলার ১ লক্ষ ২৬ হাজার ২৮৪ জন হিতাধিকারী অন্তোদয় অন্ন যোজনা , প্রায়োরিটি হাউজহোল্ড, প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিমাসে কার্ড প্রতি ৩৫ কেজি এবং প্রায়োরিটি হাউজহোল্ড যোজনায় ৫ কেজি করে চাল সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়াও রাষ্ট্রীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে হিতাধিকারীকে রেশন কার্ড প্রদান করার প্রক্রিয়া চলছে। কৃষকদের ধান বিক্রি করার জন্য লালা বাজারে খাদ্য নিগমের তত্ত্বাবধানে একটি ধান সংগ্রহ কেন্দ্র চালু হয়েছে। যেখানে কৃষকরা প্রতি কুইন্টাল ২০৪০ টাকার বিনিময়ে ধান বিক্রি করতে পারবেন।
আমরা সবাই একমত যে ভারতবর্ষকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে হলে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে হবে। তাই এক্ষেত্রেও আমাদের সরকার বদ্ধপরিকর রয়েছে এই পরিপ্রেক্ষিতে হাইলাকান্দি জেলাতে জেলা পরিষদের অন্তর্গত জেলার গ্রাম অঞ্চলের জনগণ বিভিন্নভাবে সরকারি সুবিধা সুযোগ লাভ করছেন। ন্যাশনাল সোশিয়াল এসিস্টেন্স প্রোগ্রামের অধীনে ২০২২-২৩ অর্থবছরের হাইলাকান্দি জেলার প্রায় ১৬হাজার হিতাধিকারী ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওল্ড এজ পেনশনের সুফল পেয়েছেন। প্রায় প্রায় তিন হাজার বিধবা ও বিধবা পেনশন পেয়েছেন। প্রায় সাড়ে নয় শত জন দিব্যাঙ্গ পেনশন এর সুবিধা গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সুবিধা গ্রহন করছেন হে দাবিকারীরা। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা(গ্রামীণ) এর অন্তর্গত প্রায় দেড় লক্ষাধিক আবাস তৈরি হয়েছে এবং প্রায় ১৪ হাজার আবার নির্মাণের কাজ জোর গতিতে চলছে এবং ১৩ হাজার নতুন আবাস পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় এম জি এন রেগা মাধ্যমে ১০০ দিনের বিভিন্ন ধরনের রোজগারের সুবিধা পেয়েছেন প্রায় দেড় লক্ষাধিক জনগণ। সরকারের সুদুরপ্রসারি প্রকল্প মিশন অমৃত সরোবরের অধীনে হাইলাকান্দি জেলাতে মোট ৭৫ টি সরোবর তৈরীর কাজ শুরু হবে এবং ইতিমধ্যে ৭ টি সরোবর তৈরি সম্পন্ন হয়ে গেছে।
পাশাপাশি জাতীয় জীবিকা মিশনের অন্তর্গত মহিলাদের স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে আত্মসহায়ক দল গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যসূচি হাইলাকান্দি জেলাতে গ্রহণ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ন্যাশনাল আরবান জীবিকা মিশনের অন্তর্গত সিটি মিশন ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে হাইলাকান্দি জেলায় এখন পর্যন্ত ২৭০টি আত্মসহায়ক গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৬৩টি আত্ম সহায়ক গোষ্ঠী ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান পেয়েছে। পাশাপাশি বেকার যুবক-যুবতীদের দক্ষতা বিকাশ প্রশিক্ষণ অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে, ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হয়েছে বিগত অর্থবছরে। তাছাড়া ৮৮ টি আত্মসহায়ক গোষ্ঠীকে ২লক্ষ টাকা করে ব্যাংক ঋণ প্রদান করা হয়েছে। পিএম সেবা নিধি প্রকল্পের অধীনে ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হচ্ছে।
বন বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। আপনারা জানেন যে, সবুজ বনানী ঘেরা আমাদের এই আসাম রাজ্যের বনজ সম্পদকে রক্ষণাবেক্ষন করার জন্য বন বিভাগের প্রতিটি স্তরের কর্মী সদা তৎপর রয়েছেন। প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে বৃক্ষ রোপন করা আমাদের সবার কর্তব্য। আর এক্ষেত্রে বন বিভাগ নিয়মিত জন সচেতন মূলক কার্যসূচি গ্রহণ করছে। পাশাপাশি অবৈধ ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে জরিমানা ও আদায় অব্যাহত রয়েছে। গত বছর হাইলাকান্দি ফরেষ্ট ডিভিশনের অন্তর্গত প্রায় সোয়া তিন কোটি টাকার জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অন্যদিকে, বর্তমান সময়ে আসাম-মিজোরাম সীমান্তেও শান্তি বিরাজ করছে। খুব শীঘ্রই হাইলাকান্দিতে আসাম-মিজোরাম বর্ডার ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া আসাম সরকার দামছড়াতে দ্বিতীয় কমান্ডো ব্যাটেলিয়ান ক্যাম্প বসানোরও পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
