Barak UpdatesHappeningsBreaking News
শুধু ফোটোসেশন নয়, গাছের পরিচর্যা করার আহ্বান দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুষ্ঠানে
ওয়েটুবরাক, ৫ জুন : সংবাদপত্র এবং বৈদ্যুতিন মাধ্যমের দৌলতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস এখন অনেকেই পালন করেন৷ মূল লক্ষ্য, গাছ লাগানোর নামে ফোটো তোলা, প্রচারে আসা৷ পরে ওই গাছগুলির কী হচ্ছে, সে খবর আর কেউ রাখেন না৷ ফলে আনুষ্ঠানিক ভাবে যত গাছ লাগানো হয়, এর ক্ষুদ্র অংশও বাঁচে না৷
বুধবার শিলচরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আয়োজিত বিশ্ব পরিবেশ দিবসের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বক্তা গুরুত্বের সঙ্গে কথাগুলি উল্লেখ করেন৷ পর্ষদের রিজিয়নাল হেড তথা এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরবিন্দ দাস জানান, তাই এ বার তাঁরা গণহারে চারা বিতরণ বা যেখানে-সেখানে বৃক্ষরোপণ করছেন না৷ এর বদলে পশ্চিম চানমারির এক এনজিওকে তাদের চাহিদা রয়েছে বলে কিছু চারা তুলে দেন৷ আর কিছু চারা তাঁরা নিজেরা নিয়ে যান কাজিডহরের একটি ইটভাটা ও খাসপুরের একটি পাথর ক্রেশার ইন্ডাস্ট্রিতে৷ শ্রমিকদের সঙ্গে নিজেরা উপস্থিত থেকে সেগুলি রোপণ করেন৷
একই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে নরসিং উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ রতন পাল বলেন, শুধু ফোটোসেশনে পরিবেশ বাঁচবে না, দূষণমুক্ত পরিবেশের জন্য গাছের পরিচর্যা করতে হবে৷ তাঁর কথায়, এ সব ব্যাপারে আইন রয়েছে বটে, কিন্তু সেই আইন ভঙ্গকারীদের কোনও শাস্তির ব্যবস্থা হয় না৷
বনবিভাগের চিফ কনজারভেটর রাজীবকুমার দাস বলেন, দুই ধরনের দূষণ রয়েছে৷ সামাজিক দূষণ ও পরিবেশ দূষণ৷ সামাজিক দূষণ নিয়ে চর্চা হয়, পরিবেশ দূষণ নিয়ে কেউ সেভাবে ভাবেন না৷ অথচ বিষয়টি উল্টো হওয়ারই কথা ছিল৷ পরিবেশ, প্রকৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে শিশুদের সচেতন করে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন ডিএফও ড. বিজয় পালভে৷ শিলচর ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান মঞ্জুল কুমার দেবও শিশুদের প্রকৃতির সঙ্গে খেলাধূলার সুযোগ করে দিতে অভিভাবকদের অনুরোধ জানান৷ তিনি উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, ভূমিক্ষয় মাটির উর্বরাশক্তি নষ্ট করে দিচ্ছে৷ তাই মাটির প্রয়োজনে পাহাড় না কেটে নদীখননের পরামর্শ দেন তিনি৷ পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টশনের মাধ্যমে পরিবেশ বিষয়ক নানা তথ্য তুলে ধরেন পর্ষদের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্টিস্ট সৌরভ গুপ্ত বরা৷
এ দিন অনুষ্ঠানের শুরুতে পর্ষদের কর্মীরা উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন এগজিকিউটিভ এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্টিস্ট করুণা ঠাকুরিয়া৷ সবশেষে ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন পর্ষদের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রিয়ঙ্কা দে৷
এ দিন সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত বসে আঁকো প্রতিযোগিতার বিজয়ীদেরও পুরস্কৃত করা হয়৷ গত দুই জুন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস, শিলচরের সহযোগিতায় দ্বিতীয় থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছিল৷ ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ সমিত রায়ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