Barak UpdatesHappenings
শিলচরে এসে আলোচনা ও কবিতা পাঠর আসর করল সাহিত্য অকাদেমি
ওয়েটুবরাক, ২৭ নভেম্বর : সাহিত্য অকাদেমি স্থানীয় দারুহরিদ্রাকে সঙ্গে নিয়ে রবিবার শিলচরে আয়োজন করেছে আলোচনা ও কবিতা পাঠের আসর। অনুষ্ঠানটি তিনটি পর্বে বিভক্ত ছিল। উদ্বোধনী, আলোচনা ও কবিতা পাঠের আসর। পুরো অনুষ্ঠানে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলেন সুবোধ সরকার, যাঁর নামের আগে বা পরে পরিচয়জ্ঞাপক কোনও কিছুর প্রয়োজন পড়ে না। কবি সুবোধ সরকার বললেন, বরাক উপত্যকার কবি-লেখকরা বাংলা সাহিত্যে এমন ভাবে জড়িয়ে রয়েছেন যে, তাঁদের লেখা কবিতা বা গল্প পড়ে বোঝার উপায় নেই, তাঁরা শিলচরের বা বরাকের মানুষ। আজকের দিনে কে কোথা থেকে লিখছেন, এ কোনও বিষয়ই নয়। তাঁর কথায়, কবিতা লিখতে গিয়ে একটা আন্তর্জাতিকতা তৈরি হয়।
বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির সামনে যে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়ায়, এর উল্লেখ করে সুবোধ বলেন, ভূগোলভেদকে যদি দূরে সরিয়ে রাখা যায়, সব বাঙালি যদি একযোগে হ্যাঁ বা না বলে তাহলে যত বড় দস্যুই আসুক, বাংলা ভাষাকে কেড়ে নেওয়া সম্ভব হবে না। ঈর্ষা থেকেই দস্যুরা মাথাচাড়া দেয় বলে কবি তাঁদের উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন, আর একটা রবীন্দ্রনাথ দেখাও তো। একুশে ফেব্রুয়ারি, উনিশে মে বাংলার জোর, শোনান সুবোধ। তিনি বলেন, এই দুটো একই মায়ের গর্ভে সৃষ্ট।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্যও বলেন, কবিতার ভাষা আন্তর্জাতিক ভাষা। তিনি ভাষাশদিহদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি শোনান, বরাকে বাংলা ভাষার যে বিকাশ, সেটা হয়েছে ওই ভাষাশহিদদের জন্য। উদ্বোধনী পর্বের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাহিত্য অকাদেমির আঞ্চলিক সচিব দেবেন্দ্রকুমার দেবেশ। বরাক উপত্যকার প্রাচীন ইতিহাস ঘেঁটে গুরুচরণ কলেজের লোকসংস্কৃতির গবেষক অমলেন্দু ভট্টাচার্য জানান, বঙ্গ সাহিত্যর সবকটি ধারা প্রাচীন কালেও এই অ়ঞ্চলে ছিল। দারুহরিদ্রার মুখ্য উপদেষ্টা অমিতাভ দেবরায়ের কথায়, আদি পর্বকে বাদ দিয়ে আধুনিক সাহিত্য চর্চা হয় না। ড. সুতপা চক্রবতীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। এই পর্বে পৌরোহিত্য করেন বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের জেলা সভাপতি সঞ্জীব দেবলস্কর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মনোজ দেব।
তৃতীয় পর্বে ছিল কবিতা পাঠের আসর। তাতে সাহিত্য অকাদেমির বাংলা উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক সুবোধ সরকার ছাড়াও অংশ নেন বিজয়কৃষ্ণ ঘোষ, ভাস্করজ্যোতি দেব, দিলীপকান্তি লস্কর, শঙ্করজ্যোতি দেব, শান্তনু ঘোষ ও তমোজিত সাহা। কবিতা পাঠের আসরে পাঁচ দশক পরে রবিবার কবি শান্তনু ঘোষকে দেখতে পাওয়া গিয়েছে।