রাজ্য সরকার মৎস্যজীবীদের উন্নতি কল্পে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনার অধীনে রাজ্যে মৎস্য খাদ্য মিল স্থাপন করে স্থানীয় মাছের জন্য খাদ্যর জোগান দিতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই বিভাগে নাবার্ড থেকে অর্থ নিয়ে ২০০০টি রাজস্ব গ্রামে কমিউনিটি পুকুর নির্মাণ করার জন্য এক বিশেষ প্রকল্পের প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে ১৭০০ কোটি টাকা মাধ্যমে মীন বিভাগে জলাশয় সংরক্ষণ এবং পরিচালনার জন্য এক বিশেষ প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হবে। এর জন্য ১ বিঘা জমির উপর ফিসারি থাকলে মীন বিভাগে এজন্য আবেদন করা যাবে।বিগত অর্থ বছরে হাইলাকান্দি জেলায় প্রধান মন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় সাড়ে তিনশো মৎস্য চাষী উপকৃত হয়েছেন। পাশাপাশি গ্রুপ অ্যাক্সিডেন্টে বিমা সহ কিষান ক্রেডিট কার্ডের ব্যাবস্থা করা হয়েছে।
হ্যান্ডলুম এবং টেক্সটাইল বিভাগের অন্তর্গত মুদ্রা লোনের মাধ্যমে হিতাধিকারীদেরকে আত্মনির্ভরশীল করে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
বন্ধুগণ,
বিদ্যুৎ বিভাগ অসমের প্রতিটি রাজস্ব গ্রামে বিদ্যুতের লাইন পৌঁছে দেওয়া আমাদের সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামজ্যোতি যোজনা এবং সৌভাগ্য যোজনায় ঘরে ঘরে বিদ্যুত দেওয়ার পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। নির্ভুল মিটার রিডিংয়ের জন্য আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স মিটার রিডিং সিস্টেম চালু হয়েছে।। বিল প্রদানে গ্রাহকদের সুবিধার জন্য আনা হয়েছে প্রিপেড ওয়ালেট সিস্টেম, এপিডিসিএল ওয়ালেট ইজিপে। ৪ লক্ষ ৭৫ হাজার গ্রাহককে স্মার্ট মিটারে যুক্ত করা হয়েছে।১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উতপাদনক্ষম লোয়ার কপিলি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পেও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক অর্থের সংস্থান করেছে। এই প্রকল্পের কাজ ২০২৪ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে।
সায়েন্টিফিক রুরাল গোডাউন নির্মাণের জন্য রাজ্য সমবায় দফতর ৭৮টি ডিপিআর তৈরি করেছে। এই কাজে ৬০ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রতিদিন১০ লক্ষ লিটার দুগ্ধ উৎপাদনের মাধ্যমে শ্বেতবিপ্লবের জন্য অসম সরকার, এনডিবিবি এবং ওয়ামুলের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মেয়াদ নতুন করে সম্প্রসারিত করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন মহিলা সমবায় সমিতিকে ১৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, জিপি সমবায় সমিতিগুলিকে ৯৫ লক্ষ টাকা এবং দুগ্ধ সমবায় সমিতিগুলিকে১৪ লক্ষ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
মাইক্রো ফাইনান্স ঋণ পরিশোধে জেলার ১৬ হাজার ২০৬ জন মহিলা হিতাধিকারী উপকৃত হয়েছেন। কেন্দ্র তথা রাজ্য সরকার যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরও চাঙা করে তুলতে সড়ক নির্মানের কাজ জোর গতিতে চলছে। জেলার পূর্ত (সড়ক) বিভাগের অন্তর্গত আসাম-মিজোরাম সীমান্ত এলাকার ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক তৈরির কাজ জোর গতিতে চলছে।
রাজ্যের পরিবহন বিভাগেও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে এখন বিভিন্ন পরিষেবা জনগণের জন্য উপলব্ধ রয়েছে। হাইলাকান্দি জেলাতে ও জনগন অনলাইনের মাধ্যমে পরিবহন বিভাগের অন্তর্গত বিভিন্ন কাজ কার্যালয়ে না গিয়েই করতে পারছেন।
