Barak UpdatesHappeningsCultureBreaking News
সরকারি স্কুলে বেসরকারি পাঠদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, জুড়ল মাশুল
ওয়েটুবরাক, ২৪ আগস্টঃ কাছাড়ের উচ্চ ও নিম্ন প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়ে নৃত্য-সঙ্গীত-চিত্রকলা ইত্যাদি বেসরকারি পাঠদানে ডেপুটি ইন্সপেক্টর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, শিলচরের শিল্প-সংস্কৃতি ও বৌদ্ধিক জগতের প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
কাছাড়ের অতিরিক্ত জেলাশাসক অন্তরা সেন এ দিন বিকালে কাছাড় জেলা শিল্পী সমিতি সহ প্রতিবাদী সংস্থাগুলিকে বৈঠকে আহ্বান জানান। জেলাশাসক রোহনকুমার ঝা তাতে অংশ নেন। তিনি সকলের আপত্তি শুনে শিল্প-সংস্কৃতিমহলের দাবি মেনে নেন।
সভায় জেলাশাসক জানান, আসাম সরকারের নিয়ম অনুযায়ী এখন থেকে সরকারকে একটি নির্দিষ্ট হারে মাশুল প্রদান করলেই সরকারি স্কুলগুলোতে সংগীত প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যান্য শিক্ষাদান কর্মসূচি চালিয়ে যেতে পারবে। সেই সঙ্গে শিলচর পুরসভা থেকে প্রতিটি সংস্থাকে নিতে হবে ট্রেড লাইসেন্স।
এই সূত্র ধরেই তাঁর প্রস্তাব, বেসরকারি পাঠদানের জন্য স্কুলগুলিকে কোনও মাশুল দিতে হবে না, কিন্তু ট্রেজারিতে মাসে এক হাজার টাকা জমা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, নৃত্য-সঙ্গীত-চিত্রকলা ইত্যাদি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। উপস্থিত প্রতিনিধিরা দ্বিতীয় প্রস্তাব মেনে নিলেও এক হাজার টাকা মাসে দেওয়ার প্রস্তাবে আপত্তি জানান। শেষে বছরে ৬৫০০ টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এর ফলে গত ১৫ দিন ধরে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল এ দিন এর অবসান হল।
উল্লেখ্য, গত ১১ আগস্ট উপ-পরিদর্শকের নির্দেশে সরকারি বিদ্যালয়গুলোতে সমস্ত শিল্প শিক্ষার ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা শিল্প-সংস্কৃতির শিক্ষাধারা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এই অবস্থায় শিলচর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সকল সঙ্গীত এবং চারুকলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে রূপম সাংস্কৃতিক সংস্থার কার্যালয়ে গড়ে তোলা হয় ‘কাছাড় জেলা শিল্পী সমিতি’। নবগঠিত এই সমিতি বিদ্যালয় সমূহের উপ-পরিদর্শকের নির্দেশের বিরোধিতা করে তা সত্বর প্রত্যাহারের দাবি জানায়৷
জেলাশাসক এ দিন জানিয়েছেন, সরকারি প্রক্রিয়া পূরণ করতে যেহেতু কিছুটা সময়ের প্রয়োজন, তাই ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে প্রতিটি স্কুলে গান-বাজনার শিক্ষাদান প্রক্রিয়া আগে যেমন চলছিল তেমনই চলবে। এদিনের এই সভায় কাছাড় জেলা শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেন নিখিল পাল, প্রদীপ আচার্য, হৃষিকেশ চক্রবর্তী, শ্যামল সাহা, অরুণ পাল, সব্যসাচী পুরকায়স্থ, চন্দন মজুমদার, গোরা রায়, সুবীর ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ দাস, সত্যজিৎ বসু জয় প্রমুখ। এছাড়াও অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধিরাও এই সভায় উপস্থিত থেকে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন।
এই আন্দোলনকে সফল করে তুলতে শিলচরের জনগণ, জনপ্রতিনিধিরা যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন, তার জন্য কাছাড় জেলা শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হচ্ছে। এই ব্যাপারে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করার জন্য আগামী শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে স্থানীয় রূপম কার্যালয়ে এক সভা আহ্বান করা হয়েছে। সমিতির অন্তর্ভুক্ত সকল সংস্থা সহ যারা এখনও সমিতিতে যোগ দেননি, তাদেরকেও এই সভায় উপস্থিত থাকতে রূপম সম্পাদক নিখিল পাল অনুরোধ জানিয়েছেন।