পরিবহন বিভাগে রাজ্যের অন্যান্য জেলার সঙ্গে হাইলাকান্দি জেলায়ও মোট ৪০ টি পরিষেবা অনলাইনে উপলব্ধি হচ্ছে। তাছাড়া, জেলায় যান দুর্ঘটনায় গত বছর সালে ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বৃদ্ধি পেয়েছে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণও। রেভিনিউ কালেকশন ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ৮০ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জন স্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের অন্তর্গত ও জেলাবাসী পানীয় জল সহ স্বচ্ছতা অভিযান, ‘হর ঘর নল সে জল’ ইত্যাদি প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন জনসাধারণ। জল জীবন মিশনের অন্তর্গত হাইলাকান্দি জেলায় প্রায় ৯৪ হাজার হিতাধিকারী সুফল লাভ করেছেন। তাছাড়া ও স্বচ্ছ ভারত মিশন (গ্রামীণ) এর অন্তর্গত ২০৬ টি Sanitary complex এবং ৪ টি Plastic management ইউনিট জেলার বিভিন্ন ব্লকে স্থাপন হয়েছে। এছাড়াও মাটিজুরি- পাইকান জিপিতে ৪ টি গভর্ধন প্লাণ্ট স্থাপন করা হয়েছে।
জলসচ বিভাগের হাইলাকান্দি, কাটলীছড়া ও আলগাপুর ডিভিশনে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।
গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি শহরাঞ্চলে ও পুরসভার অন্তর্গত স্বচ্ছ ভারত অভিযানের কাজ জোর গতিতে চলছে।হাইলাকান্দি পুরসভার অন্তর্গত গত অর্থ বছরে ১৪৩০ টি প্রধানমন্ত্রী আবাস তৈরি হয়েছে। বর্তমানে শহর হাইলাকান্দিকে সাজিয়ে তুলতে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। তাছাড়াও লালা পুরসভার বিভিন্ন কাজ হচ্ছে। বিগত বছর লালা পুরসভা স্বচ্ছতা পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছে।
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা উন্নত হওয়ার প্রেক্ষিতে ২৪টি জেলা এবং একটি মহকুমা থেকে আফস্পা প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ বিভাগ এবং বন বিভাগের যৌথ উদ্যোগের ফসল হিসেবে আমরা আনন্দিত যে, চলতি অর্থবছরে কোনও চোরাশিকারী গণ্ডার হত্যার সাহস পায়নি। হোমগার্ডদের ডিউটি অ্যালাউন্স ৩০০ টাকা থেকে দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে ৭৬৭ টাকা করা হয়েছে।অবৈধ কারবারি সহ নেশাজাতীয় সামগ্রী চোরা কারবারির বিরুদ্ধেও হাইলাকান্দি পুলিশ বিগত দিনে বিশেষ সফলতা লাভ করেছে।
এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জগুলিকে ডিস্ট্রিক্ট স্কিল, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার সেন্টারে পরিণত করা হয়েছে। ক্রীড়া যুব কল্যাণ দফতর ৪০টি মিনি স্টেডিয়াম এবং দশটি ডিস্ট্রিক্ট স্টেডিয়াম নির্মাণ করছে। রাজ্যে ১৬টি নতুন ন্যাশনাল হাইওয়ে ঘোষণা করা হয়েছে। সেগুলির জন্য এখন ডিপিআর তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আমাদের সরকার ৯৯৯টি মডেল অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দালানবাড়ি নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে। তার মধ্যে ৭৭২টির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্যে এই সময়ে ৩৬টি ওয়ানস্টপ সেন্টার এবং ৩৬টি শক্তিসদন চালু রয়েছে।
এ কথা আপনারা সবাই অবগত রয়েছে, বর্তমান সরকার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শূন্যপদে নিয়োগের জন্য পৃথক রিক্রুটমেন্ট বোর্ড গঠন করেছে। তার অধীনে লিখিত পরীক্ষা সুসম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে মৌখিক এবং নথিপত্র পরীক্ষা।
রাজ্যের অর্থ বিভাগে চলতি অর্থবছরে ১২ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা জিএসটি সংগ্রহ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বৃদ্ধির হার হল ২৫.৭ শতাংশ। রাজ্যে সাতাশ লাখ অরুণোদয় হিতাধিকারীর জন্য সরকারের চার হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। পি এইচ ই বিভাগের উদ্যোগে রাজ্যে ৮৪৯ টি চা বাগানের জন্য ১২০১টি পাইপ যুক্ত পানীয় জল প্রকল্পে ২ লক্ষ. ৫ হাজার ৯৮৯টি টেপ সংযোগ চালু করা সম্ভব হয়েছে। অসামরিক সরবরাহ বিভাগের উদ্যোগে রাজ্যে পাঁচ কেজি করে বিনামূল্যে চাল ২ কোটি ২ লক্ষ ৫০ হাজার ২৫৬ জন লোক পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনায় ৪৩ লক্ষ ১৩ হাজার ১২১টি এলপিজি সংযোগ বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। মীন বিভাগে মৎস্য পালনে নিয়োগের সুবিধা প্রদান করে আসছে।। পরিপুষ্টি এবং জীবিকার সুরক্ষার ক্ষেত্রে এই বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলে দারিদ্রতা হ্রাস পায় এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। রাজ্যে মাছের উৎপাদন ৪.১৭ লক্ষ মেট্রিক টনের সীমা স্পর্শ করেছে।
পরিবহন বিভাগে গত অর্থ বছরে ১০২২.৬৭ কোটি টাকা যানবাহনের রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়েছে। যা এখন পর্যন্ত সর্বাধিক পরিমাণ। এদিকে বর্তমান অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ৯১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। রাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪৫টি কন্টাক্টলেস অ্যান্ড ফেসলেস অনলাইন সার্ভিস আরম্ভ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ জল পরিবহন প্রকল্পের অধীনে গুয়াহাটির ঘাটে অত্যধিক মডুলার টার্মিনাল এবং নদীপথে আন্তঃপরিকাঠামো নির্মাণের জন্য আসাম সরকার অনুমোদন জানিয়েছে। এটা হবে দেশের সর্ববৃহৎ নদী টার্মিনাল। এছাড়া আজ পর্যন্ত জল পরিবহন প্রকল্পের অধীনে ব্রহ্মপুত্র নদীতে রাষ্ট্রীয় নদীপথ দুই এবং আরো ১৩টি ক্ষুদ্র টার্মিনাল স্থাপন করা হবে।। প্রদূষণ মুক্ত আসাম গড়ার লক্ষ্যে রাজ্য পরিবহন নিগমে ১০০টি ইলেকট্রিক বাস এবং ১০০টি সিএনজি বাস চালু করে সার্বজনীন পরিবহন ব্যবস্থায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের মধ্যে প্রথম রাজ্যিক পরিবহন সেবা রূপে পরিগণিত হওয়া সম্ভব হয়েছে।
সংখ্যালঘু কল্যাণ এবং উন্নয়ন বিভাগে রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২ লক্ষ ২৯ হাজার ৫৭৬ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রাকপ্রবেশিকা বৃত্তি ৪৯ হাজার ১১১ জন প্রবেশিকাত্তোর বৃত্তি লাভ করেছেন। এছাড়া আরো ৩০৬৫ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্র-ছাত্রী মেরিট কাম মিশন বৃত্তি পেয়ে উপকৃত হয়েছেন।
জল সম্পদ বিভাগে এসওপিডিজিএর অধীনে ১২৯.২২ কোটি টাকার ২০টি প্রকল্প এসওপিডি এফডিআরের অধীনে ৪৩২.৪৪ কোটি টাকার ৮৩টি কাজ, এসওপিডি-ওডিএসের অধীনে ১৮৮.৩৭ কোটি টাকার ১৯টি প্রকল্প, আরআইডিএফের অধীনে ২০৭.০২ কোটির দশটি প্রকল্প এবং উত্তর-পূর্ব পর্ষদের অধীনে ৯.৪৬ কোটি টাকার দুইটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
আসাম সরকার থেকে রাজ্যের সীমা সমস্যা সমূহ সর্বসম্মতি ক্রমে সমাধান করার জন্য সুদৃঢ় এবং ইতিবাচক পদক্ষপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে মিজোরাম এবং আসামেও দুইটি রাজ্যের মধ্যে সীমা বিবাদ সমূহ আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। সেই মর্মে সীমা সমস্যা সমূহ সমাধানের জন্য দুটি রাজ্যের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
আবগারি বিভাগে রাজ্যের সীমান্ত দিয়ে অবৈধ মদের চোরাচালান সরবরাহ প্রতিরোধে সরকার থেকে ট্রানজিট পাশের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রূপান্তর এবং উন্নয়ন বিভাগের অধীনে রাজ্যের ১২৫টি বিধানসভা চক্রের ২৫০টি গ্রামকে আদর্শ গ্রাম হিসাবে শনাক্ত করে এই গ্রামসমূহের উন্নয়নমূলক কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে
আমি আমার বক্তব্য সমাপ্ত করার আগে এখানে উপস্থিত বিশিষ্ট নাগরিক, সব ক্ষেত্রের জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন বিভাগীয় আধিকারিক ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছাত্রছাত্রী, এন সিসি বাহিনী, সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি সহ সর্বস্তরের জনগণকে আবারও একবার প্রজাতন্ত্র দিবসের অভিনন্দন জানাই।
আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের এই বিশাল রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে দেশের সার্বিক উন্নয়নে সচেষ্ট হই।
ধন্যবাদ।